ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘পাগল মন’ নিয়ে দুই খানের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

  বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২০, ১৩:৫২

‘পাগল মন’ নিয়ে দুই খানের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

গেল বছরের ঈদে মুক্তি পায় সর্বাধিক আলোচিত সিনেমা ‘পাসওয়ার্ড’। শাকিব খান প্রযোজিত ও অভিনীত এ সিনেমার ‘পাগল মন’ শিরোনামের গানে জনপ্রিয় ‘পাগল মন মনরে মন কেন এত কথা বলে’ গানের অংশ অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করায় শাকিব খান ও মোবাইল অপারেটর রবির বিরুদ্ধে রোববার (২৮ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ইউনিটে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৩ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়ছে। সেই সাথে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ কোটি দাবী করেন গানটির মূল কণ্ঠশিল্পী দিলরুবা খান।

ক্ষতিপূরণ না পেয়ে একই ইস্যুতে শাকিব খানের বিরুদ্ধে ২৯ জুন (সোমবার) গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন দিলরুবা খান।যদিও দিলরুবা খান শাকিব খানের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের যে অভিযোগ নিয়েছেন তা অস্বীকার করে শাকিব খান জানাচ্ছেন তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে।

সাধারণ ডায়েরিতে দিলরুবা খান লিখেছেন, ‘আমি ৯০ দশকে “পাগল মন মন রে মন কেন এত কথা বলে” গানে কণ্ঠ দিই। এই গানটি সর্বপ্রথম প্রচারিত হয় বাংলাদেশ বেতারে। কপিরাইট আইন ২০০০–এর ধারা ১৫(১)(ক) অনুযায়ী গানটি একটি সংগীতকর্ম এবং কপিরাইটের আওতাভুক্ত। আমার গাওয়া এই “পাগল মন” গানটি জনপ্রিয়তা পায়। তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির ইতিহাসের সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্যাসেট বিক্রি হয়। তারপর আইনগতভাবে আমি গানটির কপিরাইট সনদ সংগ্রহ করি বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস হতে, যাহার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ১৬৩৪৪ সিওপিআর।’

সাধারণ ডায়েরিতে দিলরুবা খান আরও উল্লেখ করেন, এ বছরের ১০ জানুয়ারি বিভিন্ন মারফতে তিনি জানতে পারেন, চলচ্চিত্র অভিনেতা শাকিব খান এসকে ফিল্মসের ব্যানারে ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিতে বিদেশি শিল্পীদের দিয়ে গানটি রিমেক করিয়েছেন। তারপর শাকিব খান তাঁর ইউটিউবে আপলোড করেছেন। বর্তমানে গানটির ভিউ ১ কোটি ৮০ লাখ অতিক্রম করেছে, যা কপিরাইট আইন ২০০০–এর ধারা ৭১ এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ ধারা ২৩–এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

এই ইস্যুতে ‘পাসওয়ার্ড’ সিনেমার প্রযোজক শাকিব খানের ভাষ্য, দিলরুবা খান ‘পাগল মন’ গানটি বিক্রি করে দেন তোজাম্মেল হক বকুলের কাছে। তিনি গানটি তার চলচ্চিত্রে ব্যবহার করেন। ওই চলচ্চিত্রটি অনুপম মিউজিকের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়। সেই হিসেবে গানের মালিক অনুপম মিউজিক। ‘পাসওয়ার্ড’ সিনেমার পার্টনার ইকবাল এবং পরিচালক মালেক আফসারী দুজনেই অনুপম মিউজিকের অরজিনাল গান থেকে অনুমতি নিয়েই গানের দুলাইন নিয়েছেন। তারপর ব্যবহার করা হয়েছে।

এছাড়া শাকিব খান আরও দাবি করেছেন, এরপরও আমি ভদ্রতা ও সম্মান প্রদর্শন করে দিলরুবা খানের সাথে কথা বলে অনুমতি নিয়েছিলাম। ‘পাসওয়ার্ড’র শুটিংয়ের সময় মেকআপ রুমে বসেই ফোনে কথা হয় দিলরুবা খানের সঙ্গে। তখন ইকবাল, মালেক আফসারী, চিত্রনাট্যকর আবদুল্লাহ জহির বাবু প্রত্যেকেই সেখানে ছিলেন। তখন তিনি খুশি হয়ে আমাকে দোয়া দিয়েছিলেন। তাহলে এখন কেন অস্বীকার করছেন? এখন মিথ্যে বলে আমাকে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করছেন।

শাকিব খান আরও জানিয়েছেন, গান প্রকাশের বছর খানিক পর এসে উনি (দিলরুবা খান) যেটা দাবি করছেন সেটা আমার সিনেমার বাজেটের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। তার এই দাবি, পুরোপুরি অবান্তর। এটা শ্রেফ ব্ল্যাকমেইল।

এদিকে দেশের শীর্ষ নায়কের বক্তব্য খালি কথায় মেনে নিতে নারাজ দিলরুবা খান। তার ভাষ্য, আমার কাছ থেকে যে তারা অনুমতি নিয়েছেন তার ডকুমেন্ট তারা দেখাক। তাহলেই তো ঝামেলার সমাধান হয়ে যায়। মৌখিক অনুমতিতে কি কপিরাইট চলে?

শাকিবের এই বক্তব্যের পরে এই শিল্পী জানিয়েছেন, ‘পাগল মন’ গানের সত্ত্ব আমি তোজাম্মেল হকের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি, তো তারা কপিরাইটের সেই দলিল আমাকে দেখাক। প্রমাণ করুক যে, গানের মেধাসত্ব আমি বা এই গান সংশ্লিষ্টরা বিক্রি করে দিয়েছিলাম।

শাকিব খান বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠান থেকে “পাসওয়ার্ড” ছবিটি মুক্তি পেয়েছে গেল বছরের ঈদে। মুক্তির আগেই ইউটিউবে গান প্রকাশ হয়েছিল। যখন গান মুক্তি পেয়েছিল, তখন তিনি কেন চুপ ছিলেন? আমাকে যদি বলতেন, তাহলে তো ওই দুই লাইন ফেলে দিতাম, এমনকি গানও রাখতাম না। কোটি টাকায় সিনেমা বানাব, একটা গান নিয়ে কেন ঝুঁকি নেব! আর বিষয়টা এমন না যে, “পাগল মন”-এর ওই দুই লাইন না রাখলে ছবির বিরাট ক্ষতি হয়ে যেত!’

‘পাগল মন’ গানটির প্রথম দুই লাইন গত বছর মুক্তি পাওয়া শাকিব খান অভিনীত ও প্রযোজিত ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিতে ব্যবহার করা হয়। গানের দুই লাইন নিয়ে নতুনভাবে সাজানো গানটির সুর ও সংগীত পরিচালনা করেন ভারতীয় সংগীত পরিচালক লিংকন। গানটিতে কণ্ঠ দেন অশোক সিং।

আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত