ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘জীবনের শেষ পর্যন্ত মায়ের স্বপ্নটা পূরণ করে যেতে চাই’

  ইমরুল নূর

প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২১, ১৬:৩৩  
আপডেট :
 ১৯ জুন ২০২১, ১৭:১১

‘জীবনের শেষ পর্যন্ত মায়ের স্বপ্নটা পূরণ করে যেতে চাই’
মডেল, অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী সাদিয়া ইসলাম মৌ

সাড়ে তিন বছর বয়সে নাচ দিয়ে দিয়ে শুরু, এরপর মডেলিং, অভিনয়; সব অঙ্গনেই নিজের ছাপ রেখেছেন তিনি। সেই নব্বই দশকের শীর্ষ নারী মডেল, যাকে এখনকার প্রজন্ম মানে আইকন হিসেবে; তিনি সাদিয়া ইসলাম মৌ। কাজের মান ও অভিনয় স্বকীয়তায় জনপ্রিয়তার আকাশ ছুঁয়েছিলেন তিনি। সময়ের সঙ্গে অনেক কিছু বদলে গেলেও বদলাননি তিনি, এখনো যেন ঠিক আগের মতোই রয়েছেন রূপে, গুণে এমনকি অবস্থানেও। নাচ নিয়ে বেশি আগ্রহ থাকায় অভিনয়ে খুব কম দেখা যায় তাকে। সম্প্রতি নতুন একটি নাটকের শুটিং শেষ করলেন তিনি। সেখানেই নানা বিষয়ে কথা হয় দেশের এ শীর্ষ তারকার সঙ্গে। সেই আলাপচারিতার চুম্বকাংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো...

‘অন্ধ জলছবি’ কাজটি সম্পর্কে জানতে চাই...

আমি তো অভিনয় খুব বেশি একটা করিনা। বছরে একটা কিংবা দুইটা নাটকে হয়তোবা কাজ করি। গল্প এবং চরিত্র এ দুটো আমার কাছে খুব বেশি ইমপর্টেন্ট। এখানেও ব্যতিক্রম কিছু পেয়েছি যার কারণে কাজটি করা। আর এই কাজটি করার আরও একটি বিশেষ কারণ হচ্ছে এটির প্রযোজক ডলি ইকবাল আন্টি। উনার কারণেই কাজটি করতে রাজি হওয়া। চয়নিকা বৌদির সঙ্গে অনেক আগে থেকে পরিচয় থাকলেও এবারই প্রথম তার সঙ্গে কাজ করা।

আপনাকে নাটকে খুব কম পাওয়া যায়। এবার ঈদে আর কী কী কাজে দেখা যেতে পারে?

আমি তো কাজই করি কম। যতটুকু জানি, ‘অন্ধ জলছবি’ যাবে আর গত ঈদের আগে করা ‘ঘোর’ নামে একটি নাটক প্রচার হতে পারে। ওই কাজটি গত ঈদেই প্রচার হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু হয়নি, তাই এবার হতে পারে। এছাড়া নাচের অনুষ্ঠান তো থাকছেই।

পুরো বিশ্বের অবস্থাই তো এখন খারাপ। এই করোনা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কাজ করা কিংবা বাইরে বের হওয়াটাও তো অনেক রিস্ক। এমন পরিস্থিতিতে মানিয়ে চলাটা আসলেই খুব কঠিন। এসবের মধ্যে কাজ করার সাহস হয়ে ওঠে না। আমার মা আর মেঝো বোন চলে যাওয়ার পর থেকে মানসিকভাবেও একটু ভেঙ্গে পড়ি। সেসব কাটিয়ে ওঠতেও একটু সময় লাগবে।

একজন মৌ একদিনে তৈরি হয়নি। অনেক সংগ্রাম, শ্রম মিশে আছে এর পেছনে। একজন মৌ তৈরি হওয়ার গল্পটা কেমন ছিল?

সত্যি বলতে আমার মৌ হওয়ার ইচ্ছেই ছিলো না কখনো। তবে এই ইচ্ছেটা ছিলো আমার মায়ের। মডেলিং, অভিনয়; এসব কোনো কিছুতেই আমার ইচ্ছে ছিলো না। আমার মা অনেকটা জোর করেই আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে। আমাকে মডেলিংয়ে প্রথম নিয়ে এসেছেন আমার বড় দুলাভাই ফারুক হাসান। উনার মাধ্যমেই আমি প্রথম ফ্যাশন শো-তে অংশ নিই। আমার পরিবারের সহযোগিতা ছাড়া আমি কিছুই না। তাদের সবার সহযোগিতাতেই আমি আজকের মৌ। আমার মা চাইতো আমি যেন অনেক বড় কিছু হই। শুধু আমি না, আমাদের চার বোনকে নিয়েই অনেক স্বপ্ন দেখতেন মা। চাইতেন আমরা যেটাই করিনা কেন, সেখানে যেন অবশ্যই সফল হই। এটাই ছিলো আমার মায়ের চাওয়া। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মায়ের স্বপ্ন পূরণ করে যেতে চাই। আর আমার স্বপ্ন যদি বলি, সেটা আমার ছেলে-মেয়েকে ঘিরে।

আপনি শোবিজের একজন শীর্ষ তারকা। আপনার সন্তানরা কী সেটি অনুভব করে? নাকি আপনার সন্তানদের কাছে আপনি আর পাঁচটা মায়ের মতোই...

অনেকের কাছে হয়তো আমি অনেক কিছু কিংবা তারকা। কিন্তু আমি নিজে সেটা কখনো মনে করিনা। আমি সবসময়ই সাধারণ। আমি মা হওয়ার আগ পর্যন্ত নিজেকে মা-বাবার সন্তান হিসেবে দেখেছি আর এখন একজন মা হিসেবে। আমার পরিচয় একজন স্ত্রী, একজন মা। আমি নিজেকে কখনো তারকা ভাবিনা। যেকোন কাজে গেলেও আমার মাথায় সারাক্ষণ এটি থাকে যে, আমি একজন মা।

আর আমার সন্তানরা সেটা অনুভব করে কিনা জানিনা তবে তাদের মা হতে পেরে আমি গর্বিত। পুষ্পিতা ও পূর্ণ আমার দুটো সন্তানই অনেক লক্ষ্মী। এখনকার প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের মতো এত ফাস্ট না তারা। একদম শান্ত শিষ্ঠ, হুট হাট এখানে সেখানে যাওয়ার কোনো বায়না নেই তাদের। বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেই বেশি পছন্দ করে।

যদিও অনেকদিন ধরে কোথাও বের হওয়া হচ্ছে না তাদের নিয়ে। তারপরও তাদের কোনো অভিযোগ নেই। জাহিদ শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকে, আমি হয়তো একটু কম ব্যস্ত থাকি তারপরও আমরা একসঙ্গে বেশ ভালোই আছি।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মৌ কাজ করেছেন অসংখ্য বিজ্ঞাপনে। কেয়া লিপজেল, কেয়া সুপার লেমন সোপ, কেয়া পেট্রোলিয়াম জেলি, কেয়া টেলকম পাউডার, কেয়া লন্ড্রি সোপ বিজ্ঞাপন দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন এই সুন্দরীতমা। ঐ সময়টাতে প্রচার হওয়া বিজ্ঞাপনগুলোও ছিলো বেশ নান্দনিক। যার ফলে খুব দ্রুতই সেগুলো দর্শকপ্রিয়তা পেতো। সেইসব বিজ্ঞাপনের বদৌলতে অনেক মডেল ও অভিনয়শিল্পীরাই পেয়েছেন তারকাখ্যাতি। তাদের মধ্যে মৌ অন্যতম। একটা সময় টিভি খুললেই দেখা যেত জনপ্রিয় এ মডেলের বিজ্ঞাপন। নজরকাড়া উপস্থিতিতে বিজ্ঞাপনেও দর্শকের মাঝে স্বস্তি এনে দিতেন তিনি। এখন বিজ্ঞাপনে খুব একটা দেখা না গেলেও মাঝেমধ্যে টেলিভিশন নাটক ও নাচের অনুষ্ঠানে দেখা যায় তাকে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত