ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

কোরআন পড়েন, আল্লাহকে ডাকেন : আফরান নিশো

  বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২০, ১২:৩৬

কোরআন পড়েন, আল্লাহকে ডাকেন : আফরান নিশো

করোনা ভাইরাস আতঙ্ক দিন দিন বেড়েই চলেছে। সারাদেশ এখন থমকে রয়েছে। এমতাবস্থায় ছোট পর্দার অভিনয়শিল্পী আফরান নিশো সচেতনতার বার্তা নিয়ে হাজির হলেন।

ফেসবুক লাইভে এসে করোনাভাইরাস নিয়ে কথা বলেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি আফরান নিশো। একজন অভিনেতা। এ মুহূর্তে বিশ্বের যে অবস্থা, আমি কোনো কাজ করছি না বাসায় বসে আছি। একজন অভিনেতা হিসেবে আমার ওপর কিছু দায়িত্ব বর্তায়। আমি কিছু কথা বলার জন্য আপনাদের সামনে এসেছি। এই কথাগুলো বলা খুব প্রয়োজন। আমি করোনা ভাইরাস নিয়ে কথা বলবো।’

করেনাভাইরাস থেকে বাঁচার নানা উপায়ও তুলে ধরেন তিনি। প্রায় ২৬ মিনিটের লাইফে বিস্তারিত কথা বলেছেন। মানুষকে আহ্ববান করেছেন করোনা মোকাবেলা করতে।

তিনি বলেন, ‘করোনা একটা ভাইরাস। এটা মহামারীর আকার নিতে পারে। করোনা ব্যাক্টেরিয়ার থেকেও ছোট ফর্ম। ব্যাক্টেরিয়াকে এন্টিবায়োটিক দিয়ে দমন করা যায় কিন্তু করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব না। সুতরাং বলা যেতে পারে এটার কোনো কিউর নাই। আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি বেশি থাকে তাহলে আপনি কুলিয়ে উঠতে পারবেন। না হলে পারবে না।

এই ভাইরাসটির নাম করোনা করা হয়েছে কারণ ভাইরাসটির আকৃতি গোলাকার এবং এটার চারপাশ সূর্যের রশ্মির মতো। নতুন ভাইরাস তাই সামনে নোবেল লাগানো আছে। এটি এমন একটা ভাইরাস এটি যার সম্পর্কে আমাদের জানা নেই। গলাব্যথা হবে, কাশি হবে, সর্দি হবে । এটা ১০ দিনের বেশি হলে নিজেকে আইসোলেট করতে হবে।’

আফরান নিশো আরও বলেন, ‘যে রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। সেই রোগ হওয়া পর্যন্ত কি আমরা অপেক্ষা করবো, নাকি যেনো না হয় সেই প্রতিকারের ব্যবস্থা করবো সেটা আমাদের চিন্তা করতে হবে। যেনো আমাদের ভাইরাস অ্যাটাক করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এটা ছোঁয়াচে। আমাদের অভ্যেস আছে যেখানে সেখানে থুতু ফেলা, হাঁচি দেওয়া, নাকে মুখে হাত দেওয়া, দাঁতে নখ কাটা। কেউ এই ভাইরাসে আক্রন্ত হয়ে তার মাধ্যমে এটা খুব দ্রুত ছড়িয়ে যাবে। এটা নিয়ে এখনই ভাবতে হবে।’

করোনাভাইরাস প্রতিরোধেও নানা পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাকে পছন্দ করেন আর নাই করেন যারা নিজেদের মা, ছেলে মেয়ে পরিবারকে পছন্দ করেন, নিজেকে ভালোবাসেন। তাদের দ্বারা এটা দূর করা সম্ভব। আমি বলছি একমাত্র ভালোবাসার মাধ্যমেই করোনা জয় করা সম্ভব। আড্ডা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কারো সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করলে ভিডিও কলে কথা বলেন।

পরিবারের কাউকে না কাউকে হয় তো বাড়ির বাইরে বের হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। পরিবারের কে বাইরে যাবে ঠিক করুন। কেউ বাইরে গেলে তাকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। বেশি করে সেনিটাইজার ব্যাবহার করতে হবে। হাতে গ্লাভস পরা যেতে পারে।

বাইরে থেকে এসে প্রথমেই গোসল সেরে নিতে পারেন। তার আগে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে। বাইরের কাপড়টা, জুতাটা আলাদা করে রাখতে হবে। কারো সঙ্গে কথা বললে অবশ্যই দুরুত্ব বজায় রাখতে হবে।

আমরা খুব ফুড হ্যাভিট পরিবর্তন করতে পারি। আমরা যেভাবে চলাফেরা করি আমাদের শরীর খুববেশি স্ট্রং না। বেশি ভিটামিন সি খেতে হবে। ধুমপান করা ছেড়ে দেন। ঠান্ডা খাবার খাবেন না। এসব নিয়ম মেনেই এই ভাইরাসকে দাবিয়ে রাখতে হবে।’

করোনাভাইরাস নিয়ে অনেকেই হাসি ঠাট্টা করছেন। নেগেটিভ কথা বলছেন। তাদের উদ্দেশ্যে আফরান নিশো বলেন, ‘নেগেটিভিটি ছড়াবেন না। এটা কেন হচ্ছে না?, ওটা কেনো হচ্ছে না? এসব না ভেবে আমাদের যতোটুক আছে তা নিয়েই ফাইট করতে হবে।’

কথা বলতে বলতে আবেগে ভেসে যান নিশো। তিনি বলেন, ‘আমি আরফান নিশো। এর বাইরেই আমার কতোগুলো পরিচয় আছে। আমি এখন অভিনেতা, আমি একজন বাবা, আমি একজন নাগরিক, আমি একজন মুসলিম। এরকম একটা ক্রাইসিস মোমেন্টে আমাদের সবকিছু নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। আমি অভিনেতা, আমার সোশ্যাল রেসপন্সিবলিটি আছে, আমি বাবা, সন্তানের প্রতি আমার দায়িত্ব আছে, আমি নাগরিক রাষ্ট্রের প্রতি আমার দায়িত্ব আছে।

আমি মুসলিম। ইসলাম প্র্যাক্টিস করা আমরা উচিৎ। বাসায় বসে বোর ফিল করছেন, মুভি দেখছেন, গেইম খেলছেন সময় কাটছে না। এর চেয়ে চমৎকার সময় কী পাবেন ইসলাম প্র্যাকটিস করার! কোরআন পড়েন, সবার জন্য দোয়া করেন, আল্লাহকে ডাকেন। অনেকেই ভাবতে পারেন এতে লাভ হবে না। আমি বলতে পারি এতে লাভ না হলেও ক্ষতি হবে না।

বাবা হিসেবে আমার দায়িত্ব কী? আমার পাঁচ বছরের এক বাচ্চা। আমি কি চাইবো ও ইফেক্টেড হোক। আমি বাইরে যাই। আমাকেই বেশি সেইভ থাকতে হবে। আমার দারা ওরা ইভেক্টেড হতে পারে। নাগরিক হিসেবে আমার কী কর্তব্য সেগুলোওতো ভাবা উচিৎ।’

কেউ যদি করোনা আক্রান্ত হয়ে যান তাকে কী করতে হবে তাও বলে দিয়েছেন নিশো। তিনি বলেন, ‘যদি কেউ করোনা আক্রান্ত হয়ে যান তাহলে নিজেকে সবার থেকে আলাদা করে ফেলতে হবে। লুকাবেন না প্লিজ। আল্লাহ না করুক আমি যদি আক্রান্ত হই। তাহলে তো আমি বাসায় আর ফিরবো না। কারণ আমি আমার বাসার মানুষদের ভালোবাসি। আমি নিজেকে প্রোটেক্ট করবো। আমার থেকে যেনো আর কারো না হয়।

ব্যাপারটাকে যদি আমরা যুদ্ধ হিসেবে নিই। আমরা কি এটা জয় করতে পারব না! আমরা পারবো। আমাদের জাগ্রত হতে হবে। আমি জানি আমরা হারবো না। আল্লাহর রহমতে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।’

আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত