ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩০ মিনিট আগে
শিরোনাম

থেমে গেছে ইটালির বারান্দা-সঙ্গীত

থেমে গেছে ইটালির বারান্দা-সঙ্গীত
ইতালির এই ‍দৃশ্য এখন শুধুই স্মৃতি

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ইউরোপের এই দেশটিতে তখন সবে শুরু হয়েছে লকডাউন। ঘরবন্দি গোটা ইটালির অনেক মানুষ তখন একটা নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ির বারান্দায় এসে গান গাইতেন। অনেকে আবার গানের সঙ্গে গিটারও বাজাতেন। এভাবে গান গেয়ে তারা একে অপরকে পাশে থাকার বার্তা দিতেন। এই গানের মূল মন্ত্র ছিল একটাই,‘চিন্তা করো না, সব ঠিক হয়ে যাবে’।

সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে ইটালিবাসীর গান গাওয়ার সেই ভিডিও আর ছবি আমাদের সংবাদ মাধ্যমগুলোতেও ফলাও করে প্রচার হয়েছে। কিন্তু লকডাউনের তিন সপ্তাহের মাথায় ছবিটা পুরোই বদলে গিয়েছে।

এখন আর ঝুলবারান্দায় বেরিয়ে গান গাইছে না ইটালি। কারণ দেশবাসী বেশ বুঝতে পারছেন, ‘সব ঠিক হবে না মোটেও’। করোনাভাইরাসের প্রকোপে গোটা দেশে মৃতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ২৪ হাজারের উপরে।

দেশের উত্তরাংশের তুলনায় দক্ষিণের প্রদেশগুলিতে ভাইরাসের দাপট কম হলেও চরম সামাজিক ও আর্থিক অনিশ্চয়তায় ভুগছেন সেখানকার মানুষ। কারণ নেপলস, সিসিলি, ক্যালাব্রিয়া, ক্যাম্পানিয়ার মতো এলাকায় তুলনামূলকভাবে গরিব মানুষের বাস। দোকান, হোটেল, রেস্তরাঁ দীর্ঘদিন বন্ধ। রাস্তায় লোক নেই। দিন-আনা দিন-খাওয়া মানুষগুলো তাই ভাবতে শুরু করেছেন, ভাইরাসে প্রাণ না গেলেও হয়তো এবার না খেতে পেয়েই মরতে হবে তাদের। যাদের চাকরি ছিল, তাদের অনেকেই এখন কর্মহীন। অদূর ভবিষ্যতে কাজ হারাবেন আরও অনেক মানুষ।

সিসিলির এক রেস্তরাঁয় কাজ করেন পারিদে ইজ়াইন নামে এক যুবক। তিনি বলেন, ‘লকডাউনের জন্য এ মাসে মাইনে পাইনি। বাড়িতে রয়েছে স্ত্রী আর দুই সন্তান রয়েছে। জমানো যা ছিল, তা দিয়ে আপাতত চলছে। কিন্তু কত দিন চলবে জানি না। ব্যাঙ্কের কাছে ইনস্টলমেন্ট পিছোনোর আবেদন করেছিলাম, ওরা রাজি হয়নি। এ ভাবে চললে খুব তাড়াতাড়ি রাস্তায় এসে দাঁড়াতে হবে।’

দরিদ্র ও গৃহহীন লোকজনের খাবার সরবরাহের জন্য ইতিমধ্যেই বেশ কিছু অর্থ বরাদ্দ করেছে ইটালি সরকার। কিন্তু সেই অর্থ এতটা নগণ্য যে তা দিয়ে সবার মুখে খাবার তুলে দেওয়া অসম্ভব। এ নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন প্রদেশের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।

তাই সে দেশের উদ্বিগ্ন জনতার মুখে এখন আর গান নেই। আতঙ্কে স্তব্ধ গোটা ইতালি।

সূত্র: আনন্দবাজার

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত