ঢাবির হলে হলে ইফতার (পর্ব ১)
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ মে ২০১৮, ১৯:৫০
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অন্যতম প্রসিদ্ধ হল হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল। সারা বছর জাতির জনকের নামে নির্মিত এ হলের অভ্যন্তরে দোকানগুলোতে, ছয় দফায় (বসার স্থান), সামনের মাঠে আবাসিক ছাত্ররা খেলাধুলা, আড্ডা-গানে মেতে থাকে। তবে রমজান মাস উপলক্ষে এ হলের পরিবেশ এখন কিছুটা ভিন্ন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পরীক্ষার মৌসুম চলছে। আর তাই দিনের বেলায় হলের আবাসিক ছাত্ররা পরীক্ষাকেন্দ্রিক ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। যাদের পরীক্ষা নেই তাদের অনেকে সিয়াম সাধনার পাশাপাশি ইবাদত বন্দেগীতে বেশি সময় ব্যয় করছেন। এছাড়া অনেকে সারা দিন ঘুমিয়েই কাটাচ্ছেন। তবে সারাদিনের রোজা শেষে সন্ধ্যায় ইফতারের পর হলের আড্ডার জায়গাগুলো শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে আবার প্রাণ ফিরে পায়।
গত রোববার (২০ মে) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু হওয়ায় আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ ইতোমধ্যেই বাড়ির পথ ধরেছেন। তবে পরীক্ষা, টিউশনিসহ বিভিন্ন কারণে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এখনো হলে অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে অনেকেই আবার হলে ঈদ করবেন।
রমজান মাস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু হলে বিকেল বেলায় ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসে দোকানীরা। ইফতারের আইটেমগুলোর মধ্যে রয়েছে- ছোলা, মুড়ি, বুন্দিয়া, পেঁয়াজু, বেগুনী, আলুর চপ, জিলাপি, শসা, পেয়াজ, মরিচ, ধনিয়া পাতা ইত্যাদি। এছাড়া তৃষ্ণা নিবারণের জন্য পাওয়া যায় লেবু। শিক্ষার্থীরা এ লেবু দিয়ে শরবত তৈরি করে তৃষ্ণা নিবারণ করেন।
প্রতিদিন বিকেল সাড়ে চারটা থেকেই এখানে ইফতারি বিক্রি শুরু হয়ে যায়। ইফতারের সময় যত ঘনিয়ে আসে ইফতারের দোকানগুলোতে শিক্ষার্থীদের ভিড় তত বাড়তে থাকে। রাজধানীর অন্যান্য জায়গার চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ইফতারির দাম কিছুটা কম। বঙ্গবন্ধু হলও তার ব্যতিক্রম নয়। এখানে একজন শিক্ষার্থী ৫০ টাকার মধ্যে ভালো ইফতারি কিনতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হলের দোকানী ফয়েজ বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘ইফতারি বিক্রির চেয়ে সবাইকে বিভিন্ন আইটেম বানিয়ে ইফতারি করাতে পেরে নিজের মধ্যে এক ধরণের ভালো লাগা কাজ করে।’ বিক্রি কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিক্রি মোটামুটি ভালো।’
এ বিষয়ে হলের চতুর্থ বর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ইসরাফিল হোসেন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘জাতির জনকের নামে নির্মিত এ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে হলে অবস্থান এবং রমজান মাসে ইফতারি করতে পারাটা একটা ভাগ্যের ব্যাপার। এ বিষয়টি ভাবলেই ভালো লাগে। দেখতে দেখতে এ হলে চারটি রমজান কাটিয়ে দিয়েছি। মাস্টার্স শেষ করে এ হল ছেড়ে দিতে হবে ভেবে খুবই খারাপ লাগছে।’
সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাইরে হলে অবস্থান করা বিভিন্ন বিভাগ বা অনুষদের শিক্ষার্থীদের সংগঠন, বাঁধন (স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন)সহ বিভিন্ন এলাকার সংগঠনগুলো হলে ইফতারের আয়োজন করে। এছাড়া হলের আবাসিক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের জন্য বরাদ্দ আবাসস্থলে ইফতার করেন। হলের দোকানীরা আবাসিক ছাত্রদের ইফতারি কেনা শেষ হলে সব গুছিয়ে দোকানের মধ্যে ইফতার করেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ