ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

বঙ্গবন্ধু উনিশ শতকের ‘অন্যতম মহান ব্যক্তিত্ব’

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২০, ২২:৪৫

বঙ্গবন্ধু উনিশ শতকের ‘অন্যতম মহান ব্যক্তিত্ব’

বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উনিশ শতকের ‘অন্যতম মহান ব্যক্তিত্ব’ হিসেবে বর্ণনা করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন সকলের জন্যই ‘প্রেরণার উৎস’। বঙ্গবন্ধু মানে একজন সাহসী নেতা, একজন দৃঢ়চেতা মানুষ, একজন ঋষিতুল্য শান্তিদূত, একজন ন্যায়, সাম্য ও মর্যাদার রক্ষাকর্তা, একজন পাশবিকতাবিরোধী এবং যে কোনো জোরজুলুমের বিরুদ্ধে একজন ঢাল।

জাতির পিতার জন্মশতর্বার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী আয়োজন মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিওর মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, আজ আমার খুব ভালো লাগে, যখন দেখি যে বাংলাদেশের মানুষ তাদের প্রিয় দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলায়’ রূপান্তরিত করার জন্য দিন-রাত কাজ করে চলেছেন।

তার এই গুণাবলীই সে সময় লক্ষ লক্ষ তরুণকে বাংলাদেশের মুক্তির জন্য সমস্ত প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে নতুন শক্তি দিয়েছিল বলে মন্তব্য করেন মোদি।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী সাড়ম্বরে উদযাপনের প্রস্তুতি থাকলেও নভেল করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারী রূপ নেওয়ায় আয়োজনের পরিসর সীমিত করে আনা হয়।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টেলিভিশনে ভাষণ ও অনুষ্ঠানমালায় মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় মুজিবর্ষের বছরব্যাপী আয়োজনের।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নমগেয়েল ওয়াংচুক, নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি, জাতিসংঘের মহাসচিব এন্টিনিও গুতেরাস এবং ওআইসির মহাসচিব ড. ইউসুফ আল ওথাইমিনের ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয় অনুষ্ঠানে।

বক্তব্যের শুরুতেই সবাইকে নমস্কার জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সমগ্র বাংলাদেশকে আপনাদের ১৩০ কোটি ভারতীয় ভাই-বন্ধুদের পক্ষ থেকে অনেক অনেক অভিনন্দন ও শুভ কামনা।

মোদির ভাষায়, বঙ্গবন্ধুর জীবন একবিংশ শতাব্দীর বিশ্বের জন্য ‘এক মহান বার্তা’। নিপীড়ক যখন ‘বাংলা ভূমির’ উপর অবিচারের রাজত্ব চালিয়ে জনগণের সর্বনাশ করেছিল, সেই অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে বের করে এনে একটি ইতিবাচক ও প্রগতিশীল সমাজে পরিণত করতে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উৎসর্গ করেছিলেন তিনি।

‌‘তিনি বিশ্বাস করতেন যে, ঘৃণা এবং নেতিবাচকতা কখনই কোনও দেশের উন্নয়নের ভিত্তি হতে পারে না। কিন্তু তার এই ধারণা এবং প্রচেষ্টা কিছু লোক পছন্দ করেনি এবং আমাদের কাছ থেকে বঙ্গবন্ধুকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।’

‘বাংলাদেশ এবং আমরা সকলেই ভাগ্যবান যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা ঈশ্বরের আশীর্বাদে রক্ষা পেয়েছিলেন। নয়তো সহিংসতা এবং ঘৃণার সমর্থকরা চেষ্টার কোনো কমতি রাখেনি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ যেভাবে অন্তর্ভুক্তিকরণ এবং উন্নয়নমুখী নীতিমালা অনুসরণ করে এগিয়ে চলছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। অর্থনীতি থেকে শুরু করে অন্যান্য সামাজিক সূচক, যেমন ক্রীড়াক্ষেত্র কিংবা দক্ষতা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী ক্ষমতায়ন, মাইক্রো ফিনান্সের মতো অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে।’

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, লালন শাহ, জীবনানন্দ দাশ এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মত মনীষীরা যে দুই দেশের ‘যৌথ ঐতিহ্য’, সে কথা মনে করিয়ে দেন মোদি।

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার ও অনুপ্রেরণা আমাদের এই ঐতিহ্যকে আরো বিস্তৃত করেছে। তার আদর্শ ও মূল্যবোধের সাথে ভারত সর্বদা সংযুক্ত ছিল। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার গভীর সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে এই অভিন্ন ঐতিহ্যের ভিত্তিতে। আমাদের এই ঐতিহ্য, আত্মিক বন্ধন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ, এই দশকেও দুই দেশের অংশীদারিত্ব, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধির এক শক্তিশালী ভিত্তি।

আগামী বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হবে এবং তার পরের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী। এ দুটি মাইলফলক কেবল ভারত ও বাংলাদেশের উন্নয়নকেই নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে না, দুদেশের বন্ধনকেও জোরদার করবে বলে আশা প্রকাশ করেন নরেন্দ্র মোদি।

মোদি তার বক্তৃতা শেষ করেন ‘জয় বাংলা, জয় হিন্দ’ বলে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত