ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

অভিনয়ে আসার কোন সম্ভাবনা নেই: অদিতি

  বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ১৮:০৩  
আপডেট :
 ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ১৯:৩৯

অভিনয়ে আসার কোন সম্ভাবনা নেই: অদিতি

নাজিয়া হাসান অদিতি, পেশায় একজন উদ্যোক্তা। শুধু তাই নয়, তিনি একজন ফ্যাশন ডিজাইনার। ছোটবেলা থেকেই নিজের ডিজাইন করা পছন্দের পোশাক পড়তেন। সেই থেকে একটু একটু করে মনের মধ্যে স্বপ্ন বুনেছিলেন প্রতিষ্ঠান গড়ার। সেটা পূরণও হয়েছে। প্রতিষ্ঠা করেছেন ফ্যাশন হাউজ ‘অদ্রিয়ানা এক্সক্লুসিভ’। ফ্যাশন ডিজাইনারের বাইরেও অদিতি একজন লেখিকা, স্ত্রী ও মা। অদিতি টিভি পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্বের সহধর্মিনী। এই দম্পতির একমাত্র সন্তান জায়ান ফারুক আয়াশ। সম্প্রতি নিজের ব্যস্ততা, কাজ ও স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ জার্নালের সাথে কথা বলেন তিনি। তাকে নিয়ে লিখেছেন ইমরুল নূর।

গেল বছরের ভালোবাসা দিবসে ‘তুমি বললে’ নাটক দিয়ে প্রথমবারের মত গল্প লিখেছিলেন অদিতি। অপূর্ব ও সাফা কবির অভিনীত নাটকটি বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিল। আসছে ভালবাসা দিবসেও নতুন গল্প নিয়ে হাজির হচ্ছেন তিনি। ‘চারুর বিয়ে’ শিরোনামের গল্পে এই নাটকটি পরিচালনা করবেন মিজানুর রহমান আরিয়ান। নাটকে অভিনয় করবেন অপূর্ব ও মেহজাবিন।

নাটকের গল্প প্রসঙ্গে নাজিয়া হাসান অদিতি বলেন, একটা ছেলে আর একটা মেয়ের গল্প। মেয়েটার নাম থাকে চারুলতা। চারুলতাকে ঘিরেই পুরো গল্পটা এগিয়েছে। চারুলতা পুরো বাঙালিয়ানা ঘরানার একটি মেয়ে। পাশ্চাত্যটাকে সে গ্রহণ করতে পারে নি তাই তার সবকিছুতেই বাঙালিয়ানা পছন্দ। যেমন- বাঙালি খাবার, পোশাক এরকম। পরিবার থেকে চারুলতার বিয়ে ঠিক করে এক ছেলের সঙ্গে, যে কিনা দেশের বাইরে থাকে। একটা সময় যাওয়ার পর মেয়েটা ছেলেটাকে ঘিরে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। ঠিক সেই মূহুর্তে ছেলেটি জানিয়ে দেয় যে সে বিয়ে করতে পারবে না। চারুলতার দুঃখ, কষ্ট, স্বপ্নের কথার গল্পেই নির্মিত হবে নাটকটি।

এখন থেকে কি নিয়মিতই গল্প লিখবেন এমন প্রশ্নে অদিতি জানান, আমি তো সবসময় গল্প লিখি না। মাঝেমধ্যে লিখি। এবার ভালোবাসা দিবস উপলক্ষ্যে একটা গল্প লিখেছি ‘চারুর বিয়ে’। আরেকটা গল্প লিখা শুরু করেছি, তবে এখনও শেষ হয়নি। যদি সেটা শেষ করতে পারি এরমধ্যে তাহলে হয়তো সেইটাও ভালোবাসা দিবসে আসতে পারে।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু আমি একজন ফ্যাশন ডিজাইনার এবং বিজনেস উইমেন সেহেতু এদিক সামলে গল্প লিখার মত ওরকম সময় পাই না আসলে। এছাড়া আমার স্বামী, সংসার ও সন্তান সবকিছু সামলে যতটুকু পারি চেষ্টা করি। কিন্তু আমার ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির অভ্যাস রয়েছে। আমার লিখতে অনেক ভালো লাগে। মাঝেমাঝে আমার মাথায় অনেক গল্প চলে আসে। চারপাশে যখন তাকাই তখন অনেক কিছুই দেখতে পাই, অনেকের গল্প দেখতে পাই সেগুলো থেকেই অনুপ্রাণিত হই কিছু লিখার। এজন্য যা ভাবি সেটা লিখি। এখন টুকটাক লিখছি তবে সামনে ইচ্ছে আছে নিয়মিত গল্প লিখার। যখন একদম অবসর হয়ে যাব, আমার ছেলে বড় হয়ে যাবে তখন যেন গল্প লিখে সময় কাটাতে পারি। এখন যেভাবে আছি সেভাবেই থাকতে চাই।

লেখালাখির পাশাপাশি কখনও অভিনয়ে দেখা যাবে কিনা এমন প্রশ্নে এক গাল হেসে অদিতি জানান, আমি অনেক লাজুক। ক্যামেরার সামনে তো আরও বেশি লাজুক। তবে মানুষকে সাজাতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। তাই অভিনয়ে আসার কোন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

২০১৮ সালের ঈদে ‘বিনি সুতোর টান’ নাটকে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিষেক ঘটেছিল অপূর্ব-অদিতির একমাত্র সন্তান আয়াশের। নিজের অভিনীত প্রথম নাটকে তুমুল প্রশংসা কুড়িয়েছেন আয়াশ। এরপর থেকে বিভিন্ন নাটকে অভিনয়ের প্রস্তাব আসলেও পছন্দানুযায়ী গল্প ও চরিত্র না পাওয়ায় অভিনয়ে দেখা যায় নি আয়াশকে। অদিতি জানান, আয়াশ এখন কেজি ওয়ানে পড়ছে। আমরা এখন তার পড়াশোনার দিকেই মনযোগ দিচ্ছি। আর ‘বিনি সুতোর টান’ নাটকের পর অনেক নাটকের প্রস্তাব পেয়েছি কিন্তু সেগুলোর গল্প বা চরিত্র কোনটাই পছন্দ হয়নি। খুব ভালো যদি কোন প্রস্তাব পাই অর্থাৎ আয়াশকে কেন্দ্র করে যদি কোন গল্প পাই তাহলে হয়তো আয়াশকে বছরে একটা বা দুইটা নাটকে দেখা যেতে পারে।

স্বামী, সংসার ও সন্তান, তিন ‘স’তেই নিজেকে আবদ্ধ করে রাখেন নি অদিতি। নিজের ব্যবসারও দেখাশোনা করছেন, পোশাক ডিজাইন করছেন। এতকিছুর মাঝে লিখার সময়টা কখন পান? অদিতির জবাব, সত্যি কথা বলতে এতকিছু সামলে লিখার মত সময় পাই না। দেখা যায় যে, বেশিরভাগ সময় আমার লিখা হয় ট্রাফিক জ্যামে বসে। আর না হলে রাতে যখন ঘুম আসে না তখন। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠার পর সারাদিন কাজের জন্য দৌড়াতে হয়। এরপর বাসায় আসলে রাতে যখন একটু সময় পাই কিংবা দেখি যে ভালো লাগছে না তখন নোটবুক বের করে লিখতে থাকি।

২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করে অদিতির স্বপ্নের ফ্যাশন হাউজ ‘অদ্রিয়ানা এক্সক্লুসিভ’। সেই থেকে শুরু করে একটু একটু করে নিজের মত করে সাজিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটি। দেখতে দেখতে পাঁচ বছরে পা রাখলো প্রতিষ্ঠানটি। শুরু থেকেই অদিতির ডিজাইনে ‘অদ্রিয়ানা এক্সক্লুসিভ’র মডেল হয়েছেন শোবিজের অনেক নামীদামি মডেল-অভিনেত্রী ও তারকারা। এরমধ্যে রয়েছেন অপি করিম, সাদিয়া ইসলাম মৌ, তারিন জাহান, শম্পা রেজা, রাফিয়াথ রশীদ মিথিলা, আজমেরি হক বাঁধন, মৌটুসি বিশ্বাস, মৌসুমী হামিদ, মেহজাবিন চৌধুরী, জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী, সারিকা, জাকিয়া বারী মম, তানজিন তিশা প্রমুখ।

স্বপ্নের ফ্যাশন হাউজ ‘অদ্রিয়ানা এক্সক্লুসিভ’ নিয়ে অদিতি বলেন, ‘অদ্রিয়ানা এক্সক্লুসিভ’ ছিল আমার শখের জায়গা। প্রথমে আমি এটা নিয়ে সিরিয়াস ছিলাম না। আমি ছোটবেলা থেকে নিজে ড্রেস ডিজাইন করে পড়তে পছন্দ করতাম। শুধু আমার নয়, আমার বোন, খালা-ফুফুদের ড্রেসও ডিজাইন করে দিতাম আমি। এরপর একটা সময় ভাবলাম যে দেখি শখ থেকে কি হয়! সেই ইচ্ছে থেকেই এই ফ্যাশন হাউজ গড়া। সবাই আমার কাজ এত পছন্দ করছে সেটা দেখে কাজের প্রতি আগ্রহ ও সিয়িসাসনেস দুটোই বেড়ে গেছে। মিডিয়ার অনেকেরই আমার কাজগুলো পছন্দ হয়েছে। অভিনেত্রী তারিন জাহান আপু, অপি করিম আপু, সাদিয়া ইসলাম মৌ আপু, শম্পা রেজা আন্টি থেকে শুরু করে সবাই অনেক প্রশংসা করেছে।

এখন বনানীতে আমার ‘অদ্রিয়ানা এক্সক্লুসিভ’ এর দুটি আউটলেট রয়েছে। সেখানে আমার ডিজাইন করা বিভিন্ন রকমের পোশাক পাওয়া যাবে। শাড়ি, জামা, লেহেঙ্গাসহ আরও বিভিন্ন পোশাক। এখন এগুলোর ডিজাইন করেই আমার বেশিরভাগ সময় কেটে যায়।

পাঁচ বছর আগে খুব সামান্য পুঁজিকে সম্বল করে অনলাইন বুটিক ‘অদ্রিয়ানা এক্সক্লুসিভ’র যাত্রা শুরু করেন অদিতি। এরপর ধীরে ধীরে এর পরিসর বাড়তে থাকে। শুরু থেকেই স্ত্রী অদিতির স্বপ্নকে সাপোর্ট করে এসেছেন অভিনেতা অপূর্ব। প্রতিটি মূহুর্তে থেকেছেন পাশে। দিয়েছেন নানা পরামর্শ। স্বামীর সহযোগীতা প্রসঙ্গে অদিতি বলেন, আমার যেকোন কাজের ক্ষেত্রে অপূর্ব’র পূর্ণ সহযোগীতা থাকে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আমাকে অনুপ্রাণিত করে। আমি যখন কাজে থাকি আমাকে কখনওই কোন প্রেশার দেয় না। আমার কাজের ক্ষেত্রে আমাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে রেখেছে। এক কথায় আমার এতটুকু আসা বা এই কাজের ক্ষেত্রে অপূর্ব’র অনস্বীকার্য।

‘অদ্রিয়ানা এক্সক্লুসিভ’ সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন...

বাংলাদেশ জার্নাল/ আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত