দুর্গাপূজার পরে ভারতে কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২০, ১৫:১০
হিন্দু বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজোর সময়ে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক হারে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও রাজ্য সরকার পুজোর উদ্যোক্তাদের বেশ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছে, কিন্তু উৎসবের আমেজে রাস্তায় বেরিয়ে পড়া সাধারণ মানুষকে দূরত্ব বিধি সহ নানা নিয়ম কতটা মানানো যাবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে সব মহলেই।
ক’দিন ধরেই সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবি ঘুরছে, যেখানে কলকাতার একটি নামী জুতোর দোকানে প্রচুর মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে।
শুধু ওই একটি দোকানে নয়, পুজোর আগে নতুন জামাকাপড় কেনার জন্য উত্তর কলকাতা থেকে দক্ষিণ কলকাতা- সব শপিং মল আর বাজারেই থিক থিক করছে মানুষ।
সামাজিক দূরত্ব বিধি মানা তো হচ্ছেই না, বরং অনেকেই মাস্ক ছাড়াই ওইসব বাজারে ঘুরছেন।
কলকাতার বাসিন্দা এক গৃহবধূ রাতুলা চ্যাটার্জী বলছিলেন, আমি পুজোর শপিং করতে বেরইনি। কিন্তু রাস্তায় যাওয়া আসার সময়ে যা দেখছি, তাতে ভয়ই হচ্ছে। নিউ মার্কেট থেকে শুরু করে গড়িয়াহাট - সব জায়গাতেই ব্যাপক ভিড়। আর মাস্ক নেই বহু মানুষের মুখেই।
যে হারে পুজোর বাজার করতে বেরচ্ছেন মানুষ, তা দেখে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা পুজোর দিনগুলোতেও দলে দলে মানুষ বেরিয়ে পড়বেন। আর তা থেকে বহু মানুষ করোনা সংক্রমিত হবেন।
আসলে লকডাউনের গোড়ার দিকে মানুষের মনে যে ভয়টা ছিল, সেটা এখন অনেকটাই কেটে গেছে। সবার মধ্যেই একটা ডোন্ট কেয়ার মনোভাব। আমার বন্ধুরাই তো পুজোর মধ্যে সবাই একসঙ্গে ঘোরার প্ল্যান করছে। আমি যাব না বলে দিয়েছি, জানাচ্ছেন মিসেস চ্যাটার্জী।
‘প্যানডেমিক ফেটিগ’
চিকিৎসকরা এই মনোভাবটাকে বলছেন ‘প্যানডেমিক ফেটিগ’ বা মহামারির অবসাদ। কলকাতার নামী চিকিৎসক ডা. কুণাল সরকার বলছিলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে একটা মহামারির পরিবেশে কাটাতে কাটাতে এরকম একটা ফ্যাটিগ (অবসাদ) আসে। তার ফলে যেটা হবে, সাবধানতায় ঘাটতি হবে, বহু মানুষ পুজো প্যান্ডেলে প্রবেশের জন্য লাইন দেবেন - গায়ে গায়ে দাঁড়িয়ে, জোরে কথা বলতে হবে, কারণ মাইক বাজবে - আর তা থেকেই এরোসল ছড়াবে। আমরা হয়তো মুখে রঙবেরঙের মাস্ক পরে থাকব, কিন্তু একই সঙ্গে সংক্রমিতও হয়ে যাব।’
তিনি আরও বলছিলেন, যারা পুজোর উদ্যোক্তা বা পুরোহিত, তারাও যে আক্রান্ত নন, তারও তো নিশ্চয়তা নেই। তাদের থেকেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
এই ধরনের ঘটনাকে ডাক্তারি পরিভাষায় 'সুপার-স্প্রেডার' বলা হয়। কলকাতার মতো ঘনবসতিপূর্ণ একটা শহরে গোটা দশেক সুপার-স্প্রেডারের ঘটনা হলে পরিস্থিতি যা দাঁড়াবে, তা থেকে মা দুর্গা তার দশ হাত দিয়েও রক্ষা করতে পারবেন বলে মনে হয় না, বলছিলেন ডা. সরকার।
দুর্গাপুজোর বাকি আর সপ্তাহ দুয়েক। কিন্তু ইতিমধ্যেই পুজোর প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে।
বেশিরভাগ উদ্যোক্তাই অন্যান্য বারের তুলনায় অনেক ছোট করে পুজো করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। অনেক বড় পুজোই এবার প্রতিমার আকারও ছোট করে দিচ্ছে।
আবার সরকারও বেশ কিছু নিয়ম বেঁধে দিয়েছে।
পুজোর ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা এবং মণ্ডপে ঢোকার আগে মাস্ক পরা এবং হাত স্যানিটাইজ করার মতো বেশ কিছু নিয়ম করেছে রাজ্য সরকার। আবার মণ্ডপগুলিও খোলামেলা রাখার কথা বলা হয়েছে। উদ্যোক্তারা বলছেন সেই সব নিয়ম তারা মানবেন, কিন্তু রাস্তায় যে লাখ লাখ মানুষ বেরিয়ে পড়বেন পুজোর দিনগুলোতে, তা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বা তাদের কীভাবে নিরাপদে রাখা সম্ভব হবে? সূত্র: বিবিসি বাংলা।
বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে
আরো পড়ুন:
> করোনায় আক্রান্ত ট্রাম্প বললেন ‘দারুন লাগছে’
> জনমত জরিপে ১৬ পয়েন্ট এগিয়ে বাইডেন
> বিরতির কয়েক ঘণ্টা পরই গোলাবর্ষণের খবর
> করোনায় সুস্থ দুই কোটি ৮১ লাখ
> যিনি মৃত্যু পথযাত্রীদের শেষ ইচ্ছা পূরণ করেন
> তুর্কী ড্রোন যেখানে যুদ্ধের কৌশল বদলে দিয়েছে
> ভারতে প্রতি ১৬ মিনিটে একজন ধর্ষিত হয়
> ট্রাম্পের করোনা-সংক্রান্ত সব তথ্য মিলছে না