ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২১ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাংলাদেশি সিনেমায় প্রস্তাব পেলে অবশ্যই করবো : ঋষি কৌশিক

  ইমরুল নূর

প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২১, ১৭:১৪

বাংলাদেশি সিনেমায় প্রস্তাব পেলে অবশ্যই করবো : ঋষি কৌশিক
‘ইষ্টিকুটুম’ খ্যাত ভারতীয় অভিনেতা ঋষি কৌশিক

কলকাতার টিভি সিরিয়ালের জনপ্রিয় অভিনেতা ঋষি কৌশিক। ‘এখানে আকাশ নীল’, ‘ইষ্টিকুটুম’ ধারাবাহিক দিয়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া এ শিল্পী দ্বিতীয়বারের মত বাংলাদেশের নাটকে অভিনয় করছেন। এরইমধ্যে দুটো নাটকের শুটিং শেষ করেছেন। তিন বন্ধুর গল্পে ‘ফিজিক্স কেমিস্ট্রি ম্যাথ’ শিরোনামের নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও সাবিলা নূরের সঙ্গে। এছাড়া প্রেমের গল্প ‘এই মন তোমারই’ নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন তাসনিয়া ফারিণের বিপরীতে। আরও একটি নাটকের শুটিং শেষে তিনি উড়াল দেবেন কলকাতায়। তিনটি নাটকই পরিচালনা করছেন রাকেশ বসু। শুটিংয়ের ফাঁকেই বাংলাদেশ জার্নালের সঙ্গে আলাপ করেন ভারতের জনপ্রিয় এই অভিনেতা। সেই আলাপের চুম্বর অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

বাংলাদেশ জার্নাল: গেল কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। নিজে দেশ পেরিয়ে নতুন একটা শহর, জায়গা। কেমন লাগছে?

ঋষি কৌশিক: কাজের সূত্রে এ নিয়ে আমার দ্বিতীয়বার বাংলাদেশে আসা। এর আগেও (গত বছর) এসেছিলাম। একটা নাটকের শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলাম। এবারও নাটকের জন্যই এসেছি। বেশ কিছুদিন থাকছি এখানে। তিনটা নাটকের কাজ করবো। এরমধ্যে দুটো শেষ হয়েছে, আর একটি বাকি রয়েছে। শেষ করেই কলকাতা উড়াল দেবো। এখানকার মানুষজন ভীষণ আন্তরিক। আপ্যায়নে জুড়ি নেই বাংলাদেশের মানুষদের।

বাংলাদেশ জার্নাল: বাংলাদেশের নাটক দেখা হয়েছে কখনো?

ঋষি কৌশিক: সত্যি বলতে, বেশকিছু কাজ দেখেছি আমি। এখানে আসার আগে বেশ কয়েকজনের কাজই দেখেছি। বিশেষ করে জিয়াউল ফারুক অপূর্ব’র কাজ, দারুণ অভিনয় করে সে। এর বাইরে আফরান নিশো, মেহজাবীন চৌধুরী, নুসরাত ইমরোজ তিশা, সাবিলা নূর, তাসনিয়া ফারিণ, তানজিন তিশার কাজ দেখেছি আমি। আর হ্যাঁ, একটা নাম না বললেই নয়; মোশাররফ করিম। তার নাটক আমি প্রথম দেখি। উনার ‘জমজ’ সিরিজটা আমার দেখা হয়েছে। আমার কয়েকজন বন্ধু রয়েছেন তারা উনার নাটক দেখেন। তারাই আমাকে বলেছিলেন যে, ‌‘নাটকটা দেখো, ভালো লাগবে’। তখন আমি দেখেছিলাম।

বাংলাদেশ জার্নাল: এখানে কাজ করে কেমন অভিজ্ঞতা হলো আপনার বা কলকাতার সঙ্গে এখানকার কাজের মধ্যে পার্থক্য কী দেখলেন?

ঋষি কৌশিক: অভিজ্ঞতা এক কথায় দারুণ। আমার বেশ ভালো লেগেছে। বেসিক্যালি আমাদের ওখানে টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি মানেই হচ্ছে মেগা সিরিয়াল অর্থাৎ ধারাবাহিক। কারণ একটা সিরিয়াল শুরু হওয়া মানেই হচ্ছে এক বছর, দুই বছর কিংবা তারও বেশি সময় লেগে যায়। সেসব সিরিয়ালে একটা চরিত্রে নিজেকে সেট করে ফেলা মানে নিজেকে নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করাটা খুব কঠিন। বলতে গেলে নিজেকে নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করা-ই যায় না। একটা চরিত্রে ঢুকে গেলে, সেই সিরিয়ালটা যতদিন চলবে ততদিন সেটা করে যেতে হবে। যার কারণে এক্সপেরিমেন্টের সুযোগটা থাকে না। সেই তুলনায় বাংলাদেশে যে নাটকগুলো হয় সেগুলো দুই দিন, তিনদিন কিংবা ম্যাক্সিমাম চারদিন সময় লাগে। সেদিক থেকে এখানে চরিত্রে ভেরিয়েশন আনা যায় খুব সহজেই। এক্সপেরিমেন্টের অনেক জায়গা থাকে। এদিক থেকে দুই বাংলার কাজের মধ্যে বিশাল একটা পার্থক্য রয়েছে, আমার কাছে মনে হয়।

‘বাঙালিদের কাজের পরিবেশ বেশ ঘরোয়া, সেটা দুই বাংলাতেই। এছাড়া টেকনিক্যাল দিক তো কিছু আছেই। কলকাতার কাজগুলো হয় বেশ বহরে আর সেখানটা টেকনিক্যালি ওয়েল ইক্যুইপড। এছাড়া সবকিছু প্রায় একইরকম।’

বাংলাদেশ জার্নাল: অনেকেরই তো পছন্দের শিল্পী থাকে। সেদিক থেকে এখানে কার সঙ্গে পর্দা ভাগ করে কাজ করার ইচ্ছে আছে আপনার?

ঋষি কৌশিক: সেরকম তো আছেই। তবে আমি কোনো গণ্ডিতে থেকে কাজ করতে চাই না। গণ্ডি পেরিয়ে যত বেশি কাজ করবো ততই আমার নতুন কিছু শেখা হবে, প্রত্যেকের কাছ থেকেই নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন হবে। যত বেশি অভিজ্ঞতা অর্জন হবে সেটা একজন শিল্পীকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করবে। আমি সেটাই করতে চাই, সবার সঙ্গেই কাজ করতে চাই।

বাংলাদেশ জার্নাল: বাংলাদেশের নাটকে কাজ করেছেন। এখানকার সিনেমাতে কাজ করার প্রস্তাব পেয়েছেন কি?

ঋষি কৌশিক: না, সেরকম প্রস্তাব এখনো আসেনি। তবে ইচ্ছে আছে সিনেমায় কাজ করার। একজন শিল্পীর কিন্তু সবসময়ই ইচ্ছে থাকে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করার। আমারও সেরকমই ইচ্ছে আছে, দেখা যাক কী হয়! করতে পারলে আমারও বেশ ভালো লাগবে।

বাংলাদেশ জার্নাল: এখন থেকে কি এখানে নিয়মিত কাজ করবেন?

ঋষি কৌশিক: নিয়মিত করবো কিনা জানি না। তবে সুযোগ পেলে তো অবশ্যই করবো। যেহেতু এখানে আমার কোনো কাজ এখনো রিলিজ হয়নি। দর্শকদের প্রতিক্রিয়াটা সেভাবে বুঝে উঠতে পারছি না। যতদূর জেনেছি, এখানে ঈদকে ঘিরেই বিশেষ বিশেষ কাজ হয়। আমার কাজগুলো ঈদে প্রচারিত হবে। তারপর দেখি কতটুক সাড়া পাই! যদি ভালো ফিডব্যাক পাই, তাহলে অবশ্যই কাজ করবো।

বাংলাদেশ জার্নাল: কাজ করতে গিয়ে নিশ্চয় এখানে অনেকের সঙ্গেই পরিচয় হয়েছে, সম্পর্ক গড়ে উঠেছে...?

ঋষি কৌশিক: হ্যাঁ। অনেকের সাথেই বেশ ভালো একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। অপূর্ব’র সঙ্গে বেশ ভালো একটা সম্পর্ক আমার। এর আগে যখন কাজ করতে এসেছিলাম তখনই আমাদের দেখা হয়েছিলো। অনেক কথা হয়েছে, আড্ডা হয়েছে। এমনকি কলকাতা থেকেও প্রায় সময় ওর সঙ্গে আমার কথা হয়। খুবই চমৎকার একজন মানুষ সে। আমাদের মধ্যে বেশ ভালো একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। বেশ কমফোর্টেবল, হৈ-হুল্লোড় করে কাজ করেছি আমরা।

প্রসঙ্গত, ঋষি কৌশিক আসামের ছেলে, থাকেন কলকাতায়। আসামে ‘রঙ’ শিরোনামে একটি সিনেমা দিয়ে শোবিজে পা রাখেন। এটি ২০০৪ সালে মুক্তি পায়। একই বছরে কলকাতায় একটি টেলিছবিতে অংশ নেন। প্রথম টেলিছবিটির পর জি বাংলা চ্যানেলের একটি ধারাবাহিক নাটকের প্রস্তাব পান তিনি। ঋষি অভিনীত ‘একদিন প্রতিদিন’ ধারাবাহিকটি ২০০৫ সালে শুরু হয়ে ২০০৭ পর্যন্ত চলে। এরপর বেশকিছু টেলিছবিতে কাজ করেন তিনি। এরপর ২০০৮ সালে স্টার জলসা চ্যানেল লঞ্চিং হয়। চ্যানেলটির প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘এখানে আকাশ নীল’ এ উজান চরিত্রে অভিনয় করেন দারুণ প্রশংসা পান। তারপর একই চ্যানেলের পাঁচটি ধারাবাহিক করেন। এরপর ‘ইষ্টিকুটুম’ ধারাবাহিকে অর্চি চরিত্রে অভিনয় করে রীতিমত দর্শকপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/আইএন/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত