ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২১ মিনিট আগে
শিরোনাম

লকডাউনের পরেও ভারতে করোনা ছড়াচ্ছে

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২০, ১৫:৩৬

লকডাউনের পরেও ভারতে করোনা ছড়াচ্ছে
ফাইল ছবি

ভারতজুড়ে লকডাউনের তৃতীয় দিন আজ। এরপরেওও দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। গত দুই দিন ধরে সম্পূর্ণ লকডউনে থাকার পরেও ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২০ জন। মারা গিয়েছেন ৫ জন। সবমিলিয়ে করোনায় আক্রান্ত হলেন ৭২৪ জন এবং মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৭।

একদিনে সব চেয়ে বেশি লোক আক্রান্ত হয়েছেন এবং সব চেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে গত ২৪ ঘণ্টায়। মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে এ পর্যন্ত তিনজন করে করোনা আক্রান্ত মারা গিয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যাও ওই দুই রাজ্যে এবং কেরলে সব চেয়ে বেশি।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক অবশ্য দাবি করেছে, করোনাকে তুলনামূলকভাবে বেঁধে রাখা সম্ভব হয়েছে। বৃদ্ধির হারও মোটামুটি স্থিতিশীল। ভারত এখন করোনার স্টেজ ২ বা দ্বিতীয় পর্যায়ে আছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লাভ আগরওয়াল বলেছেন, ‘এখনও পর্যন্ত গোষ্ঠী সংক্রমণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরকার পুরোপুরি প্রস্তুত।’

তা সত্ত্বেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে কেন? ফুসফুস বিশেষজ্ঞ পার্থ প্রতিম বোস বলেন, ‘মহারাষ্ট্রে সংখ্যাটা বাড়ার কারণ, সেখানে খুবই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সংক্রমণ পৌঁছে গিয়েছে। দিল্লিতে কড়াভাবেলকডাউন কার্যকর হয়েছে বলে সংখ্যাটা বাড়েনি। আর ভারত করোনার দ্বিতীয় পর্যায় পেরিয়ে এ বার তৃতীয় পর্যায়ে প্রবেশ করবে। এখানে ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের সংখ্যা প্রচুর। আমাদের দেশের লোকের এই ধরনের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও বেশি। আর যদি সংখ্যাতত্ত্ব দেখেন তা হলে সাধারণ সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্টে যে হারে লোক মারা যান, করোনায় লোকের মৃত্যুর হার তার চেয়ে কম। ফলে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। আরেকটা কারণে সংখ্যাটা বেশি লাগবে। আগে করোনার পরীক্ষাই হচ্ছিল না। এখনও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম পরীক্ষা হচ্ছে।’

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সাত্যকি হালদার বলেন, ‘সবচেয়ে জরুরি হল করোনার পরীক্ষা হওয়া। কিন্তু পরীক্ষা করার মতো পরিকাঠামো ভারতে তৈরি হয়নি। এটাই উদ্বেগের।’

এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রতিটি রাজ্যের সঙ্গে করোনা নিয়ে সমন্বয়ের দায়িত্ব নির্দিষ্ট করে একজন মন্ত্রীকে দিয়েছেন। তাদের কী প্রয়োজন, কোথায় অসুবিধা হচ্ছে, ভিন রাজ্যে কত শ্রমিক আটকে আছেন, কীভাবে তারা করোনা-রোধে সফল্য পাচ্ছেন মন্ত্রীরা সে সব জানবেন এবং অসুবিধা দূর করার চেষ্টা করবেন। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে রাজনাথ সিং ও মহেন্দ্রনাথ পান্ডে, মহারাষ্ট্রের সঙ্গে প্রকাশ জাভড়েকর এবং নীতিন গড়করি। এর পাশাপাশি কেন্দ্র নির্দেশ দিয়েছে, চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনও ওষুধের দোকান হাউড্রক্সিক্লোরোকুইন বিক্রি করতে পারবে ন। কারণ, নিজে থেকে ডাক্তারিকরে এই ওষুধ খেয়ে অনেকেরই সমস্যা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নালে আরো পড়তে পারেন:

> দেশে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানুষের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি

> লকডাউন: বাড়ি ফিরতে ছেলেকে কাঁধে নিয়ে ২ দিন হাঁটলেন যুবক

> করোনা প্রতিরোধে নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

> নাগরিকদের বাংলাদেশ ছাড়তে বলেছে ব্রিটিশ হাই কমিশন​

> করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর আগে যা বললেন চিকিৎসক

> করোনাভাইরাস: নাগরিকরা প্রত্যেকে পাবেন ১২ শ ডলার​

> বিদেশী নাগরিকদের সহযোগিতার আশ্বাস পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

> প্রাথমিক শিক্ষকদের টিফিন ফি যাবে ‘করোনা ফান্ডে’​

> যে ৭ রোগ থাকলে করোনা হলে আপনার ঝুঁকি বেশি​

> করোনার সচেতনতায় এমনটা কেউ করেননি আগে​

> দেশ লকডাউন হলেও মসজিদ বন্ধ করা যাবে না

> পিপিই ছাড়া চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশনা স্থগিত

> করোনাভাইরাসকে ‘অবহেলা’ করছেন ট্রাম্প​

> করোনা নিয়ে গুজব ছড়ালে কঠোর ব্যবস্থা

> ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী করোনায় আক্রান্ত​

> গুজবে হবিগঞ্জবাসীর নির্ঘুম রাত

> চা পানেই করোনা থেকে মুক্তি!

> বিশ্বের ২০০ দেশে করোনা​

> কাশি দিলেই শাস্তি

লকডাউনের জন্য গরিবরা যাতে বিপাকে না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবারই বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এখন বিভিন্ন জায়গায় যে সব শ্রমিক আটকে পড়েছেন, তাঁদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বা যদি তা সম্ভব না হয় তো খাবার ও আশ্রয় দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।

শুক্রবার ভোর রাতে নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে পায়ে হেঁটে যে সব শ্রমিকরা বাড়ি ফিরছিলেন, তাদের বাসে করে নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছে সরকার।

মুম্বাইতেও ৮০ জন বাঙালি শ্রমিক আটকে পড়েছেন। তারা অভুক্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছিলেন। তাদের কথা জানতে পেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যোগাযোগ করেন উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে। তারপরেই তাদের খাবার ও সাময়িক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীর কাছেও বিভিন্ন রাজ্য থেকে প্রায় তিন হাজার বাঙালি শ্রমিক যোগাযোগ করেছিলেন। তিনিও সেই সব রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলে হয় তাদের বাড়ি পাঠাবার ব্যবস্থা করেছেন বা সেই সব রাজ্যে তারা যাতে খেতে পান ও নিরাপদে থাকতে পারেন, তার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদী এ দিন ভোরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জি২০ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানেও তিনি সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বজায় রেখেছিলেন। বড় ঘরে মোদী সামনে বসেছেন। তার বেশ খানিকটা পিছনে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। তার থেকে দূরে বাকি দুই আধিকারিক।

অবশ্য চিকিৎসকদের বক্তব্য, ভারতের মতো দেশে অধিকাংশ লোক এক কামরার ফ্ল্যাটে বাস করেন। গরিবরা শহরের বস্তিতে থাকেন। সেখানে সোশ্যাল ডিসটেন্সিং করা খুবই কঠিন কাজ।

প্রসঙ্গত, বিশ্বের ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত প্রানঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৫ লাখ ৯৭ হাজার ১৮৫ জন। অপরদিকে, ২৭ হাজার ৩৬০ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনা। অপরদিকে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩৬০ জন।

এখন পর্যন্ত করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৪ হাজার ১৪২। করোনায় এখন পর্যন্ত মারা গেছে ১ হাজার ৬৯৬ জন এবং চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ২ হাজার ৫২২ জন। এছাড়া ২ হাজার ৪৬৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা ইতালিতে। এছাড়া এখন পর্যন্ত ইউরোপের দেশ ইতালিতেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৬ হাজার ৪৯৮। অপরদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৯ হাজার ১৩৪ জন এবং হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১০ হাজার ৯৫০ জন।

এরপেরই রয়েছে চীন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার ৩৯৪ এবং মারা গেছে ৩ হাজার ২৯৫ জন। অপরদিকে, চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৭৪ হাজার ৯৭১ জন।

অপরদিকে, স্পেনে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৭১৯ এবং মারা গেছে ৫ হাজার ১৩৮ জন। অপরদিকে, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৯ হাজার ৩৫৭ জন। জার্মানিতে করোনায় আক্রান্ত ৫০ হাজার ৮৭১ এবং মারা গেছে ৩৫১ জন। অপরদিকে, ফ্রান্সে আক্রান্তের সংখ্যা ৩২ হাজার ৯৬৪ এবং মারা গেছে ১ হাজার ৯৯৫ জন।

ইরানে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩২ হাজার ৩৩২ এবং মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৩৭৮ জনের। যুক্তরাজ্যে করোনায় আক্রান্ত ১৪ হাজার ৫৪৩ এবং মারা গেছে ৭৫৯ জন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের দেহে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়েছে।

কানাডায় ৪ হাজার ৭৫৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৫৫ জন। অস্ট্রেলিয়ায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৭৩ এবং ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তানে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৩৭৩ এবং মারা গেছে ১১ জন।

অপরদিকে, সৌদি আরবে করোনায় আক্রান্ত ১ হাজার ১০৪ এবং মৃত্যু ৩, ভারতে আক্রান্ত ৮৮৭ এবং মারা গেছে ২০ জন। এদিকে, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৪৮ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৫ জন এবং চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১১ জন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

আরো পড়ুন:

> করোনা ‘জয়ে’ সুখবর​

> সব কারখানা বন্ধের নির্দেশ​

> করোনায় বাড়িতে যা করবেন

> হ্যান্ডওয়াশ মাস্ক দিচ্ছে সেনাবাহিনী

> করোনা পরিস্থিতি তুলনামূলক নিয়ন্ত্রণে​

> করোনা ঠেকাতে তালপাতার মাস্ক ব্যবহার

> কোনো ধরনের জনসমাগম নয়: প্রধানমন্ত্রী

> করোনায় চিকিৎসক যুগলের অন্যন্য দৃষ্টান্ত​

> করোনা একটি যুদ্ধ, আমাদের জিততে হবে

> করোনায় প্রাথমিকে ‘বার্তা’ পাঠাবে মন্ত্রণালয়

> করোনাভাইরাস: সাত উপায়ে থামবে ভুল তথ্য​

> বিমানের দুটি ছাড়া সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ

> মাছ বিক্রেতা নারীই বিশ্বের প্রথম করোনা রোগী!​

> পুলিশের লাঠিপেটা হয়রানি, বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ​

> করোনা থেকে বাঁচতে ডেটল খেয়ে ৫৯ জনের মৃত্যু​

> ঢাকার রাস্তা নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ, সাথে সেনাবাহিনী

> করোনা চিকিৎসায় আশার আলো দেখছেন চিকিৎসকরা​

> দেশে বেড়েছে করোনার বিস্তার ও নমুনা সংগ্রহের আওতা

> অন্যদের বাঁচাতে আত্মহত্যা করলেন করোনা আক্রান্ত নার্স

  • সর্বশেষ
  • পঠিত