ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

জার্মানিতে টিকা না নিলে কড়াকড়ি, নানা সংকট

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭:৪৫

জার্মানিতে টিকা না নিলে কড়াকড়ি, নানা সংকট
জার্মানির একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক নাগরিক টিকা নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ছবি: ডয়চে ভেলে

জার্মানিতে সুযোগ সত্ত্বেও করোনা টিকা নিতে অস্বীকার করা লোকজনের মধ্যেই মূলত মহামারি সীমাবদ্ধ হয়ে উঠছে। ফলে সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে এমন লোকজনের ওপর চাপ আরও বাড়ছে।

কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও করোনা টিকা নিতে প্রস্তুত নন- জার্মানিতে এমন মানুষের জন্য একের পর এক বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। কোনো জটিলতা ছাড়াই বিনামূল্যে টিকা নেবার যাবতীয় সুযোগ পেয়েও জনসংখ্যার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ এখনো সেই পথে যেতে নারাজ।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেতে প্রকাশিত বৃহস্পতিবারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জনসংখ্যার ৬৩ শতাংশের কিছু বেশি অংশ টিকার সব প্রয়োজনীয় ডোজ নেবার পর সংখ্যাটা প্রায় থমকে গেছে। আবেদন-নিবেদন বা বিশাল প্রচার অভিযান চালিয়েও বাকিদের মন জয় করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা এখনও অবাস্তব থেকে যাচ্ছে।

এদিকে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের রোষের মুখে মূলত টিকা না নেয়া মানুষের মাঝে সংক্রমণের হার দ্রুত বেড়ে চলেছে। হাসপাতালেও তাদের সংখ্যাই বেশি। হেমন্ত ও শীতকালে আরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে জার্মানির স্বাস্থ্য পরিষেবা কাঠামোর উপর অহেতুক প্রবল চাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মূল্য দিতে হবে পুরো জার্মানিকে। এ পরিস্থিতি এড়াতে সরকার ও বিভিন্ন বেসরকারি সূত্র থেকে সংখ্যালঘু এ গোষ্ঠীর উপর চাপ বাড়ছে।

আগামী ১১ই অক্টোবর থেকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে করোনা পরীক্ষার জন্য টিকা নিতে অস্বীকার করা লোকজনকে মাসুল দিতে হবে। এ সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল। বুধবার ফেডারেল ও রাজ্য স্তরের স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা আরও কড়া সিদ্ধান্ত নিলেন। এতকাল করোনা ভাইরাসের কারণে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনের সময় সরকারই ভর্তুকি হিসেবে কর্মীদের বেতনের ব্যয়ভার গ্রহণ করে আসছিল। বুধবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টিকা না নেওয়া লোকজন সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।

জার্মান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান বলেন, বৃহত্তর সমাজের প্রতি ন্যায্য মনোভাব দেখাতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। যারা টিকা নিতে চান না, তাদের বিশেষ করে সেই সিদ্ধান্তের আর্থিক পরিণাম মেনে নিতে হবে। তাছাড়া ১লা নভেম্বর থেকে এ নিয়ম চালু হওয়ার আগেই করোনা টিকা নেবার সুযোগের সদ্ব্যবহার করলে কোনো সমস্যা হবে না।

সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রেও এমন মানুষের উপর চাপ বাড়ছে। জার্মানির একাধিক রাজ্যে হোটেল, রেস্তোরাঁসহ একাধিক স্থাপনা শুধু টিকাপ্রাপ্ত ও করোনাজয়ীদের প্রবেশাধিকার দিচ্ছে। অর্থাৎ দ্রুত করোনা টেস্ট করিয়ে আর সেই সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বাস্থ্য বিমার ক্ষেত্রেও করোনা টিকা নিতে অস্বীকার করা মানুষদের মাসুল বাড়ানোর প্রাথমিক উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে নতুন করে বেসরকারি স্বাস্থ্য বিমা করাতে গেলে অদূর ভবিষ্যতেই এমন শর্ত চালু করা হতে পারে।

সমাজের সংখ্যাগুরু অংশের মধ্যেও করোনা টিকা নিতে অনিচ্ছুক মানুষের প্রতি সহানুভূতির মাত্রা কমছে। জার্মানিতে করোনা টিকা বাধ্যতামূলক নয় বটে। তবে নিজের এবং অন্যদের স্বাস্থ্যের প্রতি দায়িত্বজ্ঞান না দেখালে বৃহত্তর সমাজ আর এমন মানুষের ‘স্বাধীনতা’-র পরোয়া করতে প্রস্তুত নয়। একাধিক জনমত সমীক্ষায় এমন মনোভাব স্পষ্ট হয়ে উঠছে। কিন্তু সমাজে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বেড়ে চলা সংঘাত হিংসা পর্যন্ত গড়ানোর কারণে দুশ্চিন্তা বাড়ছে।

বাংলাদেশ জার্নাল / টিটি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত