ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

র‍্যাপাররা বাইরে মূল্যায়ন পেলেও, দেশে পায় না: ব্ল্যাক জ্যাং

  বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৬ মে ২০২১, ১৫:১৩  
আপডেট :
 ০৬ মে ২০২১, ১৫:২৬

র‍্যাপাররা বাইরে মূল্যায়ন পেলেও, দেশে পায় না: ব্ল্যাক জ্যাং
র‍্যাপার ব্ল্যাক জাং বা আসিফুল ইসলাম সোহান

দেশীয় সংগীত শিল্পে হিপহপ সংস্কৃতির উপস্থিতি এক দশক আগেও তেমন প্রচলিত ছিল না। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ সংস্কৃতির দৃশ্যটি বেশ পরিবর্তিত হয়েছে বটে কিন্তু এতোটাও সমাদৃত হন না। ২০০৯ সালে ‘ অ্যাই মামা অ্যাই’ গানটি দিয়ে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন আসিফুল ইসলাম সোহান। ডাক নাম সোহান হলেও তার স্টেজ নাম হচ্ছে ব্ল্যাক জ্যাং বা বিজি। গানের প্রতি আকর্ষণ বহু আগে থেকে হলেও র‍্যাপিং নিয়ে তার দারুণ আগ্রহ গেল এক যুগ ধরে। একদিন বাংলা শব্দ নিয়ে বাজানোর সময় তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি মাতৃভাষায় ছড়া লিখতে পারেন। তার পর থেকে তিনি তার এ নৈপুণ্যকে সম্মান করছেন এবং এ ধারাটা বেছে নেন।

বাংলাদেশের র‍্যাপ গান নিয়ে যে দু’-চারজন তরুণ আন্তর্জাতিকভাবে নজর কাড়তে পেরেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম ব্ল্যাক জ্যাং। নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া হলিউড সিনেমা ‘এক্সট্র্যাকশন’-এ ছিল তার গান। ক্রিস হেমসওয়ার্থ অভিনীত এ ছবির ‘নো বাউন্ডারিস’ গানটি গেয়েছিলেন ব্ল্যাক জ্যাং। দর্শকমহলে বেশ সাড়া পায় গানটি।

সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তার নতুন গান ‘থ্রিলার’। মুক্তির পর এটি থেকে বেশ ভাল সাড়া পাচ্ছেন বলেই জানান তিনি। তিনি বলেন, এই গানটা আসলে তাদের জন্য করা যারা আসলে বাইকার, খুবই ফাস্ট বাইক চালায়। আমাদের কমিউনিটির মধ্যে তরুণরা বেশ রেস্পন্স করছে গানটি নিয়ে। ভিডিওটা একটু আন্তর্জাতিক মানের করে করার চেষ্টা করেছি, যার কারণে ভিডিওটিও দর্শকরা পছন্দ করছেন। অনেক রেডিও স্টেশনে গানটি বাজছে। লন্ডনের বিবিসি নেটওয়ার্কেও গানটি প্রচার করা হচ্ছে। সত্যি বলতে ভালো সাড়া পাচ্ছি। আর বিশেষ করে হিরো বাংলাদেশকে অনেক ধন্যবাদ দিতে চাই কারণ তারা এই কাজটার জন্য অনেক সাপোর্ট করেছেন, প্রমোশন করেছেন।

বাংলাদেশে হিপহপ বা র‍্যাপারদের গ্রহণযোগ্যতা বা মূল্যায়ন কেমন বলে মনে করেন? এমন প্রশ্নে সোহান বলেন, প্রথম দিকে একদমই গ্রহণযোগ্যতা ছিলো না। সবাই বলতো কী করি এসব? অনেকে পাগলামিও বলতো, হাসতো। এখনও কম বেশি অনেকেই হাসে এটা নিয়ে। অথচ দেশের বাইরের র‍্যাপিং নিয়ে অনেকে আবার ব্যাপক প্রশংসা করে। শুধু নিজের দেশের বেলাতেই হাসির খোঁড়াক হতে হয়! তবে আগের তুলনায় গত ৩/৪ বছর ধরে এটার গ্রহণযোগ্যতা অনেকটা বেড়েছে।

তিনি আরও বলেন, এখন অনেকেই সেটা পছন্দ করে। কিন্তু র‍্যাপাররা প্রপার সাপোর্টটা এখনও পায় না। কোম্পানি, লেবেল কোম্পানি, এজেন্সি কিংবা ব্র্যান্ড থেকে যদি সাপোর্ট পাওয়া যেতো তাহলে আমরা আরও অনেক ভাল কিছু করতে পারতাম। আমাদের পেছনে অনেকে ইনভেস্ট করতে চান না। যদিও বাংলাদেশে নতুন কিছু একটা প্রতিষ্ঠিত হতে একটু সময় নেয়।

মূল্যায়ন প্রসঙ্গে ব্ল্যাক জ্যাং বলেন, দেশের বাইরে র‍্যাপারদেরকে অন্যভাবে মূল্যায়ন করা হয় যেটা আমাদের দেশে ওভাবে হয় না। দেশের বাইরে এটার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা আছে যার কারণে তারা সেটাকে আলাদাভাবেই দেখে। আমাদের দেশে সেটা এখনও ওভাবে গড়ে উঠেনি। হয়তো সময় লাগবে।

তিনি আরও বলেন, হিপ হপ আমার জীবনের গতিপথ বদলে দিয়েছে। এখন যারা নতুন নতুন হিপহপ করছে তারা দেশের বাইরেও প্রশংসিত হচ্ছে। আমি যদি বলি, পাশের দেশ ভারতের মুম্বাই থেকেও অনেক প্রশংসা পাচ্ছি, সাপোর্ট পাচ্ছি। বাঙালি ছাড়াও অনেকেই পছন্দ করছেন, বিশেষ করে প্রবাসীরা। দেশের বাইরে আমাদের কমিউনিটিটা একটু একটু করে বাড়তেছে। স্রকম করে আমাদের দেশে যদি সেইরকম সাপোর্টটা পাই তাহলে আমাদের জন্য বেশি ভাল হতো।

কয়েক বছর ধরেই সোহান দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শোতে অংশ নেন। এমনকি তিনি একটি নামী রেডিও চ্যানেলের জন্য একটি অনুষ্ঠানও হোস্ট করেছিলেন, যা হিপহপ সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচুর জনপ্রিয় ছিল। ২০১৫ সালে, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর একটি সাংস্কৃতিক বিনিময় সফরের আয়োজন করেছিল, যেখানে ছয়টি বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের আমন্ত্রিত করা হয়েছিল। বিজেড এই অনুষ্ঠানের সময় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিল। পরে ২০১৭ সালে, তিনি যুক্তরাজ্যে আমন্ত্রণের ভিত্তিতে একটি উত্সবে অংশ নিয়েছিলেন। সম্প্রতি, তিনি ঘরোয়া রিয়েলিটি শোতে বিচারপতিদের একজন এবং দু'জনের সাথে আরও একজনের দায়িত্ব পালন করেছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/ আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত