ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

চরম একাকিত্বে ট্রাম্প

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২১, ১৮:৫৬

চরম একাকিত্বে ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প

জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার আগে ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউস ও ওয়াশিংটন ছেড়ে চলে গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেষ মুহূর্তে খুব বিষণ্ন আর সঙ্গীহীন ছিলেন তিনি। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির শেষ মুহূর্ত ও বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে থাকা সিএনএন-এর সাংবাদিক জিম অ্যাকোস্তা এমন তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প আগে কখনো এতটা বিষণ্ন ও একা ছিলেন না। তার আশপাশেও তেমন কেউ ছিলেন না। সিএনএন।

স্থানীয় সময় ২০ জানুয়ারি ভোরে হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি হোয়াইট হাউস থেকে মেরিল্যান্ডে অ্যান্ড্রুজ সামরিক ঘাঁটিতে যান। সেখানে তার জন্য ছোট পরিসরে একটি বিদায় অনুষ্ঠান নির্ধারিত ছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্টের বিদায় অনুষ্ঠানে তেমন কেউ ছিলেন না। সব মিলিয়ে প্রায় দুই শ মানুষ সেখানে ছিলেন। সংক্ষিপ্ত বিদায়ী ভাষণ শেষে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেষবারের মতো এয়ার ফোর্স ওয়ানে চড়ে পরিবারসহ ফ্লোরিডার পাম বিচে চলে যান।

জিম অ্যাকোস্তা বলেন, ‘ট্রাম্পের এভাবে বিদায় খুবই বেদনাদায়ক ছিল। প্রেসিডেন্ট থাকার পুরো সময়ে তাঁকে কখনো এ রকম একা থাকতে দেখিনি।’ তিনি বলেন, হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পকে যেমন দেখা গেছে, বিদায়ের সময় একদম তার উল্টো চিত্র দেখা গেছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল বাতিলের নানা প্রচেষ্টা না করলে এবং ৬ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ক্যাপিটল ভবনে তাণ্ডব না চালালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের বিদায়টা হয়তো অন্য রকম হতো। ৬ জানুয়ারি কংগ্রেস ভবনে তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় অধিকাংশ সমর্থকের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা যা অবশিষ্ট ছিল, ট্রাম্প তার পুরোটাই হারিয়ে ফেলেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কংগ্রেস ভবনে তাণ্ডব চালানোর পর হামলাকারীদের পক্ষ নিয়ে টুইট করার পর টুইটার থেকে নিষিদ্ধ করা হয় ট্রাম্পকে। এরপর তিনি আর জনসমক্ষে আসেননি। জনসমক্ষে আসেন একেবারে বিদায়ের দিন অ্যান্ড্রুজ সামরিক ঘাঁটিতে।

সেখানে তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন। প্রেসিডেন্টের বিদায়ের জন্য এটা ছিল খুবই অস্বাভাবিক একটা ব্যাপার। তাঁর সঙ্গে উল্লেখযোগ্য গণমাধ্যমকর্মীরাও ছিলেন না। এমনকি ফ্লোরিডার পাম বিচে পরিবারসহ ট্রাম্পের পৌঁছানোর ঘটনা জানাতে ফক্স নিউজ কোনো সাংবাদিক পাঠায়নি। প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলোও সেখানে হাজির হয়নি। একজন প্রেসিডেন্টের জীবনে এটা খুবই বিষাদময় দিন।

জিম অ্যাকোস্তা আরও বলেন, ‘ট্রাম্প খুব বেশি দিন এ রকম চুপ করে থাকতে পারবেন না। আমার ধারণা, এই পরিস্থিতি সাময়িক। ট্রাম্পকে এক সময় হোয়াইট হাউসে পাঠানো রাজনৈতিক শক্তি হয়তো আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে। সে সম্ভাবনাও হয়তো আছে। এ ছাড়া আমি বলতে পারি, ট্রাম্প ভবিষ্যতে এ দেশে অন্তত একটি কঠোর আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন।’

তবে অ্যাকোস্তা এ-ও বলেছেন, প্রেসিডেন্সির শেষ মুহূর্তে রেকর্ড পরিমাণ অজনপ্রিয়তার কারণে একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দেওয়া এবং নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবারও ক্ষমতায় আসার হয়তো আর কোনো সম্ভাবনা নেই ট্রাম্পের। আর যদি অভিশংসন বিচারে তিনি দোষী প্রমাণিত হন, তাহলে তার রাজনৈতিক জীবন এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারে।

অ্যাকোস্তা বলেন, ট্রাম্প মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ২২ ও ২৪তম প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করেন। গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড মাঝে এক দফা বাদ দিয়ে দুই দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ট্রাম্পও হয়তো সে রকম ভাবছেন। তবে গ্রোভার দ্বিতীয় দফা জয়ী হয়েছিলেন জনপ্রিয়তার কারণে, যা তাঁর তুলনায় ট্রাম্পের একেবারে কম। ট্রাম্প হয়তো অতটা জনপ্রিয়তা ফিরিয়ে আনতেও পারবেন না।

বাংলাদেশ জার্নাল/নকি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত