ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

করোনার ভ্যাকসিনের জন্য প্রাইমারি শিক্ষকের দেহদান

করোনার ভ্যাকসিনের জন্য প্রাইমারি শিক্ষকের দেহদান

করোনা আতঙ্কে ভুগছে গোটা বিশ্ব। এই মূহুর্তে বিশ্ববাসীর মনে একটাই চিন্তা কবে আবিষ্কার হবে এই ভাইরাসের প্রতিষেধক ও ঔষধ। আর কবে বিশ্ববাসী মুক্তি পাবে এই মহমারির হাত থেকে। এ নিয়ে বিশ্বজুড়েই চলছে তা নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা। করোনার ভ্যাক্সিন তৈরির জন্য এই সময়ে কাজ করছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কমপক্ষে ৩০টি গবেষক দল। থেমে নেই ভারতও। তবে গবেষক দলগুলোর মধ্যে সবচে এগিয়ে অক্সফোর্ড টিমটি। তবে তাদেরও সমস্যার সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ডোনার কে হবেন, কে হবেন ‘গিনিপিগ’? কে নেবে জীবনের ঝুঁকি নেবে? এখন একই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন অনেক বিজ্ঞানীর দল।

এ অবস্থায় এগিয়ে এলেন এক বাংলার শিক্ষক। তার নাম চিরঞ্জিত ধীবর। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুর্গাপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি হচ্ছেন ভারতের তৃতীয় এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রথম ব্যক্তি যিনি করোনা গবেষণার জন্য নিজের দেহদান করতে সম্মত হয়েছেন। এর আগে ভারতের উত্তরপ্রদেশের দুই ব্যক্তি এই মহতি কাজে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তবে তারা কেউ এই শিক্ষকের মতো এমন নাছোড়বান্দা ছিলেন না।

শিক্ষক চিরঞ্জিত ধীবর ইতিমধ্যে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)’র কাছে আবেদন করেছেন। তার আবেদন- দেশের এবং মানবতার স্বার্থে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের পরীক্ষায় নিজেকে উৎসর্গ করতে চান।

চিরঞ্জিত ধীবর নামক ওই শিক্ষকের বয়স মাত্র ৩০ বছর। পশ্চিম বর্ধমানের মানিকাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ান তিনি। স্ত্রী-সন্তান ও মাকে নিয়ে তার সংসার। তবে বর্তমানে স্ত্রী ও সন্তান আলাদা থাকেন। তিনি ভারতের কট্টরপন্থী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সদস্য।

এই আবেদন জানিয়ে সোমবার প্রথমে মহকুমা শাসক এবং পরে জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠিকে তিনি ই-মেল করেন। জেলাশাসকের দপ্তর জানায়, বিষয়টি তাদের হাতে নেই। আইসিএমআর এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে চিঠি দিতে হবে। সেইমতো দুই জায়গায় ই-মেল করেন চিরঞ্জিত। আইসিএমআর’র সদর দপ্তর দিল্লি থেকে বাংলার শিক্ষকের চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় সংস্থার মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর ড. লোকেশ শর্মা স্থানীয় এক সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘আপাতত আমরা প্লাজমা থেরাপির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করছি। প্লাজমা দাতারা প্রত্যেকে এক সময় করোনা আক্রান্ত ছিলেন, কিন্তু এখন সুস্থ হয়েছেন। ভবিষ্যতে করোনা আক্রান্ত নন এমন কারো ওপর পরীক্ষা করা হলে আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে কাউকে বাছাই করা হবে। তবে তা হিউম্যান এথিকস কমিটি অনুমোদন করবে। একটি নির্দিষ্ট প্রোটোকল মেনে সেই পরীক্ষা হবে।’

আগেই বলেছি, করোনা ভ্যকসিন আবিষ্কারের চেষ্টা চালাচ্ছে ভারতও। তবে আইসিএমআর আপাতত প্লাজমা থেরাপির পরীক্ষা করছে। আক্রান্ত কোনও রোগী সুস্থ হওয়ার পর তার শরীরের প্লাজমা নেওয়া হচ্ছে। সেই প্লাজমা প্রতিস্থাপিত হবে করোনা আক্রান্তর শরীরে। যা থেকে সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন রোগী।

কিন্তু প্রাইমারির শিক্ষক চিরঞ্জিত চান করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হোক।

এ নিয়ে তিনি ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি ছাত্র অবস্থা থেকে আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত। একজন স্বয়ংসেবক হিসাবে দেশের সেবা করা আমার এক এবং একমাত্র লক্ষ্য। আমার জীবনের বিনিময়ে যদি গোটা মানবজাতি রক্ষা পায়, তার চেয়ে ভাল কিছু হতে পারে না।’

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত