ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

করাচিতে রহস্যময় বিষাক্ত গ্যাস, ১৮ জনের মৃত্যু

করাচিতে রহস্যময় বিষাক্ত গ্যাস, ১৮ জনের মৃত্যু

পাকিস্তানের বন্দর নগরী করাচির এক আবাসিক এলাকায় রহস্যময় বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় মঙ্গলবার পর্যন্ত কমপক্ষে ১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আরও শত শত মানুষ। এই হতাহতের ঘটনায় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের গাফিলতিকে দুষছেন স্থানীয় জনগণ।

মঙ্গলবার করাচির পুলিশের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডন।

ডন জানায়, করাচির কেয়ামারি এলাকায় বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাটি প্রথম সামনে আসে গত রোববার। এসময় ওই আবাসিক এলাকাটিতে বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সোমবার এবং মঙ্গলবার সকালেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। এসময় নারী ও শিশুসহ বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের শহরের সরকারি ও বেসকারি বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মঙ্গলবার তৃতীয় দফা বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে কেয়ামারির বাসিন্দারা। তারা রাস্তায় নেমে এসে স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে এবং এলাকার সড়কগুলো বন্ধ করে দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় ১৮ জন মারা গেছেন বলে জানান পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সৈয়দ মুরাদ আলী শাহ।

তার সেক্রেটারি এক বিবৃতিতে জানান,বিষাক্ত গ্যাসের ছোবেল মৃতের সংখ্যা ১৬ থেকে বেড়ে ১৮ হয়েছে। এ ঘটনায় অসুস্থ হয়েছেন আরও ২৫৮ জন। এদের মধ্যে ২৩২ জনকে চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বাকিরা এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

তবে ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, রোববার প্রথমবারের মতো ওই বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার পরও এটি রোধ করতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। প্রশাসনের গাফিলতির কারণেই গত ৩ দিনে এতগুলো মানুষ মারা গেলো।

করাচির ওই আবাসিক এলাকায় কোন ধরনের গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছিল সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি সিন্ধু সরকার। তবে করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্যামিকেল এন্ড বায়োলজি সাইন্স বিভাগের অনুমান, এই ঘটনার পিছনে রয়েছে ‘সয়াবিন ডাস্ট’(অ্যারোয়ালেরজিন্স)।

এই রিপোর্ট সামনে আসার পর করাচি বন্দর থেকে সয়াবিন বহনকারী একটি জাহাজকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়া কেয়ামারি এলাকার তেল টার্মিনালটিও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে সয়াবিন ব্যবসায়ীরা সয়াবিন ডাস্ট থেকে বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার রিপোর্টটি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

এর আগে সিন্ধুর পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় একটি বেসরকারি পরীক্ষাগারে গবেষণায় দেখা যায়, বাতাসে উচ্চ স্তরের বিষাক্ত হাইড্রোজেন সালফাইড এবং নাইট্রিক অক্সাইড ছড়িয়ে পড়ার পরই সেখানকার বাসিন্দারা অসুস্থ হয়ে পড়েন।

তবে যাই হউক, এখনও করাচির রহস্যময় গ্যাসের বিষেয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি সিন্ধু সরকার। গ্যাসটি সনাক্ত করতে এখনও তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত