ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাবাকে নিয়ে ১২০০ কিমি! সাইকেল ফেডারেশনের নজরে জ্যোতি

বাবাকে নিয়ে ১২০০ কিমি! সাইকেল ফেডারেশনের নজরে জ্যোতি
বাবার সঙ্গে জ্যোতি

ভারতে সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে গত সপ্তাহেই ভাইরাল হয়েছে ১৫ বছরের কিশোরী জ্যোতি কুমারীর কাহিনী। নিজের অসুস্থ বাবাকে সাইকেলে চাপিয়ে দিল্লির গুরগাঁও থেকে বিহার- ১৫০০ কিমি পথ পাড়ি দিয়েছিল এই মেয়ে। তার সাইকেলে কাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই তাকে ট্রায়ালে ডেকেছে সাইকেল ফেডারেশন।

জানা যায়, কাজের সূত্রে বড় মেয়ে জ্যোতিকে নিয়ে ঘর ছেড়ে ভিনরাজ্যে থাকতেন মোহন পাসওয়ান। আর বিহারের বাড়িতে থাকেন তার স্ত্রী ও অন্য সন্তানরা। গুরুগ্রামে ই-রিকশা চালিয়ে কোনওরকমে পরিবার চলত মোহনের। কিন্তু মাস কয়েক আগে এক দুর্ঘটনায় পড়ে রোজগার বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় শুরু হয় করোনা সংক্রমণ। দরকারি ওষুধ কেনার টাকা দূরে থাক, দু’বেলা খাবার জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে শুরু করেন এই রিকশাচালক।

এদিকে কয়েক মাসের বাড়ি ভাড়া বাকি থাকায় বাড়িওয়ালা ঘর ছাড়ার নোটিশ দেয়। এই অবস্থায় বাবাকে বাড়ি ফেরার পরামর্শ দেয় জ্যোতি। কিন্তু মোহন মেয়েকে বোঝান, গণপরিহণ বন্ধ, তার উপর অসুস্থ শরীর। কীভাবে এতটা রাস্তা পেরিয়ে বাড়ি ফিরবেন তারা?

এ অবস্থায় তাই বাবাকে একটা সাইকেল জোগাড় করে দিতে বলে জ্যোতি। কিন্তু এতগুলো পথ কীভাবে পাড়ি দেবে জ্যোতি! মেয়েকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তার একই কথা। মেয়ের জেদের কাছে একপ্রকার বাধ্য হয়ে শেষ জমানো টাকায় সাইকেল কিনে ফেলেন মোহন।

তারপর টানা আটদিন ধরে সাইকেল চালিয়ে বাবাকে নিয়ে হরিয়ানা থেকে বিহারের পৌঁছায় ১৫ বছরের কিশোরী।

এই কাহিনী আর জেদের গল্পই ছুঁয়ে গেছে ভারতের সাইকেল ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের।

ভারতীয় সাইকেল ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ওঙ্কার সিং পিটিআইকে জানান, যদি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী জ্যোতি কুমারী ট্রায়ালে উত্তীর্ণ হয়, তাহলে সে ন্যাশনাল সাইকেল একাডেমির দিল্লির আইজিআই স্টেডিয়ামে একজন ট্রেনি হিসাবে নির্বাচিত হবে।

তিনি আরো জানান, ‘সকালেই জ্যোতির সঙ্গে কথা হয়েছে। ওকে জানানো হয়েছে, লকডাউন উঠে গেলে যত শীঘ্র সম্ভব পরের মাসেই ওকে দিল্লিতে ট্রায়ালে ডাকা হবে। ওর যাতায়াত, থাকা এবং অন্যান্য খরচ ফেডারেশন বহন করবে।’

জ্যোতিকে ট্রায়ালে ডাকার কারণ হিসাবে ওঙ্কার সিং বলেন, ‘তার মধ্যে বিশেষ কিছু রয়েছে। আমার মনে হয় সাইকেলে করে ১২০০ কিমি পথ পাড়ি দেওয়া মোটেই সহজ নয়। ওর শক্তি ও সহনশীলতা বাকিদের থেকে আলাদা। এই বিষয়টিই আমরা পরীক্ষা করে দেখতে চাই।’

তিনি আরও জানান, ‘আমাদের কম্পিউটার চালিত সাইকেলে বসিয়ে দেখা হবে নির্বাচনের জন্য সাত-আটটা প্যারামিটার ও পেরোতে পারে কিনা। সেটা পেরোলেই ও আমাদের ট্রেনি হতে পারবে এবং নিখরচায় ট্রেনিং নিতে পারবে।’

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত