ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

মনমোহন সিংয়ের বায়োপিক নিয়ে যত বির্তক

  বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:২৮  
আপডেট :
 ১৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:৩৮

মনমোহন সিংয়ের বায়োপিক নিয়ে যত বির্তক

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের জীবনীভিত্তি বলিউড ছবি ‘দ্য এক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ মুক্তির পর থেকেই চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এবার সেই সমালোচনায় যুক্ত হলো নতুন মাত্রা। সমালোচকরা মনে করছেন , সাধারণ নির্বাচনের আগে এই ছবি মুক্তির পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে এবং এতে মিস্টার সিংকে খুবই ব্যাঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

মনমোহন সিংকে নিয়ে তৈরি এই বায়োপিকের নাম ‘দ্য এক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’। ছবিতে দেখা যায় তিনি জাঁকজমকপূর্ণ অফিস কক্ষে বসে আছেন। কংগ্রেসের তৎকালীন প্রধান সোনিয়া গান্ধী যখন তাকে কোন নির্দেশ দেন, তখন মনমোহন সিংকে যেন কিছুটা হতবুদ্ধি দেখায়।

মনমোহন সিং এর ব্যক্তিত্ব নিয়ে একধরনের বিভ্রান্তি রয়েছে। অনেকেই মনে করেন তাকে বোঝা বেশ দুরূহ। সমালোচকরা বলছেন, এই ছবিটি হতে পারতো তার এই দুর্বোধ্য ব্যক্তিত্বের ওপর আলোকপাত করার একটা চেষ্টা। কিন্তু তার পরিবর্তে এটি আসলে তার ওপর আক্রমণের একটি চেষ্টায় পরিণত হয়েছে। একজন সমালোচকের মতে, এটি আসলে খুবই বাজে একটা ‘প্রপাগান্ডা ফিল্ম’।

এই ছবিতে মনমোহন সিং এর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন নামকরা বলিউড তারকা অনুপম খের। মনমোহন সিং, তার মতে, একজন জ্ঞানী রাজনীতিক- যাকে অনেকেই ভুল বোঝেন বা একেবারেই বুঝতে পারেন না। অনুপম খেরের মতে নির্মাতাদের চেষ্টা ছিল এই ছবির মাধ্যমে মনমোহন সিং-এর প্রতি মহাকাব্যিক শ্রদ্ধা নিবেদনের।

কিন্তু খুব কম সমালোচকই আসলে একমত হবেন যে এই ছবিতে মনমোহন সিং এর সঙ্গে সুবিচার করা হয়েছে। ছবিটির চিত্রনাট্য লেখা হয়েছে মূলত মিস্টার সিং এর মিডিয়া উপদেষ্টা সঞ্জয় বারু'র স্মৃতিকাহিনীর ওপর নির্ভর করে ।

মনমোহন সিং-এর বয়স এখন ৮৬। তিনি ২০০৪ সাল হতে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দুই দফায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এই সাবেক শিক্ষক এবং আমলা ছিলেন প্রচার বিমুখ এবং সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার দিতেন খুব কম।

মনমোহন সিং পড়াশোনা করেছেন কেমব্রিজ এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। কাজ করেছেন জাতিসংঘ এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান ছিলেন। এরপর কংগ্রেসের শাসনামলে অর্থমন্ত্রীও হয়েছেন।

তিনি সুবক্তা নন। রাজনৈতিক কলাকৌশলেও অতটা ভালো নন। তাকে আসলে কখনো কোন নির্বাচনে জিততে হয়নি। কারণ তিনি ছিলেন ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষের সদস্য, যেখানে সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে হয় না।

অনেকের মতে, মিস্টার সিং এর নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত বিরোধিতার মুখে পড়েছিল তার নিজের দল কংগ্রেসেই।ছবিটির নাম যে ‘দ্য এক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’, তার কারণ, মিস্টার সিং ২০০৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর পদ পেয়েছিলেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী নিজে ঐ পদে যেতে অস্বীকৃতি জানানোর পর। যদিও সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বেই সেই নির্বাচনে কংগ্রেস জয়ী হয়। ইটালিয়ান বংশোদ্ভূত সোনিয়া গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলে সেটি নিয়ে তীব্র সমালোচনা হবে, এমন আশংকাতেই তিনি ঐ পদে যেতে আগ্রহী হননি।

কিন্তু মানুষের ধারণা ছিল, প্রধানমন্ত্রী না হলেও কংগ্রেসের নেত্রী হিসেবে সোনিয়া গান্ধীই ছিলেন আসল ক্ষমতাধর। মানুষের এই বদ্ধমূল ধারণা কখনো মনমোহন সিং ভাঙ্গতে পারেননি।

সঞ্জয় বারু তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন, দিল্লীতে তখন একধরনের দ্বৈত ব্যবস্থা চলছিল। সরকার চালাতেন মনমোহন সিং। আর দল চালাতেন সোনিয়া গান্ধী। কিন্তু সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে এই ব্যবস্থা আর কাজ করেনি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মিস্টার সিং-এর স্বাধীনতা খর্ব হতে থাকে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ এএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত