ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

ভারত-নেপাল সংঘাত: পার্লামেন্টে বিতর্কিত মানচিত্র বিল

ভারত-নেপাল সংঘাত: পার্লামেন্টে বিতর্কিত মানচিত্র বিল
মানচিত্র বিল উত্থাপন করছেন আইনমন্ত্রী শিব মায়া তুম্বাহাম্ফি

ভারতের সঙ্গে তীব্র সীমান্ত সংঘাতের মধ্যেই নেপালের পার্লামেন্টে ‘ম্যাপ আপডেট বিল’ উত্থাপিত হয়েছে। রোববার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস’-এ বিলটি উত্থাপন করেন দেশটির আইনমন্ত্রী শিব মায়া তুম্বাহাম্ফি।

নতুন এই মানচিত্রে ভারত-নেপাল সীমান্তের লিমপিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখকে নেপালের অংশ বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু ভারতের দাবি, ওই তিনটি অংশই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং উত্তরাখণ্ড রাজ্যের পিথোরাগড় জেলার অন্তর্ভূক্ত।

এদিকে জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে নেপালের বিরোধী দলগুলোও এই বিলে সমর্থন দিচ্ছে বলে জানা গেছে। ফলে বিল পাশ হয়ে যাওয়া এখন সময়ের মাত্র। আর এমনটি হলে নয়াদিল্লি-কাঠামান্ডুর সীমান্ত সংঘাত আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে বলেই মনে করছেন কূটনৈতিকরা।

সম্প্রতি ভারতের পক্ষ থেকে উত্তরাখণ্ডের গাটিয়াবর্গ থেকে লিপুলেখ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার রাস্তার আনুষ্ঠানিক সূচনা করার পরে এ নিয়ে বিবাদ চরমে ওঠে। নেপালের দাবি, ওই রাস্তার অংশ নেপালের ভূখণ্ডের মধ্যে দিয়ে গেছে। এরপরেই নেপালের ভূমি মন্ত্রণালয় দেশের সংশোধিত নতুন মানচিত্র প্রকাশ করলে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়। ভারতের বিরোধিতা সত্ত্বেও ওই মানচিত্র বিল পার্লামেন্টে উত্থাপন করলো নেপাল সরকার।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার জানায়, নেপাল পার্লামেন্টে এই মানচিত্র বিল পেশ হওয়ার কথা ছিল গত বুধবার। কিন্তু সংবিধান সংশোধনী বিলে দুই তৃতীয়াংশ সাংসদের সমর্থন দরকার হয়। তাই সব দিক বুঝেশুনেই এগোতে চাইছিল কেপি শর্মা ওলি সরকার এবং তার দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি। সেই কারণেই বিল পেশের সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু শনিবার নেপালের প্রধান বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেস কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের পর ম্যাপ আপডেট বিলকে সমর্থনের বার্তা দেয়। তার পরেই রোববার পার্লামেন্টের এই বিল পেশ করেন নেপালের আইনমন্ত্রী শিব মায়া তুম্বাহাম্ফি। নেপালি কংগ্রেসের সমর্থন পাওয়ায় ‘সমাজবাদী জনতা পার্টি নেপাল’এবং ‘রাষ্ট্রীয় জনতা পার্টি নেপাল’-এর বিরোধিতা সত্ত্বেও এই বিল পাশ করাতে সরকারি দলের কোনও সমস্যা হবে না বলে জানা গেছে।

একই ভাবে নেপালের সংসদের উচ্চকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতেও পাশ হয়ে যাবে এই ম্যাপ আপডেট বিল।

এদিকে রোববার ভারতের ‘আজতক’ হিন্দি টিভি চ্যানেলের ওয়েবসাইট জানিয়েছে, নেপাল সরকার নেপালে প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত সীমান্ত বন্ধ করে নির্দিষ্ট সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রবেশ পথ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এতদিন ভারতীয় নাগরিকরা বিনা বাধায় নিজেদের সুবিধাজনক স্থান দিয়ে নেপালে প্রবেশ করতেন। কিন্তু এবার সীমান্তের নির্দিষ্ট এলাকা দিয়েই প্রবেশের অনুমতি মিলবে।

এছাড়া মানচিত্র ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে নেপাল নিজেদের সীমান্ত এলাকায় সেনা মোতায়েনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবারই প্রথম সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিল কাঠমাণ্ডু সরকার।

যদিও ভারত মনে করছে, প্রতিবেশী বৃহৎ রাষ্ট্র চীনের উস্কানিতেই নেপাল আজ এ জাতীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সাহস পাচ্ছে। তবে ভারতের এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে নেপাল সরকার।

এই সেই মানচিত্র যা নিয়ে নেপাল-ভারত সংঘাত

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত