ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

গল্প যদি নায়ক হয়, তাহলে সেটা মানুষের কাছে পৌছাবেই: শামীম

  ইমরুল নূর

প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৬:০১  
আপডেট :
 ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৬:৫৪

গল্প যদি নায়ক হয়, তাহলে সেটা মানুষের কাছে পৌছাবেই: শামীম

এই সময়ের টিভি পর্দার অন্যতম জনপ্রিয় । অভিনেতার বাইরেও শামীম হাসান সরকার একজন ইউটিউবার এবং গায়ক। তার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল 'ম্যাঙ্গো স্কোয়াড' এর মাধ্যমে পেয়েছেন আলাদা পরিচিতি, পেয়েছেন সফল ইউটিউবারের তকমা। 'স্কোয়াড লিডার' হিসেবেই তাকে সবাই চেনে।

মাঝে অসুস্থ থাকায় কয়েক মাস বিরতিতে ছিলেন। সুস্হ হয়ে আবারও নিয়মিত হন অভিনয়ে। এসময়টা বেশ ব্যস্ততায় কাটাচ্ছেন শামীম। এই মূহুর্তে বেশ কিছু নাটকের শুটিং করছেন।

মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত ও এনটিভিতে প্রচারিত 'ফ্যামিলি ক্রাইসিস' ধারাবাহিক নাটকটি এখন বেশ আলোচনায় রয়েছে। নাটকে অভিনীত প্রত্যেকটি চরিত্রই এখন দর্শকদের মুখে মুখে। নাটকে রায়হান চরিত্রে অভিনয় করছেন শামীম। শামীম বলেন, নাটকটি এখন বেশ আলোচিত। যেখানেই যাই সবার কাছ থেকে শুধু এই কাজটার প্রশংসা পাই। এছাড়াও কাজল আরেফিন অমি পরিচালিত 'ব্যাচেলর পয়েন্ট' নাটকটির জন্যও অনেক প্রশংসা পেয়েছেন। দর্শকদের অনুরোধে সেটার সিক্যুয়েলও নির্মাণ করা হয়।

'গেল ঈদের আমার বেশ কিছু কাজ দর্শক প্রশংসিত হয়েছে। এরমধ্যে 'ব্যাচেলর ঈদ', 'এ জার্নি বাই রিলেশন টু', 'সারপ্রাইজ', আর 'ফেসবুক বয়', এই কাজগুলো থেকে বেশি প্রশংসা পেয়েছি। কাজগুলো বেশ আলোচনায় ছিল। যখন দর্শকরা কোন কাজের প্রশংসা করে সত্যি খুব ভালো লাগে।' এমনটাই বলছিলেন অভিনেতা শামীম হাসান সরকার।

নাটকে কাজ করার ক্ষেত্রে গল্পের মান বাছাই কতটা জরুরী বলে মনে করেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, গল্প বাছাই করাটা অবশ্যই জরুরী। ভালো গল্প ও চরিত্রেই কাজ করার চেষ্টা করি। চেষ্টা করি গতানুগতিক এর বাইরেই কিছু করার। আর আমার ক্যারিয়ার তো মাত্র চার বছরের, তাই জাজমেন্টের বিষয়টা আসলে তেমন বলতে পারব না। এবার যে কাজগুলা করেছি খুব বেছে বেছে করেছি। সিমিলার কোন চরিত্রে কাজ করিনি। ভালো মন্দ যেটাই করেছি চেষ্টা করেছি একইরকম চরিত্রে দুইটা কাজ না করতে। কাজের ক্ষেত্রে ভ্যারিয়েশন রেখেছি। যারা দেখেছেন তারা ভালো বলতে পারবেন।

ইউটিউব কিংবা টেলিভিশনে প্রায়ই অশ্লীল সংলাপ বা দৃশ্য দেখা যায়। এই বিষয়টা নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, অশ্লীলতাটা আসলে কিভাবে পরিমাপ করে সেটা আমার জানা নেই। একেকজনের পয়েন্ট অব ভিউ একেকরকম। তবে অশ্লীলতা বলতে আমরা ডার্ক সাইটটাকে বুঝি। মানুষ তখনই রাগ করে যখন সেটা রিয়েল লাইফে হয় অর্থাৎ 'ডার্ক স্টোরিজ অব আওয়ার লাইফ'। আমরা কখনই চাই আমাদের কারও ডার্ক স্টোরী অনস্ক্রীণে চলে আসুক। আর টিভি চ্যানেলে নাটক প্রচারের আগে সেটা প্রিভিউ করে তার মানে টেলিভিশনে এটা বলা চলে না। ইউটিউবে হয়তো আছে ওয়েব সিরিজ বা ওয়েব ফিল্মে। ইটজ পার্ট অব আওয়ার লাইফ। নাটকের গল্প তো আর আকাশ থেকে আসবে না বা সমুদ্র থেকেও আসবে না। সবকিছুই জীবনের অংশ।

অনেক সংকটের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে নাটক। কিন্তু আমার মনে হয়না যে নাটক অতল গহবরে হারিয়ে যাচ্ছে। তবে এটা ঠিক এখন আগের মত বিগ বাজেটে কাজ হচ্ছে না তেমন। আগের মত অনেকদিন ধরে শুটিং করা, আলিশসন ব্যাপারটা এখন নেই যদিও আমি সেসময়টাতে ইন্ডাস্ট্রিতে আসিনি। তবে আমি মনে করি ইন্ডাস্ট্রিতে যত সংগঠন আছে সবাই একত্রিত হয়ে এবং সিনিয়র,জুনিয়র সব শিল্পীরা মিলে সম্মান,সৌহার্দ্যতা ও ভালোবাসা দিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করি তাহলে হয়তো আমাদের ইন্ডাস্ট্রি আরও অনেক বড় হবে। আর থার্ড ওয়ার্ল্ড কান্ট্রি হিসেবে অনেক ডিজিটালাইজড ইকুইপমেন্ট এখনও আসেনি আমাদের দেশে। তারপরও টেকনিক্যাল ক্রু থেকে শুরু করে সকলেই অনেক কষ্ট করেই কাজটা করে যাচ্ছে ভালোবাসা থেকেই। কাজের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসাটা না থাকলে কোন শিল্পী রাস্তায় কড়া রোদে দাড়িয়ে শট দিত না। মোট কথা হচ্ছে সবাই মিলে চেষ্টা করলে সবকিছুই করা সম্ভব, নাটককে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়াও। যোগ করেন শামীম

অনলাইন প্লাটফর্মের এ যুগে এখন সবাই ইউটিউবমুখী। যার কারণে সবাই এখন টেলিভিশন থেকে মুখ ফিরিয়ে এই মাধ্যমটাকেই সহজে বেছে নেয়। এতে করে কি টেলিভিশনের জনপ্রিয়তা কমছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে শামীম বলেন, ঢাকা শহরের ভিউ এবং কমেন্ট সারা বাংলাদেশের বিচার করে না। পুরো দেশের অনেকেই এখন ফেসবুক কিংবা ইউটিউব ব্যবহার করে না। তারা কিন্তু টিভিই দেখে। ইউটিউবের মাধ্যমে ঢাকায় পরিচিতি পাওয়া সম্ভব কিন্তু সারাদেশে না। আমি যদি আমার কথা বলি যেমন আমার 'ম্যাঙ্গো স্কোয়াড'র কারণে আমি ঢাকাবাসীর কাছে বেশ পরিচিত কিন্তু ঢাকার বাইরের মানুষদের কাছে আমি টিভির জন্য পরিচিত কারণ তারা টিভিতে নাটক দেখে। আমি যখন ঢাকার বাইরে কোথাও যাই তখন সেটা দেখি। মানুষজন বলে আমার কোন কাজটা,কোন চরিত্রটা,কোন ডায়লগটা দর্শকদের মনে রয়েছে। সেটা বলতে পারে কারণ তারা টিভিতে নাটক দেখে, সেখানে ইউটিউব এতটাও এভেলএবল না। তাই আমার কাছে মনে হয় সারাদেশের মানুষ নয়, ঢাকাবাসী মানুষরা ইউটিউবমুখী।

এটা ২০১৯ সাল, ডিজিটাল যুগ। ইউটিউব, নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন সব কিছুই এখন হাতের মুঠোয় ডিজিটালাইজডের কারণে। এমন না যে সব কন্টেন্ট এখন টিভি থেকে অনলাইন প্লাটফর্মে চলে আসতেছে শুধু বাংলাদেশে, এটা পুরো বিশ্বজুড়েই চলে এসেছে। সো, আমি মনে করি কন্টেন্টটাই আসল। সেটা ইউটিউবে আসলো নাকি টেলিভিশনে, সেটা বিচার করার কিছুই নেই। কন্টেন্টটাই কথা বলবে। আর এখন টিভির চেয়ে ইউটিউবে কোন কন্টেন্ট রিচ করার ক্ষমতা অনেক বেশি। তাই গল্প যদি নায়ক হয়, তাহলে সেটা মানুষের কাছে পৌছাবেই। সেটা টিভিতে গেল নাকি ইউটিউবে সেটা বিষয় না। জীবন সবমুখী, যে যেভাবে রুল করতে পারে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত