করোনা ঠেকাতে বিশেষ অ্যাপ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৬:৪৩
সম্প্রতি মহামারি আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস। বুধবার একদিনেই ২৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এই ভাইরাসে। এর মধ্যে কেবল হুবেই প্রদেশে ২৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাত পর্যন্ত করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার তিন শ ৫৭ জনে।
এমতাবস্থায় করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ‘ক্লোজ কন্ট্যাক্ট ডিটেক্টর’ নামে বিশেষ একটি অ্যাপ চালু করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অ্যাপটি করোনাভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এই অ্যাপ ব্যবহারকারী যদি কোনো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে যান, তখন অ্যাপটি মোবাইল ফোনে সতর্ক বার্তা দেখাবে। তবে অ্যাপটি করোনাভাইরাস কীভাবে শনাক্ত করবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।
সূত্র মতে, অ্যাপটি সরাসরি ফোনের সঙ্গে নিবন্ধিত হবে। এর জন্য ব্যবহারকারীর নিজ নাম ও আইডি নম্বর দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
চীনের নানাবিধ সরকারি বিভাগের সহযোগিতায় ‘জেনারেল অফিস অব দ্য স্টেট কাউন্সিল’, ‘ন্যাশনাল হেলথ কমিশন’ ও ‘চীনা ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি গ্রুপ কর্পোরেশনস’ অ্যাপটি তৈরি করেছে। অ্যাপটি গণপরিবহনে, কর্মক্ষেত্রে বা একই বাড়িতে অনেকে থাকেন এমন পরিবেশে সকলকে সহযোগিতা করতে পারবে। এছাড়া এর মাধ্যমে জনগণের চলাচলের ওপর চীনা কর্তৃপক্ষ আরও বেশি নজরদারি করতে পারবে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার হুবেই প্রদেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, এখন পর্যন্ত সেখানে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩১০ জনে। চীনের মূল ভূখণ্ডে মোট মৃত্যুর সংখ্যা অন্তত ১৩৫৫ জন। হংকং ও ফিলিপাইনে দু’জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
জানা গেছে, বুধবার চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১৪ হাজার আট শ ৪০ জন। বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত।
কেবল হুবেই প্রদেশে হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৩৩ হাজার ৬৯৩ জন রোগী। তাদের মধ্যে ১৩৩৭ জনের অবস্থা গুরুতর। এরই মধ্যে ৩ হাজার ৪৪১ জন হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
এদিকে করোনাভাইরাসের দাপ্তরিক নাম কোভিড-১৯ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। করোনা, ভাইরাস, ডিসিস এবং ২০১৯ সাল থেকে অক্ষর ও সংখ্যা যোগ করে কোভিড-১৯ নামকরণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, যারা হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তাদের আসলে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে, কাশি, সর্দি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ার লক্ষণগুলো দেখে সেসবের চিকিৎসা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এ রোগের কোনো ধরনের টিকা বা ওষুধ আবিষ্কার হয়নি।
চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, বড় ধরনের যুদ্ধ চলছে। ভাইরাস যুদ্ধ মোকাবিলা করছে চীন।
কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সে দেশের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস নিয়ে অনেকটাই ইতিবাচক ফল আসছে। তবে এখনই স্বস্তির কিছু নেই। আরো অন্তত এক মাস এটি ভোগান্তির কারণ হবে। সবাইকে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে