ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

মোদিবিরোধী আন্দোলন প্রতিহত করবে ছাত্রলীগ

  ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২১, ১৭:৩৬  
আপডেট :
 ১৮ মার্চ ২০২১, ১৭:৪৫

মোদিবিরোধী আন্দোলন প্রতিহত করবে ছাত্রলীগ

প্রগতিশীল বাম সংগঠনগুলোর নরেন্দ্র মোদির আগমনবিরোধী আন্দোলন-সমাবেশকে কঠোরভাবে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।

বৃহস্পতিবার ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এক বিক্ষোভ সমাবেশে বাম সংগঠনগুলোর প্রতি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আগামীকাল (শুক্রবার) রাজুতে সমাবেশ করতে আসলে তাদের কলিজা টেনে ছিঁড়ে ফেলা হবে। তারা ৯ সংগঠন কেনো ৯০ হাজার সংগঠনও যদি আসে, তবুও তাদেরকে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না।’

এর আগে দুপুর ১২টায় প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো এক সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলন থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদে শুক্রবার রাজু ভাস্কর্যে মোদিবিরোধী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেয় তারা। ফেসবুকে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে সুনামগঞ্জে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘোষণা দেয় তারা।

জানা যায়, গত বুধবার সকালে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা চালিয়ে ৬০-৭০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও আসবাবপত্র তছনছ করে হেফাজতে ইসলামীর অনুসারীরা। এর প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ সমাবেশে করে ছাত্রলীগ। এর আগে মধুর কেন্টিন থেকে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যে আসেন তারা।

সমাবেশে বাম সংগঠনগুলোকে শিবিরের এজেন্ট আখ্যা দিয়ে সনজিত বলেন, ‘যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা আসছেন, তখন তারা বিভিন্ন ধরনের পায়তারা করছে। তারা নাকি আগামীকাল রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ করবে। কালকে দেখা হবে তাদের সাথে, তাদের কলিজা টেনে ছিঁড়ে ফেলা হবে। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ দেখে নিবে তারা কিভাবে এখানে সমাবেশ করে। আমরা তাদেরকে ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলাম, তারা নয়টি সংগঠন কেন ৯০ হাজার সংগঠনও যদি এসে রাজু ভাস্কর্যের সমাবেশ করতে পারে, তাহলে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে দ্বিতীয় পালন করবো না।’

বাম সংগঠনগুলোর প্রতি হুশিয়ারি দিয়েছে ছাত্রলীগ

সুনামগঞ্জের প্রশাসনের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘যখন আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি, মুজিববর্ষ পালন করছি, ঠিক সেই সময়ে কোনো ধরণের অভিযোগ ছাড়া একটা মিথ্যা ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে গ্রামের পর গ্রাম হামলা চালিয়েছে, লুটপাট করেছে, এমনকি প্রত্যেকের আবেগের যায়গা ধর্মীয় উপাসনালয়েও হামলা চালিয়েছে। তবে এটাই কি সোনার বাংলা, যার জন্য ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছিল?’

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকারে বাংলাদেশ বিনির্মানের জন্য, শহিদের রক্তের ঋণের প্রতি দায়বদ্ধতা পূরণের জন্য, সকল ধর্মের নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিতের জন্য, উৎসবের স্বাধীনতার জন্য এবং স্বাধীনভাবে বসবাসের অধিকারকে যারা ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায় তাদের নির্মূল করা পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাজপথে থাকবে। আজকে হয়তো ছোট পরিসরে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ করেছি। পরবর্তীতে ছাত্রলীগের ডাকে সারাদেশের রাজপথ উত্তাল হয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তি নির্মূল করবে।’

বামপন্থী সংগঠনগুলোর দিকে ইঙ্গিত করে সাদ্দাম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীকার আন্দোলনসহ সকল আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তারা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। কিন্তু আজ দেশে সাম্প্রদায়িক হামলা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে কথা না বলে মুখে কুলুপ এঁটে দিয়ে ভিনদেশের সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কথা কথা বলছে।’

সাদ্দাম বাম সংগঠনগুলোর আন্দোলনের বিষয়ে বলেন, ‘স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী পালনকে কেন্দ্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে সংহতি প্রকাশ না করে একটি জনবিচ্ছিন্ন শক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ ঢাকাজুড়ে তথাকথিত রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয়ার চেষ্টা করছে। স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করা নাগরিক হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এই নৈতিক দায়িত্বকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইলে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতার চেষ্টা করলে, বিদেশি দূতাবাসের খেলায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করলে শুধু ছাত্রলীগ নয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্তরের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসবে। রাজপথে নেমে তার জবাব দেয়া হবে।’

সমাবেশ অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, ডাকসুর সাবেক সদস্য তিলোত্তমা সিকদার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাধন, মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক আল আমিন রহমান, জগন্নাথ হল শাখার সাধারণ সম্পাদক উৎপল বিশ্বাস প্রমুখ।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত