ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

সাক্ষাৎকারে গিয়াস উদ্দিন সেলিম

‘শুধু নির্বাচন আর দাবি পেশ হয়, কার্যকর হয় না’

  ইমরুল নূর

প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬:৪৬  
আপডেট :
 ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭:৪৯

‘শুধু নির্বাচন আর দাবি পেশ হয়, কার্যকর হয় না’
নন্দিত নাট্যকার, নাট্যনির্মাতা ও চলচ্চিত্রকার গিয়াস উদ্দিন সেলিম

নন্দিত নাট্যকার, নাট্যনির্মাতা ও চলচ্চিত্রকার গিয়াস উদ্দিন সেলিম। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার নির্মাণ সংখ্যা অসংখ্য না হলেও বেশকিছু নির্মাণ তাকে অন্য অনেকের চেয়ে আলাদা করেছে। শুধু নাটকই নয়, সিনেমাতেও হয়েছেন সফল। ‘মনপুরা’ সিনেমা নির্মাণ করে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন এই নির্মাতা। এরপর ‘স্বপ্নজাল’ নির্মাণেও হন প্রশংসিত। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে তার দুই সিনেমা ‘পাপ-পুণ্য’ ও ‘গুনিন’। সম্প্রতি সিনেমা ও নানা বিষয় নিয়ে কথা হয় গুণী এই নির্মাতার সঙ্গে। সেই আলাপচারিতার চুম্বকাংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

‘গুনিন’ সিনেমার সর্বশেষ আপডেট কি?

‘গুনিন’ এর শুটিং অনেক আগেই শেষ হয়েছে। এমনকি পোস্ট প্রোডাকশনের কাজও শেষ পর্যায়ে। এটা তো চরকির প্রোডাকশন, সেন্সর হয়ে যাওয়ার পরেই তারা শীঘ্রই মুক্তি দিয়ে দেবে। খুব তাড়াতাড়ি-ই সেন্সরে জমা দেবো ছবিটি।

‘পাপ-পুণ্য’ সিনেমা মুক্তির ঘোষণা দিলেন। ছবিটির কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছিলো জানিয়েছিলেন। কয়েকবার মুক্তির তারিখও পিছিয়েছেন। এখনের তারিখটা চূড়ান্ত তো?

‘পাপ-পুণ্য’ শুট করেছিলাম মহামারীর আগে। মহামারীর মাঝখানে কিছু প্যাঁচওয়ার্কের কাজ করেছিলাম। মুক্তির পরিকল্পনা তো গতবছরই ছিলো কিন্তু মহামারীর কারণে পেছাতে হয়েছে, কারণ সেসময় সিনেমা হলও কিন্তু বন্ধ ছিলো। আর ছবিটা যেহেতু ইমপ্রেস টেলিফিল্মের তারাই বিষয়গুলো দেখছে। এখন আমরা নতুন মুক্তির তারিখ হিসেবে নতুন বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ঠিক করেছি। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে এটা জানানো হয়েছে। এখন আমরা সেভাবেই প্রস্ততি নিচ্ছি।

অনেক দিন আমার সিনেমা আসছে না। এখন আমি নিজে মুখিয়ে আছি কবে আমার সিনেমা মুক্তি পাবে। সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া ‘স্বপ্নজাল’ সিনেমা থেকে দর্শকের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। এখন ‘পাপ-পুণ্য’ মুক্তির পর দর্শকেরা কেমন প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটা দেখার অপেক্ষায় আছি।

করোনা মহামারীর কারণে অনেকদিন হল বন্ধ ছিলো। এখন হল খুলেছে, সিনেমাও মুক্তি পাচ্ছে। এখন দর্শকদেরকে হলমুখী করার ক্ষেত্রে পরিচালক কিংবা শিল্পীদের কি ভূমিকা থাকা উচিত বলে মনে করেন আপনি?

দর্শক সিনেমা হলে আসবে সিনেমা দেখার জন্য। তাদের কাছে সিনেমা দেখে ভালো লাগলে আরেকজনকে বলবে দেখার জন্য। এটা তো দর্শকের হিসাব। আমাদের কাজ ঠিকঠাক মতো সিনেমাটা বানানো, বানিয়ে সেটা মুক্তির ব্যবস্থা করে দর্শক পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া। এরপর তারা সেটা পছন্দ করলে দেখবে, নাহলে দেখবে না।

এখন আপনার পুরো ব্যস্ততা কি সিনেমা ঘিরেই? নাটক কিংবা ওটিটি প্লাটফর্মের কোনো কাজে দেখা যাচ্ছে না আপনাকে...

নাটক, সিনেমা কিংবা ওটিটির কাজ যেটাই হোক না কেন, সেখানে বাজেট একটা বড় ফ্যাক্ট। সঠিক (উপযুক্ত) বাজেট, সঠিক গল্প পেলে আমি সব মাধ্যমেই কাজ করতে চাই। আমি তো টেলিভিশনেই আমার ক্যারিয়ার শুরু করেছি। উপযুক্ত জিনিস পেলে নাটক বানাতে তো আমার আপত্তি নেই। এমনকি ওটিটি বা সিনেমার জন্যও আমার আপত্তি নেই। আমি তো কাজ করতেই চাই।

আপনি বললেন, উপযুক্ত বাজেট পেলে কাজ করবেন। বাজেট স্বল্পতার কথা আমরা দীর্ঘদিন ধরেই শুনে আসছি। এখন তো ভালো ভালো বাজেটে অনেক কাজ হচ্ছে। তারপরও আর কি সহযোগিতা পেলে বা কি উপায়ে নির্মাতাদের বাজেট ঘাটতি পূরণ হবে বলে মনে করেন আপনি?

ইন্ডাস্ট্রির পলিসি মেকার, এখানকার বিভিন্ন সংগঠন এবং তাদের নেতারা যারা আছেন তারা হয়তো এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন। এখানে তথ্য মন্ত্রণালয়ের নজরদারি করা দরকার। কীভাবে এই বাজেট সংকট থেকে ইন্ডাস্ট্রি উত্তরণ পেতে পারে, টেলিভিশনের যত সংগঠন আছে তাদের এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করা উচিত। আর সিনেমার জন্য তো এফডিসি ভিত্তিক সংগঠন রয়েছে।

শুধু সংগঠন করার জন্য করলে তো হবে না। কাজ করতে হবে, গবেষণা করতে হবে। সমস্যাগুলো খুঁজে বের করে সেগুলো উত্তরণের ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু নির্বাচন হয় আর কতগুলো দাবি পেশ হয়। কিন্তু সেগুলোর কার্যকর আর হয় না। কতটুকু কি হলো, সেগুলোর আর কোনো খবর পাওয়া যায় না।

একটা উদাহরণ যদি দেই, সারা বিশ্বের সবচেয়ে বড় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের আসর বা জলসা ‘ফোক ফেস্টিভ্যাল’ এখন হচ্ছে না। শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির প্রতি যদি আমাদের এত দায়বদ্ধতা থাকতো তাহলে এই অনুষ্ঠানটা কিন্তু বন্ধ হতো না। নাচ, গান, নাটক সিনেমা; যা-ই বলি না কেন এগুলো একটা সংস্কৃতির জন্য অনেক বড় একটা উপাদান। জাতি গঠনের জন্য উপাদান।

পলিসি মেকাররা চাইলে কিন্তু এটা পারে। আমরা যদি তাদের মত করে কাজ করি তাহলে হয়তো সেসব বিষয়ে সুফলগুলো পাবো নাহলে রাস্তায় নেমে চিৎকার করলেও কোনো লাভ হবে না। এদেশে কৃষকরা যতটা গুরুত্ব পায়, সংস্কৃতি কিন্তু এতটা পায় না। এই জায়গাতেও গুরুত্ব দেওয়া দরকার বলে মনে করি আমি। আমরা তো সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কাজ করি, এটা করেই খাই। একটা জাতি কতটা সংস্কৃতিমনা হয়ে ওঠবে, কত সুন্দরভাবে বেড়ে উঠবে সেটা কিন্তু ওই দেশের সংস্কৃতি-ই বলে দেবে। এই বিষয়গুলোতে একটু নজর দেওয়া দরকার বলে মনে করি।

আগামী সপ্তাহে ‘কাজল রেখা’ শিরোনামে নতুন সিনেমার ঘোষণা দেবেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম। এরইমধ্যে ছবির শিল্পী নির্বাচন চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত