ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

ভারতে সিন্ধিয়াসহ ২১ বিধায়কের পদত্যাগ, পতনের মুখে মধ্যপ্রদেশ সরকার

  কলকাতা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২০, ১৫:৪৬  
আপডেট :
 ১০ মার্চ ২০২০, ১৮:০২

২১ বিধায়কের পদত্যাগ: সঙ্কটে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সরকার

ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের পতন এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। কেননা রাজ্য কংগ্রেসের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং সরকারের আরও ২০ বিধায়ক সদস্য পদত্যাগ করেছেন। এদের মধ্যে ছয়জন মন্ত্রীও রয়েছেন।

মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পরেই কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দেন সাবেক ইউনিয়নমন্ত্রী ও রাজীব গান্ধীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সিন্ধিয়া। তিনি তার ইস্তফাপত্রে লিখেছেন, গত ১৮ বছর ধরে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের একনিষ্ঠ কর্মী হিসাবে কাজ করেছেন। কিন্ত এখন সময় এসেছে কংগ্রেস ছাড়ার। গত এক বছর ধরে কংগ্রেসের অন্দরে যে টালমাটাল অবস্থা চলছে সেই টালমাটাল অবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই দলের ভিতরে থেকে রাজ্য এবং দেশের মানুষের জন্য কিছু করা সম্ভব নয়। তাই নতুনভাবে তিনি শুরু করতে চান।

অন্যদিকে, মধ্যপ্রদেশের ২০ জন কংগ্রেস বিধায়কও ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপালের কাছে। তাদের মধ্যে ৬ জন মন্ত্রী রয়েছেন। ফলে কমল নাথ সরকারের পতন অনিবার্য। কার্যত কর্নাটকের কায়দায় মধ্যপ্রদেশের ক্ষমতায় আসতে চলেছে বিজেপি। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

গত কয়েক দিন ধরেই রাজনৈতিক ডামাডোল চলছিল মধ্যপ্রদেশে। তার মধ্যেই সোমবার ১৭ জন কংগ্রেস বিধায়কের ‘উধাও’ হয়ে যাওয়ায় নাটকীয় মোড় নেয় রাজ্যের রাজনীতি। যে ১৭ জন বিধায়ক ‘উধাও’হয়ে গিয়েছিলেন তারা সকলেই জ্যোতিরাদিত্যের ঘনিষ্ঠ। তারা সমর্থন তুলে নিলে সরকারের পতন যে অনিবার্য তা স্পষ্ট বুঝেছিল কংগ্রেস। তাই সিন্ধিয়া ও তার ঘনিষ্ঠ বিধায়কদের দলে ফিরিয়ে আনার সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যান কমল নাথ। সূত্রের খবর, আলোচনার জন্য সব দিক খোলা রাখা হয়েছে, এমনও নাকি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল জ্যোতিরাদিত্যকে। কিন্তু সেই প্রস্তাব কোনও কাজে দেয়নি তা স্পষ্ট।

২৩০ বিধানসভা আসনের মধ্যে ১২০ জন বিধায়ক নিয়ে মধ্যপ্রদেশে সরকার গড়েছিল কংগ্রেস। যা প্রয়োজনীয় সংখ্যার থেকে মাত্র ৪ বেশি। অন্য দিকে বিজেপির রয়েছে ১০৭ জন বিধায়ক। এমন জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ২০ জন বিক্ষুব্ধ বিধায়ক যদি সমর্থন তুলে নেন, তা হলে কমল নাথের পক্ষে সরকার টিকিয়ে রাখা অসম্ভব।

এদিকে পদত্যাগের পর বরাবরের রাহুল গান্ধী ঘনিষ্ঠ সিন্ধিয়া পরিবারের যুবরাজ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া তার ট্যুইটার অ্যাকাউন্টে কংগ্রেসের পরিচয় সরিয়ে শুধুমাত্র নিজেকে জনগনের সেবক এবং ক্রিকেট ভক্ত হিসাবে তুলে ধরেন।

সুত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন জ্যোতিরাদিত্য। সুত্র মারফত জানা গিয়েছে, তার সঙ্গেই বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন জ্যোতিরাদিত্যর ঘনিষ্ঠ মধ্যপ্রদেশ সরকারের ২০ জন কংগ্রেস মন্ত্রী ও বিধায়ক। সোমবার গভীর রাতে রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠকের পরেই পদত্যাগ করেন তারা। পরে ওই বিধায়কদের দুটি চার্টার্ড বিমানে করে বিজেপি শাসিত কর্নাটকের বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার সকালেই দলবিরোধী কাজের জন্য জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে কংগ্রেস থেকে বহিস্কার করা হয়। এই বহিস্কারের সিদ্ধান্তে সম্মতি দেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল এই বহিস্কারের খবর জানান।

এদিকে মধ্যপ্রদেশ সরকারের অবস্থা যাতে কর্নাটকের মতো না হয় তারজন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন কমলনাথ সরকার বাঁচানোর লক্ষ্যে মঙ্গলবার সকালে দিল্লির ১০ জনপথ রোডে সোনিয়া গান্ধীর বাড়িতে বেণুগোপালের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন সোনিয়া গান্ধী।

পাশাপাশি, মধ্যপ্রদেশের ভোপালে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং, জিতু পাটোয়ারি, বালা বচ্চন, সজ্জন সিং বর্মা, সুরেন্দ্র সিং বাঘেলা সহ শীর্ষ কংগ্রেস নেতারা। তাঁরা জানান, বিজেপি চক্রান্ত করে তাঁদের সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্ত কমলনাথের সরকারের কোনো বিপদ নেই বলে দলীয় স্তরে আলোচনা শেষে মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

মএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত