শিক্ষকদের নিয়ে রাষ্ট্রপতির আক্ষেপ
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:৩৩ আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:৫৬
দেশের শিক্ষকদের প্রতি আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। বলেছেন, ‘আজ শুনি শিক্ষকরা ছাত্রদের কাছে নকল সাপ্লাই করে। অনেক জায়গায় শোনা যায় অভিভাবকরা নকল সাপ্লাই করে। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। এদের কী শাস্তি হতে পারে। মনটা চায় আর কইলাম না... বুইঝ্যা নিয়েন... ।’
শনিবার দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য দিচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির আচার্য ও রাষ্ট্রপতি। রাজধানীর গেন্ডারিয়ার ধূপখোলা মাঠে এই সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়।
আরো পড়ুন: বেতন বৈষম্য নিরসনে সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন উদ্যোগ
তিনি বলেন, ‘তিনি জীবনে অনেক পরীক্ষায় ফেল করেছেন, তবে কখনো পাস করার জন্য নকলের মতো অনৈতিক পথ অবলম্বন করেননি। এমনকি পাশের কাউকে জিজ্ঞেসও করেননি। এটা তার জীবনের অহংকার এবং এটা নিয়ে তিনি গর্ববোধ করেন।’
পরীক্ষায় নকল প্রবণতা ও অনৈতিক পন্থা অবলম্বনের কারণে দেশ ও জাতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে জানিয়ে এর বিরুদ্ধে সবাইকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে আহ্বান জানান রাষ্ট্রপ্রধান।
আরো পড়ুন: ১১-২০ গ্রেডের পদোন্নতি চান সরকারি চাকরিজীবীরা
নিজের জীবনের স্মৃতিচারণ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্বাচন করি। সে নির্বাচনে আমি ছিলাম গোটা পাকিস্তানে সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী। সত্তরের ৭ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলাম। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের পার্লামেন্টে যেতে পারিনি।’
আবদুল হামিদ বলেন, ‘রাজনীতির কারণে যথাসময়ে ডিগ্রি পাস করতে পারিনি। ১৯৬৯ সালে ডিগ্রি পাস করি। ৭১ সালে ল’ পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধের কারণে তা সম্ভব হয়নি। দেশ স্বাধীনের পর ৭২ সালে ল’ পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়। চার পেপারে পরীক্ষা। তখন সারাদেশের পরীক্ষা হয়েছিল জগন্নাথ কলেজে। আমিও সেই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলাম।’
আরো পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগে বড় সুখবর পেলো ৩৫ চাই প্রার্থীরা!
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘পরীক্ষা যখন দিতে গেলাম দেখলাম সবাই মোটা মোটা বই দেখে লিখে যাচ্ছে। বই সামনে ছাড়া খুব কমই দেখেছি। আমি তখন বাংলাদেশের গণপরিষদের সদস্য। ভাবলাম, আমি যদি এই কাজটি করি তাহলে কেমন হয়! মাঝে মাঝে সাংবাদিকরাও আসছে। তারা যদি কিছু লেখে! পরে সিদ্ধান্ত নিলাম, কপালে যা আছে হবে কিন্তু বই দেখব না। যা পারি তাই লেখলাম। ফলাফলে চার সাবজেক্টের মধ্যে দুই সাবজেক্টে পাস করি আর দুই সাবজেক্টে ফেল করি। পরে অবশ্য ১৯৭৪ সালে ভালোভাবে পড়াশোনা করে ল’ পরীক্ষা দিয়ে পাস করি।’
আরো পড়ুন: পদোন্নতি পাচ্ছেন প্রাথমিকের ভারপ্রাপ্তরা
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমি যদি তখন নকল করতাম আর পত্রিকায় আসতো তাহলে তো আজ তোমরা বলতে, বেটা নকল করে পাস করেছ, এখন বড় বড় কথা বলো।’
বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ