ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

মিশা সওদাগর-জায়েদ খানকে ‘বয়কট’ ঘোষণা

  বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২০, ১৭:২৫

মিশা সওদাগর-জায়েদ খানকে ‘বয়কট’ ঘোষণা

‘স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড’ এ জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানকে ‘বয়কট’ করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে চলচ্চিত্রের ১৮ সংগঠন।

বুধবার (১৫ জুলাই) বিএফডিসির জহির রায়হান কালার স্টুডিওতে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতারা। যার নেতৃত্বে ছিল প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক সমিতির নেতা মুশফিকুর রহমান গুলজার, বদিউল আলম খোকন, প্রযোজক সমিতির নেতা খোরশেদ আলম খসরু, শামসুল হক, অভিনেতা ওমর সানী, প্রযোজক মো. ইকবালসহ অনেকে।

জানা যায়, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি মাস তিনেক আগেই অভিনেতা ও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিল। যেটা প্রকাশ পেয়েছে আজকের সংবাদ সম্মেলনে। সঙ্গে এবার চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৮ সংগঠন (মূলত ১৭) শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানকেও বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু বলেন, ‘চলচ্চিত্রের স্বার্থবিরোধী কাজের কারণে আমরা তার (জায়েদ খান) প্রযোজক সমিতির পদটি বাদ দিয়েছি।’

সম্মেলনে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ আনা হয় ১৮ সংগঠনের পক্ষ থেকে। লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘আপনারা জানেন, চলচ্চিত্র নির্মাণে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নির্মাণ ব্যয় কমানাের লক্ষ্যে এবং সুষ্ঠ পরিবেশ ও আস্থা ফিরিয়ে আনতে এ বছরের শুরুর দিকে আমরা চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠন একত্রে মিলিত হয়ে 'চলচ্চিত্র নির্মান সংক্রান্ত নীতিমালা প্রনয়ন কমিটি' নামে একটি কমিটি গঠন করি। সব সমিতি এই কমিটির নীতিমালার সাথে একমত পােষণ করলেও শুধুমাত্র ব্যক্তি স্বার্থের কারণে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি এর বিরােধিতা করে। আমরা তাদেরকে বােঝানাের জন্য বেশ কয়েকজন অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় সিনিয়র শিল্পীদের নিয়ে একটা সভা করি। যাদের অধিকাংশই আবার শিল্পী সমিতির সম্মানিত উপদেষ্টা।

তারাও আমাদের নীতিমালাকে প্রশংসা করেন এবং চলচ্চিত্রের স্বার্থে নীতিমালাটিকে মেনে নেবার জন্য শিল্পী সমিতির নেতৃবৃন্দকে অনুরােধ করেন। কিন্তু তারপরও শিল্পী সমিতির নেতৃবৃন্দ আমাদের সকলের মতামতের ভিত্তিতে তৈরী নীতিমালাকে মেনে নেননি।’

জায়েদ খানের নাম উল্লেখ করে ১৮ সংগঠনের পক্ষে গুলজার বলেন, ‘আমরা বিশ্বস্তসূত্রে জানতে পেরেছি, এই নীতিমালার সবচেয়ে বেশি বিরােধিতা করছেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। তার কারণেই শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ অন্যান্য সকল সমিতি কর্তৃক প্রনয়নকৃত নীতিমালা মেনে নিতে পারছেন না।

এছাড়াও জায়েদ খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শিল্পী-কুশলীকে হয়রানি করা, মিথ্যা মামলা দেয়া এবং ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করার অনেক অভিযােগ এসেছে।’

জায়েদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে বলা হয়, 'শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান ২০১৯ সালের ৩ এপ্রিলের জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস এর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে খরচের জন্য নগদ ৬ লক্ষ টাকা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের নিকট থেকে সরাসরি গ্রহণ করেন। কিন্তু জাতীয় কমিটি কর্তৃক গঠিত অর্থ সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বাচ্চু, জায়েদ খানকে বারবার চিঠি দিয়ে সভায় উপস্থিত থেকে ৬ লক্ষ টাকার হিসাব প্রদান করার জন্য অনুরােধ করলেও তিনি কোনো সভায় উপস্থিত হননি এবং হিসাবও দেননি।

বিষয়টি একাধিকবার সামনে আসায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির পক্ষ থেকে ১৩ জুলাই তার বিরুদ্ধে পাঠানো হয় কারণ দর্শানোর নোটিশ। এর পরপরই আজ ১৮ সংগঠনের নেতারা তাকে বয়কটের ঘোষণা দিলেন।

প্রযোজক নেতা খসরু বলেন, ‘১৩ জুলাই জায়েদকে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে, সেটা প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সিদ্ধান্ত। আর আজ (১৫ জুলাই) আমরা সব সংগঠন মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম তাকে বয়কটের। দুটির সিদ্ধান্ত একই হলেও দুটি দুই প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা।’ সংগঠনগুলোর নেতারা জানান, লকডাউন শেষে এখন অনেকেই কাজে ফিরছেন। চলচ্চিত্র কর্মীদের অতিরিক্ত ব্যয় কমিয়ে যে নীতিমালা করা হয়েছে, তা মানা জরুরি। নইলে নাজুক চলচ্চিত্র অতিরিক্ত ব্যয়ে আরও করুণ হয়ে যাবে। বিষয়টি নিয়ে গুলজার সরাসরি বলেন, ‘যদি এই নীতিমালা মানা হয়, তাহলে চলচ্চিত্র থাকবে। আর না হয় আর কোনও চলচ্চিত্রই হবে না। তাই বলে কিছু ‘অযোগ্য’ শিল্পীর দিনের পর দিন এমন আচরণ বরদাশত করা হবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো নিয়ে গঠিত চলচ্চিত্র পরিবারের প্রণয়নকৃত নীতিমালা মেনে যারা কাজ করবেন শুধুমাত্র তাদেরকে নিয়েই এখন থেকে চলচ্চিত্র নির্মিত হবে। যারা এই নীতিমালা মেনে কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করবেন তাদেরকে নিষিদ্ধ করা হবে।

নিষিদ্ধ শিল্পী-কুশলীদের নিয়ে যে সকল প্রযােজক অথবা পরিচালক কাজ করার উদ্যোগী হবেন কিংবা কাজ করবেন তাদেরকে তাদের নিজ নিজ সমিতির সদস্যপদ থেকে গঠনতন্ত্র মােতাবেক বহিষ্কার করা হবে অর্থাৎ তাদের সদস্যপদ বাতিল করা হবে।

আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত