ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

হোয়াইট হাউসের নথি প্রকাশ

সেনা দিয়ে ভোটযন্ত্রের দখল নিতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৩৮

সেনা দিয়ে ভোটযন্ত্রের দখল নিতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ২০২০ সালের নির্বাচনে হেরেও জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ক্ষমতায় থাকার ছক কষেছিলেন- তা আরও একবার সামনে এসেছে। হোয়াইট হাউসের এক গোপন নথি প্রকাশের প্রেক্ষিতে বিষয়টি সবার নজরে আসে। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের।

হোয়াইট হাউসে তিন পাতার একটি নির্দেশনার খসড়া তৈরি করা হয়েছিল, যেটিতে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য অবিলম্বে সব মেশিন, সরঞ্জাম, বৈদ্যুতিকভাবে সংরক্ষিত তথ্য এবং নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করতে বলা হয়েছিল প্রতিরক্ষা সচিবকে। ঘটনাচক্রে ২০২০-র ১৬ ডিসেম্বরের সেই নির্দেশে শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের স্বাক্ষর করা হয়নি।

নির্দেশনাটিতে ভোট সংক্রান্ত যন্ত্র-সরঞ্জাম ও তথ্য কব্জায় নেয়ার কথা বলা হয়েছে স্পষ্টভাবে। মনে করা হচ্ছে, মার্শালদের দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি প্রদেশের ব্যালট ‘পুনর্গণনার জন্য’ বাজেয়াপ্ত করার পরিকল্পনা করছিল ট্রাম্প প্রশাসন।

বিশেষ নিশানায় ছিল ব্যালট চিহ্নিত করার টাচ-স্ক্রিন মেশিনগুলোও। এখানেই শেষ নয়, ভোটের যন্ত্র-নথি-তথ্য বাজেয়াপ্ত করলে অভিযোগের ঝড় ওঠা নিশ্চিত বুঝে তার মোকাবিলায় আগেভাগেই একজন বিশেষ আইনজীবী নিয়োগের কথাও বলা হয়েছিল ওই খসড়ায়।

ইভিএমে যে কারচুপি হয়, নানাভাবে তা স্পষ্ট হয়ে ওঠায় বৈদ্যুতিক ভোটযন্ত্রের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে কাগজের ব্যালটও ব্যবহার হয়। কিন্তু সেই কাগজের ব্যালট গোনা থেকে শুরু করে ভোটারদের স্বাক্ষর যাচাই- বিভিন্ন পর্যায়ে বৈদ্যুতিক যন্ত্রের ব্যবহার কিন্তু চলেই আসছে। ফলে ট্রাম্প-বাহিনী একবার সেসব যন্ত্র কব্জা করার সুযোগ পেলে হয়তো জো বাইডেনের প্রেসিডেন্ট হওয়াই হত না। পরে ২০২১-এ ক্যাপিটল হিলে হামলায় ইন্ধন জুগিয়ে ক্ষমতার হস্তান্তর ঠেকানোর চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্প। যে কারণে তাকে অভিশংসিত হতে হয়েছে।

বিস্ফোরক খসড়া-নির্দেশটির প্রকাশ রোখার জন্য ট্রাম্প অনুগামীরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তাদের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। ফলে ক্যাপিটল হিলে হামলার তদন্ত করেছে যারা, সেই মার্কিন প্রতিনিধিসভার সিলেক্ট কমিটির হাতে চলে এসেছে ৭৫০টিরও বেশি রেকর্ড। তিন পাতার খসড়াটি তার অন্যতম। এটি প্রকাশ করেছে ভার্জিনিয়ার রাজনৈতিক সংবাদ পরিবেশন সংস্থা ‘পলিটিকো’।

ট্রাম্পকে ক্ষমতায় রাখার পথ কী হতে পারে, একটা পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে তার পথ বাতলেছিলেন হোয়াইট হাউসের তৎকালীন চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডোজ। গত বছর তা সিলেক্ট কমিটির হাতে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, মার্কের ছকের সঙ্গে সদ্য প্রকাশ হওয়া খসড়া নির্দেশের মিল রয়েছে।

২০২০-র ভোট বাতিলের জন্য চেষ্টা হয়েছে অন্যভাবেও। কয়েক মাস ধরে আইনজীবী সিডনি পাওয়েল, নিউ ইয়র্কের প্রাক্তন মেয়র রুডি জুলিয়ানির মতো ট্রাম্প ঘনিষ্ঠরা প্রচার করে যাচ্ছিলেন, ভোট-মেশিন হ্যাক করা হয়েছে।

ভেনিজুুয়েলা, কিউবা এবং সম্ভবত চিনের মাধ্যমে কমিউনিস্টরা যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে অর্থ ঢেলেছে। যদিও ট্রাম্প নিযুক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল বিল ব্রার-ই ভোটে বিদেশি প্রভাব ও কারচুপির সেসব অভিযোগ খারিজ করে দেন এবং ক্যাপিটল হিলে হামলার সূত্রে ইমপিচ করা হয় ট্রাম্পকে।

সিডনি-রুডিদের দাবি ছিল, জর্জিয়াতে ব্যবহৃত টাচ-স্ক্রিন ব্যালট মার্কিং মেশিন যারা তৈরি করেছে, সেই সংস্থাগুলোতে বিদেশি মালিকানার ভাগ ও বিদেশের প্রভাব যথেষ্ট। লাগাতার এ প্রচারের বিরুদ্ধে ‘ডোমিনিকান’ ও ‘স্মার্টম্যাটিক’ নামে দু’টি সংস্থা কয়েকশো কোটি ডলারের মানহানির মামলা ঠুকেছে সিডনি ও রুডির বিরুদ্ধে।

সিলেক্ট কমিটিও তদন্ত চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সামনে আসা খসড়া নির্দেশে ওই টাচ-স্ক্রিন যন্ত্রগুলোকেই নিশানা করার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ টিটি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত