ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

ভারতে বর্তমান নেতা, দল ও জোট বিজেপিকে হটাতে পারবে না

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৫:৩৭

ভারতে বর্তমান নেতা, দল ও জোট বিজেপিকে হটাতে পারবে না
ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। ছবি: আনন্দবাজার অনলাইন

ভারতের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে যদি গেরুয়া ঝড় ওঠে, তারপরও আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারানো অসম্ভব, এমনটা নয়। কিন্তু বর্তমানে যে সব বিরোধী দল এবং রাজনৈতিক জোট রয়েছে, তাদের দ্বারা সেই কাজ সম্ভব না-ও হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। তার মতে, বিজেপিকে হারাতে বিরোধী দলগুলোর সম্মিলিত সামাজিক ভিত আরও প্রসারিত করা প্রয়োজন। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের।

মঙ্গলবার এক টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পিকের এ মন্তব্য ভারতের রাজনীতির জগতে নতুন গুঞ্জন উসকে দিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, গত কয়েক মাসে পিকে-র ধারাবাহিক বিবৃতি এবং পদক্ষেপগুলো নিয়েও।

কয়েক মাস আগেই পিকে বলেছিলেন, মোদি থাকুন বা না থাকুন, বিজেপি ভারতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থেকে যাবে। তখনও তার মন্তব্যকে ঘিরে যথেষ্ট বিতর্ক এবং ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছিল।

মঙ্গলবার পিকে বলেন, ‘২০২৪-এ বিজেপিকে কি হারানো সম্ভব? আমি এর উত্তরে জোর দিয়ে বলতে চাই, অবশ্যই সম্ভব। কিন্তু বর্তমানের নেতা, দল এবং তাদের যা জোট রয়েছে, তারা কি পারবে বিজেপিকে হটাতে? সম্ভবত না।’

তত্ত্বগতভাবে আসন্ন বিধানসভা ভোটগুলোতে বিজেপি জিতলেও ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে তাদের ক্ষমতাচ্যুত করা সম্ভব বলেই মনে করেন পিকে। উদাহরণ হিসাবে ২০১২ সালে বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা ভোটের কথা তোলেন তিনি।

তার কথায়, ‘২০১২ সালে উত্তরপ্রদেশের ভোটে জিতে এসপি। কিন্তু তা সত্ত্বেও ২০১৪-র লোকসভা জিতে নেয় বিজেপি।’

পিকের মতে, বিজেপিকে হারানোর জন্য যিনি বা যারাই চেষ্টা করুন না কেন, তার বা তাদের পাঁচ থেকে দশ বছরের কাজ ও চিন্তাভাবনা থাকতে হবে। পিকের হিসাব, অ-বিজেপি দল শাসিত রাজ্যগুলোর মোট লোকসভা আসন সংখ্যা বর্তমানে ২০০টি। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকাকালেও বিজেপি এই ২০০টির মধ্যে ৫০টির বেশি আসন জেতেনি।

তার বক্তব্য, এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস কিংবা অন্য কোনও দল বা অক্ষ যদি নিজেদের কৌশল, সম্পদ নতুন করে গুছিয়ে নিয়ে মাঠে নামে এবং ওই ২০০টি আসনের মধ্যে ১০০টির মতো বার করে আনতে পারে, তা হলে বিরোধী শক্তির পক্ষে আড়াইশোতে পৌঁছনো সম্ভব। তবে তার মতে, সব বিরোধী শক্তির সম্মিলিত যে সামাজিক ভিত্তি এই মুহূর্তে রয়েছে, তা অনেকটাই বাড়াতে হবে। সে যাদব বা অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির হোক কিংবা দলিত বা উচ্চ বর্ণের ভিত।

অনেকের মতে, পিকে-র এই হিসাব এবং ভোট ধারণা গত কয়েক মাসে কয়েক বার বদলাতে দেখা গেছে। তারই পরামর্শে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গোয়ায় গিয়ে বিজেপির সঙ্গে একইভাবে সরাসরি কংগ্রসকে আক্রমণ করতে শুরু করেছিলেন।

রাজনীতির বিশ্লেষকেরা মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে বিপুলভাবে হারানোর পর বিভিন্ন রাজ্যে দলের সম্প্রসারণের তত্ত্বও পিকেরই তৈরি করা। কবে কংগ্রেস কোনও রাজ্যে তাদের পুরনো শক্তি ফিরে পাবে, তার অপেক্ষায় না থেকে তৃণমূল তার সংগঠন বাড়ানোর কাজ শুরু করে দিক- পিকে এমন পরামর্শই দিয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর।

রাজনৈতিক সূত্র বলছে, পিকে নিজে কংগ্রেসে যোগ দেয়ার জন্য তাদের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। পিকে এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সেই আলোচনার কথা স্বীকার করেছেন সম্প্রতি।

সূত্রের মতে, নিজের ভোট-পেশাদারদের নিয়ে কংগ্রেসে ঢুকে নির্বাচনের দায়িত্ব সামলাতে চেয়েছিলেন পিকে, কংগ্রেস হাইকমান্ড যা মেনে নেয়নি। পরবর্তী কৌশল হিসেবে পিকের বর্তমান সূত্রটি হল- বিরোধীদের সম্মিলিত চওড়া সামাজিক ভিতই হতে পারে বিজেপিকে হারনোর অস্ত্র। সম্ভবত তাই, গোয়ায় আক্রমণের পরও তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব, কংগ্রেসকেই বার্তা দিচ্ছেন জোট গড়ে লড়ার জন্য।

বাংলাদেশ জার্নাল/ টিটি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত