করোনা আক্রান্তে এগিয়ে তরুণ-যুবকরা

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হন গত ৮ মার্চ। শনাক্তের পর থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা। এদের আক্রান্তের হার ২৮ শতাংশ। এরপরই আক্রান্তের দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছেন ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীরা। তাদের আক্রান্তের হার ২৭ শতাংশ। তরুণ-যুবকরা বেশি আক্রান্ত হলেও মৃত্যুর হারে এগিয়ে ৬০ বছরের বেশি বয়সী বৃদ্ধরা।

শুক্রবার দুপুরে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান। করোনা সংক্রমণের পর থেকে বৃহস্পতিবার (৪ জুন) পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি।

করোনা শনাক্ত আরও ১৬ জনের

নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘লিঙ্গভেদে শনাক্তের হার পুরুষ ৭১ শতাংশ এবং নারী ২৯ শতাংশ। বয়স বিবেচনায় ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৭ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১১ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৭ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৭ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের ২৮ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের ৭ শতাংশ এবং ১ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ৩ শতাংশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।’

করোনায় মৃতদের বয়সের হার তুলে ধরে নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘১ থেকে ১০ বছর বয়সীদের মৃতের হার দশমিক ৮২ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বয়সীদের ২৯ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং ৬১ বছরের বেশি বয়সীদের মৃত্যুর হার ৩৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ।’

এসময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে তিনি জানান, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ৮১১ জনের। নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮২৮ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার ৩৯১ জনে।

তিনি আরও জানান, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৬৪৩ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছে ১২ হাজার ৮০৪ জন।

প্রসঙ্গত, চীনের উহান থেকে বিস্তার শুরু করে গত চার মাসে বিশ্বের ২১২টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে করোনার প্রভাব কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে মহামারি রূপ নিয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৬৮ লাখ ছুঁই ছুঁই। মারা গেছেন তিন লাখ ৯৩ হাজারেরও বেশি মানুষ। তবে ৩২ লাখ ৬৩ হাজারেরও বেশি রোগী ইতিমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেআই