ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

ভারতের চাপে মানচিত্র বদলাবে না নেপাল

ভারতের চাপে মানচিত্র বদলাবে না নেপাল

ভারতের প্রবল আপত্তি অগ্রাহ্য করে নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে হিমালয়ের কোল ঘেষে দাঁড়িয়ে থাকা নেপাল। অপেক্ষাকৃত ছোট্ট এ দেশটি নয়াদিল্লিকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ভারতের চাপের মুখে তারা কিছুতেই মানচিত্রে বদলাবে না।

শুক্রবার নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার।

নতুন এই মানচিত্রে ভারত-নেপাল সীমান্তের লিমপিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখকে নেপালের অংশ বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু ভারতের দাবি, ওই তিনটি অংশই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং উত্তরাখণ্ড রাজ্যের পিথোরাগড় জেলার অন্তর্ভূক্ত। এ নিয়ে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে নেপাল। তা সত্ত্বেও তারা নিজেদের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকবে বলে শুক্রবার সাফ জানিয়ে দিয়েছে কাঠমান্ডু।

গত মে মাসে ওই বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশ করে নেপাল। তা নিয়ে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন শুরু হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গয়ালি সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে গত ২ নভেম্বর নিজেদের মানচিত্র বদল ঘটায় ভারত। তারপরই আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিই। এটা স্থায়ী সিদ্ধান্ত কারণ ওই এলাকাগুলি নেপালের মধ্যেই পড়ে। এ নিয়ে কোনও অনিশ্চয়তা নেই। তবে কোন এলাকা নেপালের মধ্যে পড়ছে, তা নিয়ে একপ্রস্থ আলোচনা হওয়া দরকার।’

সম্প্রতি লিপুলেখ গিরিপথ থেকে কৈলাস-মানস সরোবরে যাওয়ার পথ পর্যন্ত একটি রাস্তার উদ্বোধন করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তাতে প্রতিবাদ জানায় নেপাল সরকার। তারপরই ওই বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশ করে তারা। তা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানায় ভারত। এমনকি এর পিছনে চিনের উস্কানি থাকতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেয় ভারত। তাতে দু’দেশের মধ্যে উত্তাপ আরও বাড়ে।

আরও পড়তে পারেন- ভারত-নেপাল সংঘাত: পার্লামেন্টে বিতর্কিত মানচিত্র বিল

এরপর গত ৮ জুন পররাষ্ট্র সচিব স্তরে দু দেশের মধ্যে আলোচনার প্রস্তাব দেয় নেপাল। কিন্তু এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত নেপালকে কিছু জানায়নি মোদি সরকার।

তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গয়ালিবলেন,‘বিদেশ সচিব স্তরে আলোচনা চালাতে ভারতকে চিঠি দিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার জবাব পাইনি। কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চালাতে দু’দেশের দূতাবাসের পক্ষ থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’

করোনা সঙ্কটের মধ্যেই গত এক মাস ধরে লাদাখ সীমান্তে চীনা বাহিনী ও ভারতীয় সেনার মধ্যে সঙ্ঘাতের আবহ দেখা দিয়েছে। সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমন করতে দুই দেশের সেনাবাহিনী স্তরে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। এ নিয়ে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশ্ন, তাহলে কাঠমান্ডুর সঙ্গে আলোচনায় বসতে দিল্লির সমস্যা কোথায়?

তিনি বলেন, ‘সীমান্ত সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি ভারত ও চীনা বাহিনীর কমান্ডাররা আলোচনায় বসেছেন। ভারত চীনের সঙ্গে আলোচনা করে। কিন্তু বাংলাদেশ বা নেপালের মতো ছোট দেশের সঙ্গে তারা আলোচনা করতে রাজি নয় কেন?

লিপুলেখ গিরিপথ ও কৈলাস-মানস সরোবরের মধ্যে রাস্তা তৈরি নিয়ে তাদের আপত্তির পিছনে চীনা উস্কানির ভারতীয় অভিযোগও নাকচ করে দিয়েছেন নেপালের মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে নেপালই একমাত্র দেশ, যা কখনও বিদেশি ঔপনিবেশিকদের হাতে ওঠেনি। ভারত এবং চীন, দুই প্রতিবেশি দেশের সঙ্গেই আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। কারও মুখের উপরই দরজা বন্ধ করে দিতে পারে না নেপাল। ভারত ও চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে কোনও তুলনাই চলে না। কারণ ব্যবসা বাণিজ্য হোক বা সীমান্ত সংযোগ, নানা ভাবে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত ভারত ও চীন।’

তবে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গয়ালির এইসব অভিযোগ নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেনি ভারত।

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত