প্রাথমিকের হাজিরা ডিভাইস কিনতে শিক্ষা কর্মকর্তাদের সিন্ডিকেট
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:৪২ আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:৫২
ফরিদপুর সদর উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বায়োমেট্রিক হাজিরা ডিভাইস একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে কিনতে প্রধান শিক্ষকদের বাধ্য করছেন কয়েক শিক্ষা কর্মকর্তা।
অভিযোগ উঠেছে, বাজারে আরও দু-তিনটি প্রতিষ্ঠান একই ডিভাইস ১৬-১৭ হাজার টাকায় স্থাপন করতে সম্মত থাকলেও শিক্ষা কর্মকর্তাদের পছন্দের একটি প্রতিষ্ঠান ১৯ হাজার টাকায় স্কুলগুলোতে সেগুলো স্থাপন শুরু করেছে।
ফরিদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম জানান, গত ১১ নভেম্বর প্রধান শিক্ষকদের মাসিক সমন্বয় সভায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও) আবু আহাদ মিয়া সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের লোক স্কুলে গিয়ে টিইও-এটিইওদের রেফারেন্স দিলে তাদের যেন ডিভাইসটি স্থাপন করতে দেওয়া হয়। তিন দিন আগেও আবু আহাদ মিয়া তাদের একই কথা বলেছেন বলে জানান এই শিক্ষক নেতা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহে শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্ধারিত ইউনিক আইটির লোকজন ফরিদপুরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাদের দোহাই দিয়ে চাপ সৃষ্টি করে স্কুলগুলোতে তাদের সরবরাহ করা ডিভাইস স্থাপন করেছে।
এটিইও এমএ নাঈমের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশনা অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ডিভাইস স্কুলগুলোতে বসানো হচ্ছে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পরামর্শে প্রধান শিক্ষকদের এই ডিভাইসটি কেনার জন্য সরকারি নির্দেশনা থাকলেও শিক্ষা কর্মকর্তারা কেন এই ক্রয় প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হচ্ছেন- জানতে চাইলে কথা ঘুরিয়ে তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকদের বলে দেওয়া আছে এই দামের কমে অন্য কোথাও থেকে মানসম্মত ডিভাইস পেলে তাদের কাছ থেকেই যেন কেনা হয়।
টিইও আবু আহাদ মিয়া এ ব্যাপারে বলেন, এই মেশিন কেনার কথা প্রধান শিক্ষকদের, এটা আমার দায়িত্ব না। ডিভাইস স্থাপনে কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি তো প্রধান শিক্ষক না, আমি কীভাবে জানব?
ইউনিক আইটির স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ হারুন জানান, নির্দেশনা অনুযায়ী প্রাথমিক পর্যায়ে ছয়টি স্কুলে তিনি ডিভাইস স্থাপনের কাজ শুরু করেছেন। প্রভাব খাটিয়ে ডিভাইস স্থাপনের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
ইউএনও মাসুম রেজা বলেন, স্কুলে ডিজিটাল হাজিরা ডিভাইস কেনার দায়িত্ব সংশ্নিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষের। উপজেলা চেয়ারম্যান বা তিনি নিজে কখনোই এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি।