ইসরায়েলকে প্রতিশোধের হুমকি ইরানের
ইরানের নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রে আঞ্চলিক চিরশত্রু ইসরায়েল ‘নাশকতা’ চালিয়েছে দাবি করে কঠিন প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে তেহরান। সোমবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ বলেছেন, রোববার নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনা দুর্ঘটনায় ইসরায়েল জড়িত এবং এর প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে। রয়টার্স।
একদিন আগের এই ঘটনাকে ‘পারমাণবিক সন্ত্রাসবাদ’ হিসেবে অভিহিত করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। বলছে, অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার তেহরানের রয়েছে। রোববার ইরানের ইসফাহান প্রদেশের নাতাঞ্জ কাউন্টির ভূগর্ভস্থ এই পারমাণবিক কেন্দ্রে বৈদ্যুতিক গোলযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে দেশটির গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছিল।
তেহরানের সঙ্গে পাঁচ বিশ্ব শক্তির স্বাক্ষরিত ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে তিন বছর আগে বেরিয়ে যায় ওয়াশিংটন। এই চুক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করতে গত সপ্তাহে ইরান এবং বিশ্ব শক্তিগুলো বৈঠক করে। এই বৈঠক গঠনমূলক হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানানো হয়।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাভেদ জারিফ বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পথে আমাদের অগ্রগতির কারণে ইহুদিবাদীরা প্রতিশোধ নিতে চায়... তারা প্রকাশ্যে বলেছে, তারা আমাদের এটি করতে দেবে না। কিন্তু আমরা ইহুদিবাদীদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিশোধ নেবো।’এদিকে, ইসরায়েলের বেশ কিছু গণমাধ্যমে অজ্ঞাত গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ একটি সফল নাশকতা অভিযান পরিচালনা করেছে। এর ফলে সেখানে পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণের কাজ কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে ইসরায়েল নাতাঞ্জ নাশকতার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা নাতাঞ্জের বেশিরভাগ ভূগর্ভে অবস্থিত। দেশটিতে যে কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) নজরদারির অনুমতি রয়েছে, নাতাঞ্জ সেসবের একটি।
সোমবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খাতিবজাদেহ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, নাতাঞ্জের নাশকতাকে ‘মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে এতে কোনো ধরনের দূষণ কিংবা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার ঘটনার সঙ্গে ওয়াশিংটনের সংশ্লিষ্টতা নেই। এ ব্যাপারে আমাদের ধারণা করার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, আমাদের পারমাণবিক বিশেষজ্ঞরা ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন করছেন। তবে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি যে, ইরান নাতাঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সেন্ট্রিফিউজকে আরো শক্তিশালীভাবে সমৃদ্ধ করবে।
বাংলাদেশ জার্নাল/নকি