ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু প্রায় ৪০ হাজার, ইউরোপে লক্ষাধিক

করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু প্রায় ৪০ হাজার, ইউরোপে লক্ষাধিক
যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃতদের লাশ বয়ে নিয়ে চলেছেন দুই স্বাস্থ্যকর্মী

বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলের মোট ২৩ লাখ ৩৩ হাজার ৮৭৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর এদের মধ্যে এ পর্যন্ত মারা গেছে ১ লাখ ৬০ হাজার ৮১৮ জন। অপরদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৬ লাখ ৪০৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

করোনা কেড়ে নিল ১ লাখ ৬০ হাজার প্রাণ

বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু এই দুই বিভাগেই শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৭ লাখের বেশি মানুষ এবং মারা গেছে ৩৯ হাজার। যুক্তরাষ্ট্রের সবক’টি অঙ্গরাজ্য করোনায় আক্রান্ত হলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিউইয়র্ক।

যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু প্রায় ৪০ হাজার

করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় সব দেশকে পেছনে ফেলে শীর্ষে আছে এ দেশটি। সত্যি কথা বলতে কি এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের ধারে কাছেও নেই কোনো দেশ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশটিতে আক্রান্ত ও মৃতের পাল্লাও ভারি হচ্ছে।

জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে শনিবার একদিনে আরও ৩৩ হাজার ৪শ জন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। অপরদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে আরও ১ হাজার ৮৪৯ জন।

ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা কমপক্ষে ৭ লাখ ৩৮ হাজার ৯২৩ জন। অপরদিকে মারা গেছে কমপক্ষে ৩৯ হাজার ১৫ জন। এখন পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে ৬৮ হাজার ২৮৫। এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছে আরও ৬ লাখের বেশি মানুষ। এদের মধ্যে ১৩ হাজার ৫৫১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। তবে করোনায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য। সেখানে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের তুলনায় অনেক বেশি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে যত মানুষ মারা গেছে তার মধ্যে অধিকাংশই নিউইয়র্কের।

শুধুমাত্র নিউইয়র্কেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি। আক্রান্তদের মধ্যে ১৭ হাজার ৬৭১ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে শতাধিক বাংলাদেশিও রয়েছেন।

জানা যায়, শনিবার গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আরও ১০ বাংলাদেশি মারা গেছেন। এ নিয়ে গত ৩২ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সে দেশের পাঁচটি রাজ্যে ১৬৭ জন বাংলাদেশি মারা গেলেন। এদের মধ্যে নিউইয়র্কেই মৃত্যু হয়েছে ১৫২ জনের।

যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মারা গেছেন ১৬৭ বাংলাদেশি

শনিবার করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের হিসাব দিতে গিয়ে নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় অঙ্গরাজ্যে ৫৪০ জন কোভিড-১৯ রোগী মারা গেছেন, যা গত দিনগুলোর তুলনায় কিছুটা কম।

এদিকে নিউইয়র্কের স্বাস্থ্য বিভাগ শনিবার জানিয়েছে, শহরটিতে স্বেতাঙ্গদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গরা দ্বিগুণ সংখ্যায় মারা যাচ্ছেন।

স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান থেকে আরো জানা যায়, একজন শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তির হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার সম্ভাবনা একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির চেয়ে দ্বিগুণ বেশি।

এর আগে মার্কিন রোগতত্ত্ব গবেষণা বিভাগ জানিয়েছিল, দেশটিতে করোনা আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হন তাদের শতকরা ৩৩ ভাগই কৃষ্ণাঙ্গ। অথচ কৃষ্ণাঙ্গদের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার শতকরা মাত্র ১৩ ভাগ।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, কেবল নিউইয়র্ক নয়, আমেরিকার সব জায়গাতেই করোনায় প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের বেশিরভাগই কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত।

নিউইয়র্কে করোনায় কৃষ্ণাঙ্গরাই বেশি মারা যাচ্ছে

পিছিয়ে নেই ইউরোপও

যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর শীর্ষে থাকা বাকি ৫টি দেশের সবগুলোই ইউরোপের-স্পেন, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য।

স্পেনে মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৯৪ হাজার ৪১৬, মৃত্যু ২০ হাজার ৬৩৯ জন; ইতালিতে আক্রান্ত ১ লাখ ৭৫ হাজার ৯২৫ ও মৃত্যু ২৩ হাজার ২২৭ জন; ফ্রান্সে মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৫১ হাজার ৭৯৩ জন, মৃত্যু ১৯ হাজার ৩২৩ জন; জার্মানিতে আক্রান্ত ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৪ জন এবং মৃত্যু সাড়ে ৪ হাজার এবং যুক্তরাজ্যে মোট করোনায় আক্র্ন্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৪ হাজার ২১৭ জন এবং মারা গেছেন ১৫ হাজার ৪৬৬ জন।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহানের পর করোনার দ্বিতীয় আশ্রয়কেন্দ্র হয় গোটা ইউরোপ। যেখানে মৃতদের মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই এই মহাদেশের নাগরিক। যার সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে গেছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে করোনায় মারা গেছেন ১ লাখ ৫১০ জন।

করোনায় আক্রান্ত সাড়ে ১১ কোটি মানুষ!

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা দাবি করেছেন, বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কম করে হলেও সাড়ে ১১ কোটি।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বলছেন, অনেকের দেহে ভাইরাস সংক্রমিত হলেও তার কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায়নি। ফলে তিনি অসুস্থ হননি। তাই তিনি হাসপাতালেও যাননি। পরীক্ষা না করার কারণে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় তার নাম অন্তর্ভূক্ত হয়নি।

বিশ্বে ১১ কোটিরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত

তবে স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের এই গবেষণাপত্র শুক্রবার প্রকাশিত হলেও তা এখনও বিশেষজ্ঞদের দ্বারা মূল্যায়িত হয়নি।

ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারা কাউন্টির ৩ হাজার ৩৩০ ব্যক্তির ওপর পরীক্ষা চালিয়ে ওই গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা আমাদের জানার চেয়ে ৫০ থেকে ৮৫ গুণ বেশি।

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত