ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

করোনা নিয়ে কঠিন পরিস্থিতির মুখে যুক্তরাষ্ট্র: ফাউচি

করোনা নিয়ে কঠিন পরিস্থিতির মুখে যুক্তরাষ্ট্র: ফাউচি
ফাইল ফটো

যুক্তরাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতি আবারও অবনতি হতে চলেছে। দেশটির ১৬টি অঙ্গরাজ্যে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ‘মারাত্মক সমস্যায়’রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির জাতীয় এলার্জি ও সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউটের প্রধান ড. অ্যান্থনি ফাউচি।

গত দুই মাসের মধ্যে হোয়াইট হাউস টাস্ক ফোর্সের প্রথম ব্রিফিংয়ে ফাউচি বলেন, বর্তমানে কিছু অঙ্গরাজ্যে করোনাভাইরাসের বিরক্তিকর উত্থান দেখছে জাতি। তবে সামনের দিনগুলোতে এ সংক্রমণ আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। এ সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় হচ্ছে একসঙ্গে কাজ করা।

বিশ্বের করোনায় আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে আক্রান্ত ও মৃত্যুতে শীর্ষে অবস্থান করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছে এক লাখ ২৭ হাজার ৬৪০ জন। আর মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৬ জন। শুক্রবার গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৪৭ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে।

তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক অঙ্গরাজ্যে নতুন করে সংক্রমণ বেড়েছে। দেশটিতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন তরুণ জনগোষ্ঠী, যাদের বয়স ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।

এ অবস্থায় মঙ্গলবার দেশটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচি বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও একদিনে নতুন করে ৩০ হাজার আক্রান্ত হওয়ার চিত্র দেখা গেছে। এই চিত্রটা আমার কাছে খুবই কষ্টদায়ক। তবে আমরা বর্তমানে টেক্সাস, ফ্লোরিডা, আরিজোনাসহ অন্যান্য অঙ্গরাজ্যে করোনার যে ঢেউ দেখছি তা আগামী কয়েক সপ্তাহে ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে।’

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণ কমাতে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানালেও দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স যুক্তরাষ্ট্রের ‘অগ্রগতির’ প্রশংসা করেছেন।

মাইক পেন্স বলেন, প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে টাস্ক ফোর্সকে মার্কিন জনগণকে সংক্রমণ সম্পর্কে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় টেক্সাস, ফ্লোরিডা ও অ্যারিজোনায় লকডাউন শিথিল করার প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ইতোমধ্যে দেশের কমপক্ষ ২০ মিলিয়ন বা দুই কোটি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের দ্য সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) বলছে, প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, দেশে প্রকাশিত সংখ্যার কমপক্ষে ১০ গুণ বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা আরও ১০ গুণ বেশি হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ২ কোটি!

ফাউসি বলেন, বর্তমানে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে তড়িঘড়ি করে আগেভাগে সবকিছু খুলে দেওয়া। জনগণ নিয়ম মানেনি এবং খোলার সময়েও নিয়মগুলো যথাযথভাবে মানা হয়নি। একে অপরকে সংক্রমিত করছে। এতে ঝুঁকিপূর্ষ অনেকেই সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন।

দেশটির শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, দ্রুত সংক্রমণ ঠেকানো না গেলে দেশের যে অংশে সংক্রমণ কমেছে সেখানে আবার সংক্রমণ দেখা দেবে।

এর আগে গত মঙ্গলবার ফাউসিসহ স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত চার সদস্যের প্যানেল বলেছিল, নতুন মহামারি রোধে সামনের কয়েক দিন গুরুত্বপূর্ণ হবে।

এদিকে, করোনা মহামারির মধ্যেই ফের নির্বাচনী সমাবেশ পুনরায় শুরু করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। লকডাউন-পরবর্তী প্রথম নির্বাচনী ওই জনসভা গত শনিবার ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যের টালসা শহরে অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যত বেশি টেস্ট করা হতে থাকবে, তত বাড়বে করোনার সংখ্যা। এ কারণে আমি আমার সমর্থকদের বলেছি করোনা পরীক্ষা কমিয়ে দিতে।’

ট্রাম্পের এই মন্তব্যে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এর প্রেক্ষিতে ফাউসি বলেন, ‘আমার জানা মতে, আমাদের কাউকে কখনো করোনার পরীক্ষা কমিয়ে দিতে বলা হয়নি। বরং আমরা আরও বেশি বেশি নমুনা পরীক্ষা করছি।’

সূত্র: বিবিসি

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত