ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২২ মিনিট আগে
শিরোনাম

সিনেমার প্রস্তাব পেলে দেশে আসবো: লাক্সতারকা রাখি

  ইমরুল নূর

প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৮:১৩  
আপডেট :
 ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৮:২১

সিনেমার প্রস্তাব পেলে দেশে আসবো: লাক্সতারকা রাখি

একটা সময় জাঁদরেল অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয় দেখতে টিভি পর্দার সামনে মন্ত্রমুগ্ধের মতো বসে থাকত দর্শক। নাটক ও শিল্পীদের অভিনয়ও ছিল মানসম্মত। পরবর্তীতে অনেক শিল্পীই এসেছেন, পেয়েছেন তারকাখ্যাতি। যাদের বেশিরভাগই এখন অভিনয় থেকে দূরে; কেউ হয়তো বা এখনও অভিনয় করছেন।

মেধাবী অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বিদায়ে তাদের শূন্যতা পূরণ করতে ঝাঁকের কইয়ের মতো নাম লেখাচ্ছেন অনেক নতুন অভিনয়শিল্পী। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দর্শক টানতে পারলেও অনেকেই ব্যর্থ হচ্ছেন। স্থায়ীভাবে আসন করে নিতে পারছেন না দর্শক মনে।

হারিয়ে যাওয়া তারকাদের মধ্যে বিন্দু, শীলা আহমেদ, শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি, টনি ডায়েস, প্রিয়াংকা অগ্নিলা ইকবাল, পল্লব চক্রবর্তী, ইপসিতা শবনম শ্রাবন্তী, শান্তা ইসলাম, লুৎফুন নাহার লতা,আলভি, সুরাইয়া হুদা রাত্রী,হোসনে আরা পুতুল, কুমকুম হাসান, শামস সুমন, লাক্সতারকা হাসিন রওশন জাহান, মাহবুবা ইসলাম রাখি অনেকেই রয়েছেন। এদের অনেকেই অভিনয় ছেড়ে দিয়েছেন, কেউ কেউ বিদেশ পাড়ি জমিয়েছেন।

এর মধ্যে লাক্সতারকা মাহবুবা ইসলাম রাখি ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান উচ্চ শিক্ষার জন্য। সেখানে পার্থের এডিথ কাওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইসিইউ) ব্যাচেলর অব টেকনোলজি (ইলেকট্রনিক অ্যান্ড কম্পিউটার সিস্টেম) বিভাগে গ্র্যাজুয়েশন কোর্স সম্পন্ন করে ২০১৭ সালেই চাকরীতে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অন্তুর্ভুক্ত স্ট্রাকচুয়াল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে সেখানকার 'উড গ্রুপ অব কোম্পানি'তে কর্মরত আছেন।

২০১৩ সালে বাংলাদেশী শোবিজ ছেড়ে দিলেও অস্ট্রেলিয়াতে গিয়ে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন অভিনয়ের সঙ্গে। অভিনয়ের উপর কোর্স করতে অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত 'ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ান একাডেমি অব পারফর্মিং আর্ট'তে ভর্তি হন এবং গেল মাসের শেষের দিকে কোর্স শেষ করে ডিগ্রী নেন এই লাক্সতারকা। শুধু তাই নয়, চাকুরীর পাশাপাশি নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন অভিনয়েও। সেখানকার বেশ কিছু স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন তিনি যেগুলো সেখানকার বড় বড় হলে প্রদর্শিত হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া থেকে মুঠোফোনে রাখি জানান, আমি যেই প্রতিষ্ঠান থেকে কোর্স নিয়েছি সেখান থেকে বের হওয়ার পর তাদের বেশ কিছু প্রজেক্টে কাজ করেছি। এছাড়াও আমার ভাইও শোবিজের সঙ্গে জড়িত, তাঁর পরিচালনাতেও কিছু কাজ করেছি।

দেশ ছেড়েছেন ছয় বছর হলো। দেশে ফেরার সম্ভাবনাও নেই বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, দেশে আমার কেউ নেই এখন। আমার পরিবারের সবাই অস্ট্রেলিয়াতেই। এছাড়াও যখন চলে এসেছিলাম সেসময় অনেকেই কাজের জন্য বলতেন, আমার পরীক্ষা থাকায় যেতে পারিনি। আর এখন যেহেতু অনেক বছর হয়ে গিয়েছে তাই ওরকম করে কেউ বলেও না বা কাজে ডাকেও না।

বাংলাদেশের নাটক বা সিনেমা আমার দেখা-ই হয় না তেমন। এমন না যে আমি দেশের বাইরে চলে এসেছি তাই, আমি যখন দেশে ছিলাম তখনও দেখতাম না। আমার অভিনীত নাটকগুলো হয়তো মাঝেমধ্যে দেখা হতো তাও কম। আর কমার্শিয়াল সিনেমা তো আরও আগেই না।

তবে যদি কোন ভালো কাজের প্রস্তাব পাই তাহলে আমি অবশ্যই দেশে আসবো। দুয়েকটা নাটকের জন্য হয়তো আসবো না। আমার অভিনয়ের প্রতি ভীষণ দুর্বলতা রয়েছে। অভিনয়টা চালিয়ে যাব। আর্ট ফিল্মের প্রতি একটা অন্যরকম ভালো লাগা আছে আমার। যদি সেরকম চলচ্চিত্রের প্রস্তাব পাই তাহলে করবো।

২০১০ সালে লাক্স সুপারস্টারের তকমা জুড়ে আপনার নামের আগে। এরপর টানা কাজ করেছেন নাটক, বিজ্ঞাপনে! হয়েছেন প্রশংসিতও। কিন্তু লাক্স সুন্দরী প্রতিযোগীতা থেকে বের হওয়ার পর বিজয়ী যারা হন তাদেরকে নিয়ে চ্যানেল আই সিনেমার প্রস্তাব করে থাকেন, যেটা সবসময়ই হয়ে থাকে। কিন্তু আপনাকে কোন চলচ্চিত্রে দেখা যায় নি কেন?

রাখি বলেন, হ্যাঁ, এমন কথা আমাকেও বলা হয়েছিল। কিন্তু সেসময় আমাকে নিয়ে সিনেমা করার বিষয়ে তাদের মধ্যে কোন আগ্রহ দেখি নি আমি। আমার আগে যারা ছিল সেদিক থেকে যদি বলি জাকিয়া বারী মম তারা বের হওয়ার পর সিনেমার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু আমি পাইনি। এমন না যে আমার সিনেমা করার ইচ্ছে ছিল না, ইচ্ছে ঠিকই ছিল কিন্তু তারা হয়তো বলার জন্য বলেছিল। এমনকি আমার এক্টিং স্কিল নিয়েও তারা সচেতন ছিল না। আমি লাক্স তারকা হয়ে বের হওয়ার দেড় বছর পর আমাকে বলা হলো ভারতে অভিনয়ের উপর কোর্স করতে! তখন আমি জানালাম দেড় বছর পর কেন আমাকে নিয়ে এই ভাবনা? আমি আর সেটা করিনি তখন। ওসব নিয়ে ভাবিওনি। সেসময় চ্যানেল আই থেকে পুরস্কার হিসেবে শুধু গাড়িটাই পেয়েছিলাম, আর কিছুই পাইনি। পরে সেসব নিয়ে আর কিছু বলি নি আমি।

এখন অস্ট্রেলিয়াতে বেশ ভালো আছি। পরিবারের সঙ্গে আছি, চাকুরী করছি। সবকিছু মিলিয়ে বেশ ভালোভাবেই দিন কেটে যাচ্ছে। দেশে অনেকের সঙ্গেই আমার যোগাযোগ হয় না। আমার কাছের কয়েক জনের সঙ্গে হয়তো মাঝে মাঝে যোগাযোগ হয়। এছাড়া তেমন কারও সাথে হয় না।

২০১০ সালে ‘লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার’ প্রতিযোগীতার চ্যাম্পিয়ন হয়ে শোবিজে আসেন রাখি। বিপাশা হায়াতের রচনা এবং তৌকির আহমেদ পরিচালিত 'বিস্ময়' নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ছোট পর্দায় অভিষেক ঘটে তার। এরপর বিজ্ঞাপনে কাজ করে তুমুল আলোচনায় আসেন। এর মধ্যে সিলন গোল্ড টি,স্কয়ার কোম্পানির চ্যাপস্টিক, প্রাণ ক্র্যাকো, মেরিল রিভাইভ ট্যালকম পাউডার, মেরিল রিপজেল, গ্লোব ক্রেকার্স] ইত্যাদি বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করে প্রশংসিত হন। এর পাশাপাশি কাজ করেছেন মিউজিক ভিডিওতেও। শুধু তাই নয়, ২০১৩ সালে স চ্যানেল আই আয়োজিত রিয়ালিটি শো 'হ্যান্ডসাম দি আলটিমেট ম্যান' অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করে বেশ আলোচিত হন তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/ আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত