ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

করোনাভাইরাস ঠেকাতে লকডাউনই যথেষ্ট নয়: ডব্লিউএইচও

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২০, ২২:৩৫

করোনাভাইরাস ঠেকাতে লকডাউনই যথেষ্ট নয়: ডব্লিউএইচও
প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে শুধুমাত্র লকডাউনই যথেষ্ট নয় বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির আপৎকালীন বিশেষজ্ঞ মাইক রায়ান রোববার এ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, লকডাউন করে ভাইরাস সংক্রমণে আপাতত রাশ টানা গেলেও ভবিষ্যতে তা আবার ফিরে আসতে পারে। ফলে তা ঠেকাতে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।

বিবিসির এন্ড্রু মার শো’ তে এক সাক্ষাৎকারে রায়ান বলেন, ‘এখন আমাদের আসলেই যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া দরকার তা হচ্ছে, শারীরিকভাবে দুর্বলদেরকে খুঁজে বের করা, করোনাভাইরাস আক্রান্ত যারা তাদেরকে চিহ্নিত করা এবং তাদেরকে আলাদা করে রাখার ব্যবস্থা করা। একইসঙ্গে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদেরকেও আইসোলেট করতে হবে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্যের জন্য কোনও বলিষ্ঠ পদক্ষেপ না নিয়ে শুধুমাত্র সবকিছু লকডাউন করে দেওয়ার এই চিন্তা-ভাবনা এ মুহূর্তে বিপজ্জনক। কারণ, মানুষের চলাফেরায় আরোপ করা সব বাধানিষেধ যখন উঠে যাবে এবং লকডাউন তুলে নেয়া হবে তখন ফের রোগটি দেখা দেওয়ার প্রবল ঝুঁকি রয়েছে।

আরো পড়ুন: করোনাভাইরাস: ফোন নিরাপদ করার উপায়

আরো পড়ুন: নিউমার্কেটসহ ডিএসসিসির সব মার্কেট বন্ধ

আরো পড়ুন: করোনাভাইরাস: বিভ্রান্তিকর তথ্য যেভাবে ছড়ায়

আরো পড়ুন: করোনাভাইরাস: মহাসংকটে পোশাক খাত

করোনাভাইরাসকে পরাস্ত করতে চীন, সিঙ্গাপুর এবং দক্ষিণ কোরিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন মাইক রায়ান।

তিনি বলেন, এ ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে এই দেশগুলো লকডাউনের পাশাপাশি যাদের দেহে এই রোগ আছে বলে সন্দেহ করেছে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে এ পন্থা অনুসরণীয় বলে মত দিয়েছেন তিনি।

রায়ান এও জানিয়েছেন যে, বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের টিকা তৈরির জন্য কাজ করছে। তবে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রই এ টিকা পরীক্ষা করেছে।

আরো পড়ুন: করোনাভাইরাস: অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলাতে কোন দেশ কী করছে

আরো পড়ুন: করোনাভাইরাস: ইতালির পাশে রাশিয়া

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে ১ হাজার ৬০৩ জন মারা গেছেন। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে সর্বোমোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৬১৬ জনে। এর মধ্যে চীনে মারা গেছেন ৩ হাজার ২৬১ জন। চীনের বাইরে মারা গেছেন ১১ হাজার ৩৫৫ জন।

চীন থেকে ১৯০টির বেশি দেশে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ হাজার ৮০২ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হয়েছে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৮৩৮ জন। এর মধ্যে ৯৭ হাজার ৬৩৬ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

আরো পড়ুন: করোনায় গৃহবন্দি ৮ কোটি মানুষ ৬ মাস ফ্রি চাল পাবেন​

আরো পড়ুন: হংকংয়ে পর্যটক প্রবেশ নিষিদ্ধ

চীনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার ৫৪ জন। এ ছাড়া চীনের বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৫৫ হাজার ৭৮৪ জন। বিশ্বজুড়ে বর্তমানে ২ লাখ ২৪ হাজার ৫৮৬ জন আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে ২ লাখ ১৩ হাজার ৯৪৬ জনের অবস্থা সাধারণ (স্থিতিশীল অথবা উন্নতির দিকে) এবং বাকি ১০ হাজার ৬৪০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আরো পড়ুন: হাতে ‘হোম কোয়ারেন্টিন’ সিল দেখলেই গ্রেপ্তার

আরো পড়ুন: হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের ফল পাঠানো হচ্ছে

এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, সরকারগুলো এই বৈশ্বিক মহামারী ঠেকাতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তিনি সরকারগুলোকে নিজ নিজ দেশের করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা আরও বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন।

করোনাভাইরাস এখন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে গোটা ইউরোপে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ইতালিতে। টানা এক সপ্তাহ ধরে সেখানে পাঁচশরও বেশি করে মানুষ মারা যাচ্ছেন।

আরো পড়ুন: লকডাউন না মানলে কড়া ব্যবস্থা

আরো পড়ুন: আইসোলেশন কোয়ারেন্টাইন কী, কখন দরকার?

হাসপাতালগুলোর মর্গে লাশ রাখার জায়গা নেই। সেনাবাহিনীর ট্রাকে করে দূর-দূরান্তের করবস্থানে নিয়ে গণহারে মরদেহগুলো মাটিচাপা দেয়া হচ্ছে।

এ মহামারী পুরো বিশ্বকেই যেন স্তব্ধ করে দিয়েছে। অধিকাংশ দেশেই রাস্তাঘাট, অফিস-আদালত, শপিংমল-মার্কেট, রেস্তোরাঁ-বার ফাঁকা। যেন সব ভুতুড়ে নগরী, যুদ্ধকালীন জরুরি অবস্থা চলছে। সবার মধ্যে ভয়, আতঙ্ক আর আশঙ্কা।

আরো পড়ুন: সংক্রামক রোগের তালিকায় কোভিড ১৯

ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে। সেখানে প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এলেও চীনের বাইরে ব্যাপক হারে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৯০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত