ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভের জের ধরে চলছে গ্রেপ্তার

যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভের জের ধরে চলছে গ্রেপ্তার
সিএনএনের সদর দপ্তরে বিক্ষোভকারীদের হামলার চিত্র

পুলিশি হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে শুক্রবার সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে। তবে সবচেয়ে ভয়াবহ বিক্ষোভ হয়েছে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তম শহর মিনিয়াপোলিসে।

বিক্ষোভ ঠেকাতে শুক্রবার ও শনিবার সেখানে কারফিউ জারি করা হয়েছে। কিন্তু শুক্রবার কারফিউ অগ্রাহ্য করে বিক্ষোভ চলেছে সেখানে। এ সময় প্রচুর ভবন ও যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

ওই সহিংস বিক্ষোভের একদিন পর শনিবার বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করতে শুরু করেছে পুলিশ। এ কথা জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস। তবে এখন পর্যন্ত কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার কোনও নির্দিষ্ট সংখ্যা জানা যায়নি।

এদিকে পুলিশি হেফাজতে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যে মিনিয়াপোলিসের সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগও আনা হয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির হোয়াইট হাউজের কাছে জড়ো হয়েছিল বিক্ষোভকারীরা। এসময় তাদের হাতে শোভা পাচ্ছিল নিহত ফ্লয়েডের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড। বিক্ষোভকারীরা তার শেষ বাক্য ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না’বলে স্লোগান দেয়। এসময় হোয়াইট হাউজের প্রবেশ ও প্রস্থানের পথ দুটি বন্ধ করে দেয়া হয়।

শুক্রবার ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে জর্জিয়ার রাজধানী আটলান্টায়। বিক্ষোভকারীরা শহরের বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ভাঙচুর চালায়। বাদ যায়নি সংবাদ মাধ্যম সিএনএন’র সদর দপ্তরের অফিসও।

সিএনএ জানায়, শুক্রবার বিক্ষোভকারীদের একটি বড় অংশ সিএনএন ভবনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে। তারা ভবনটি লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে অফিসের জানালাগুলো ভেঙে যায়। এসময় বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভবনের লবিতে ঢুকে পড়ে অবস্থান নেয়।

বিক্ষোভকারীরা এক পর্যায়ে ভবনটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও তাতে সফল হয়নি। তবে তারা দূর থেকে ভবনটি লক্ষ্য করে আতশবাজি নিক্ষেপ করেছিল বলে জানিয়েছে সিএনএন।

এদিকে শুক্রবার মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তম শহর মিনিয়াপলিস থেকে বিক্ষোভের খবর সরাসরি সম্প্রচার করার সময় সিএনএনের তিন সংবাদকর্মীকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে অবশ্য তিনজনকেই মুক্তি দেয়া হয়। যদিও এই ঘটনাকে সংবিধানের লঙ্ঘন বলে সমালোচনা করেছে সিএনএন।

তিন সংবাদকর্মীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর টিম ওয়ালজ।

মুক্তি পেয়েছেন সিএনএন’র আটক কর্মীরা

কেবল আটলান্টা বা মিনিয়াপোলিস নয় শুক্রবার ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে নিউ ইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো, ডেনভার, হিউস্টন, লুইসভিলে, ফিনিক্স, কলম্বাস এবং মেমফিসসহ বেশ কয়েকটি শহরে। এসব শহরে পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সহিংস সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

নিউ ইয়র্ক শহরের ব্রুকলিন ও ম্যানহাটানে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। তারা পুলিশকে লক্ষ করে বোতল ও আবর্জনা ছুড়ে মারে। জবাবে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ।

তবে এসব বিক্ষোভ ঠেকাতে কোনওরকম চেষ্টা করছেন না দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বরং তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের আরও উসকে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি টুইটারের মাধ্যমে উস্কানি ছড়াচ্ছেন।

ট্রাম্প এক টুইটার বার্তায় বিক্ষোভকারীদের ‘গুন্ডা’ হিসাবে উল্লেখ করে ‘লুটতরাজ করা হলে গুলি চালানো হবে’ বলেও হুমকি দিয়েছেন।

আরও পড়তে পারেন-যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ-অগ্নিসংযোগ

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত