ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

ওমিক্রনে পুনঃসংক্রমণের ঝুঁকি বেশি

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২১, ১৮:২২

ওমিক্রনে পুনঃসংক্রমণের ঝুঁকি বেশি
প্রতীকী ছবি

সারা পৃথিবীতে এখন ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার এ নতুন ধরন অন্তত ৩২টি মিউটেশন (জিনগত গঠনের পরিবর্তন) ঘটিয়েছে, যার বৈজ্ঞানিক নাম বি.১.১.৫২৯।

সোমবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওমিক্রন নিয়ে বিজ্ঞানীরা যে কারণে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন তা হলো- এটি অত্যন্ত দ্রুত ও সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেইসঙ্গে এটা মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এড়াতে পারে। ফলে এর বিরুদ্ধে টিকা কম কার্যকর হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

করোনা ভাইরাস যত সহজে ছড়াবে, ততই তাতে আক্রান্তের সংখ্যাও বেশি হবে। ফলে কোভিড-১৯এ গুরুতর অসুস্থ হওয়া ও মৃত্যুর সংখ্যাও ততই বাড়তে থাকবে।

প্রাথমিক তথ্য প্রমাণে আরও দেখা গেছে, ওমিক্রনে পুনরায় সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি রয়েছে। অর্থাৎ যারা আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের সাধারণত দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হবার দৃষ্টান্ত কম হলেও ওমিক্রনের ক্ষেত্রে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়েছেন। তারা এখন কতটা নিরাপদ, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

ফাইজার, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্না, সিনোভ্যাক, স্পুটনিক ভি- এসব টিকা ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর হবে? এগুলোই ওমিক্রন নিয়ে ভয়ের কারণ। বলা দরকার যে, ভাইরাস সবসময়ই পরিবর্তিত হচ্ছে, প্রতিনিয়ত মিউটেশনের মাধ্যমে নতুন রূপ নিচ্ছে।

চীনের উহান শহরে প্রথম যে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছিল, সেই ভাইরাস এখন আর নেই। ডেল্টা আর বেটা ভ্যারিয়েন্ট তাকে হটিয়ে দিয়েছে।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে মিউটেশন ছিল ১০টি, আর বেটায় ৬টি। আর ওমিক্রনের ‘ইউনিক’ মিউটেশনের সংখ্যা এর অনেক বেশি- মোট ২৬টি। এতেই বোঝা যায় একে মোকাবিলা করা কত কঠিন হতে পারে।

ওমিক্রনের উপসর্গ অত্যন্ত মৃদু: ওমিক্রন ভাইরাস প্রথম চিহ্নিত হয় গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকায়। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই এতে আক্রান্ত ব্যক্তি চিহ্নিত হয়েছে পৃথিবীর অন্তত ১১টি দেশে।

এটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে যখন নানা দেশ নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করতে শুরু করেছে, তখন দক্ষিণ আফ্রিকার চিকিৎসকরা বলছেন, এখন পর্যন্ত ওমিক্রন নামের কোভিডের এ নতুন ধরনের সংক্রমণে রোগীদের মধ্যে খুবই মৃদু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের প্রধান এ্যানজেলিক কোয়েৎজি বিবিসিকে ওমিক্রনের লক্ষণ সম্পর্কে বলেন। তিনি বলেন, প্রথম যে আক্রান্ত ব্যক্তিকে পাই, তিনি একজন পুরুষ। বয়স ছিল ৩০-এর কোঠায়। তিনি দুইদিন ধরে প্রচণ্ড ক্লান্তি অনুভব করার কথা বলছিলেন।

তিনি বলেন, ‘তার সাথে গায়ে ব্যথা, মাথাব্যথা। তবে কোন কাশি ছিল না বা স্বাদ-গন্ধ হারিয়ে ফেলাও ছিল না। এরকম লক্ষণ আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হওয়াতে আমি তার টেস্ট করাই। তাতে তিনি এবং তার পরিবারের সবাই পজিটিভ ধরা পড়লেও পরিবারের অন্যরা ভালো ছিল। সেজন্যই আমি বলছি মৃদু উপসর্গ।’

তিনি বলেন, ‘এরপর একদিনে আমি আরও কয়েকজন রোগী দেখি। তারাও সবাই পজিটিভ ছিল। এর পরই আমি টিকা সংক্রান্ত সরকারি কমিটিকে সতর্ক করি, যার সদস্য আমি নিজেও।’

কোয়েৎজি বলেন, যদিও এখন পর্যন্ত ওমিক্রন আক্রান্তদের উপসর্গ খুবই মৃদু বলে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু দুই সপ্তাহ পর হয়তো এ চিত্রটা বদলে যেতে পারে।

ওমিক্রন বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের পরপরই বিভিন্ন দেশ তড়িঘড়ি করে দক্ষিণ আফ্রিকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

দক্ষিণ আফ্রিকার নেতারা এর সমালোচনা করেছেন। তারা অভিযোগ করছেন যে, ওমিক্রন ধরনটি আবিষ্কার করার জন্য, দক্ষিণ আফ্রিকাকে সাধুবাদ দেয়ার পরিবর্তে তাদেরকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। সূত্র: বিবিসি

বাংলাদেশ জার্নাল/ টিটি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত