‘করোনায় কাজ নেই-মজুরি নেই নীতি প্রয়োগ করা যাবে না’
বোম্বাই হাইকোর্টের আওরঙ্গাবাদ বেঞ্চ বলেছে যে, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে লকডাউনের কারণে দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে কাজ নেই মজুরি নেই নীতি প্রয়োগ করা যাবে না।
মঙ্গলবার ওই আদালতের বিচারপতি আর ভি ঘুগে এই ঐতিহাসিক রায় দেন।
ওই বিচারপতি আওরঙ্গাবাদের তুলজাভবানী মন্দির সংস্থার ট্রাস্টকে করোনা মহামারির কারণে মন্দির ও অন্যান্য উপাসনালয় বন্ধ রাখার ফলে কাজে আসতে অক্ষম সকল চুক্তিবদ্ধ শ্রমিককে মে মাস পর্যন্ত পুরো মজুরি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে শ্রমিক ইউনিয়ন রাষ্ট্রীয় শ্রমিক অহাদীর দায়ের করা আবেদনের শুনানি চলছিল। যেখানে দাবি করা হয়েছিল যে, লকডাউন সত্ত্বেও শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা তাদের কাজে নিয়োজিত থাকার ব্যাপারে ইচ্ছুক। শ্রমিকরা লকডাউন সত্ত্বেও প্রহরী হিসাবে নিয়োগের জন্য এবং তুলজাভবানী মন্দির সংস্থার অন্যান্য দায়িত্ব পালনে সম্মতি প্রকাশ করেছেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, তবে মন্দিরের ট্রাস্ট কোভিড-১৯ লকডাউনের কারণে তাদের দায়িত্ব পালনের অনুমতি দিচ্ছিল না।
পিটিশনে ওই শ্রমিক ইউনিয়ন আরও উল্লেখ করেছে যে, এই বছরের মার্চ এবং এপ্রিল মাসে তারা ঠিকাদারদের কাছ থেকে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেওয়া অর্থের চেয়ে কম মজুরি পেয়েছে।
আবেদনকারীরা আদালতকে জানিয়েছে যে, ওসমানাবাদ জেলা কালেক্টর হচ্ছেন তুলজাভবানী মন্দির সংস্থার ট্রাস্টের সভাপতি এবং তহসিলদার হচ্ছেন ব্যবস্থাপক-প্রশাসন।
মামলায় সংক্ষিপ্ত যুক্তি শুনানির পরে বিচারপতি ঘুগে বলেছেন, আদালত এই পরিস্থিতিতে চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না।
‘সক্ষম ব্যক্তিরা, যারা ট্রাস্টের কাজে নিয়োজিত থেকে নিরাপত্তা ও গৃহ রক্ষায় আন্তরিকভাবে তাদের সেবা দেওয়ার জন্য আগ্রহী। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সকল মন্দির ও উপাসনালয় বন্ধ থাকায় তারা কাজ করতে পারছেন না।’
বিচারপতি ঘুঘে বলেন, ‘আমি মনে করি এই ধরনের অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ‘কাজ নেই মজুরি নেই’নীতিটি কার্যকর করা যায় না। আদালত এই ধরনের শ্রমিকদের দুর্দশার ব্যাপারে অসংবেদনশীল হতে পারে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা (শ্রমিকরা) করোনা মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।’
আদালত চলতি বছরের মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের জন্য ঠিকাদাররা যাতে শ্রমিকদের পুরো মজুরি বিতরণ নিশ্চিত করে সে ব্যাপারে উসমানাবাদ জেলা কালেক্টরকে ট্রাস্টের সভাপতির দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত আরও বলেছে যে, আবেদনের বিষয়ে পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত কাজ নেই-মজুরি নেই নীতি চালু করা যাবে না। আগামী ৯ জুন এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
সূত্র: দ্য ইকোনমিক টাইমস
এমএ/