ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

পুতিনের লালসার কাছে পরাস্ত সরকার, প্রধানমন্ত্রীসহ সকলের পদত্যাগ

পুতিন-মেদভেদ দ্বন্ধে মন্ত্রিসভার পদত্যাগ, নতুন প্রধানমন্ত্রী মিশুস্তিন
পদত্যাগের ঘোষণার আগে পুতিনের সঙ্গে মেদভেদের বৈঠক

প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সংবিধান সংশোধন নিয়ে মতবিরোধের জের ধরে রাশিয়ায় প্রধানমন্ত্রীসহ গোটা মন্ত্রিসভার সকল সদস্য পদত্যাগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদের পদত্যাগের পর দেশটির কর পরিষেবা প্রধান মিখাইল মিশুস্তিনকে (৫৩) প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানায়,পুতিনের প্রেসিডেন্ট পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২০২৪ সালে। তিনি একাধারে দীর্ঘ চার মেয়াদ ধরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু ২০২৪ সালের পর সংবিধান অনুযায়ী আর প্রেসিডেন্ট পদে বহাল থাকতে পারছেন না পুতিন। কিন্তু প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও রাশিয়ার লাগাম নিজের হাতে ধরে রাখতে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব দেন এই রুশ নেতা। কিন্তু এতে রাজি ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী।

এ নিয়ে বুধবার আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন পুতিন। এরপরই অকস্মাৎ পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী মেদভেদ ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা। তার ঘোষণার আগেও এ সম্পর্কে কিছু আঁচ করা যায়নি। রাশিয়ার এক সরকারি সূত্র বিবিসিকে জানায়, ‘এটা ছিলো সম্পর্ণ বিস্ময়কর ঘটনা।’ যদিও পদত্যাগের সময় প্রধানমন্ত্রী মেদভেদ বলেন, দেশের সংবিধান সংশোধনের সুবিধার্থেই তার সরকার পদত্যাগ করলো।

এসময় পুতিনের প্রস্তাব নিয়ে মেদভেদেভ বলেন, সংবিধানে যে পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে, এই পরিবর্তন শুধু সংবিধানের অনুচ্ছেদেই পরিবর্তন আনবে না। পাশাপাশি ক্ষমতার ভারসাম্যেও পরিবর্তন আনবে। এ পরিবর্তনের অংশ হিসেবেই এ সরকার পদত্যাগ করছে।

প্রেসিডেন্ট পুতিন মেদভেদেভকে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের ডেপুটি প্রধানের দায়িত্ব নিতে বলেছেন। পুতিন বুধবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে সংবিধান সংশোধনসহ আরও অনেক বিষয় তুলে ধরেন। পর্যবেক্ষকদের মতে, পুতিন তার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতেই সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছেন।

এদিকে মেদভেদেভের পদত্যাগের পরই নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মিখাইল মিশুস্টিনকে মনোনীত করেন পুতিন। যদিও তার সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায়নি। তিনি ২০১০ সাল থেকে রাশিয়ার ফেডারেল কর বিভাগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আর একজন উচ্চাকাঙ্খী রাজনীতিবিদ হিসাবে তিনি রাশিয়ায় তেমন একটা পরিচিত নন। তারপরও তাকেই এতবড় দায়িত্বের জন্য বেছে নিয়েছেন পুতিন। এবার রুশ পার্লামেন্ট অনুমোদন দিলেই দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন মিখাইল মিশুস্টিন।

রাশিয়ার সর্বশেষ সংবিধান সংশোধন পুতিনের পূর্বসূরি প্রেসিডেন্ট বোরিস ইয়েলৎসিনের সময়। এর প্রেক্ষিতে সেখানে ১৯৯৩ সালে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিলো।

১৯৯৯ সালে ইয়েলৎসিনের পদত্যাগের পরে রাশিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসাবে প্রথমবারের মতো ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ করেন পুতিন। এর এক বছর পরে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এরপর থেকে গত ২০ বছর ধরে রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে রাশিয়ার ক্ষমতার লাগাম ধরে রেখেছেন পুতিন। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষমতার লাগাম আর কারো কাছে তুলে দিতে ইচ্ছুক নন দেশটির প্রবল প্রতাপশালী এই নেতাG

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত