যুদ্ধকে বর্বরতার নতুন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন পুতিন: যুক্তরাষ্ট্র
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:২১ আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯:৪৮

ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে যুদ্ধকে বর্বরতার নতুন মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একই সাথে তিনি ইউক্রেনের সাথে শান্তি আলোচনার ব্যাপারে আন্তরিক নন বলে মন্তব্য করেন একজন শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক।
|আরো খবর
শনিবার মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড কিয়েভে সিনিয়র ইউক্রেনীয়দের সাথে দেখা করার সময় এই মন্তব্য করেন।
নুল্যান্ড বলেন, পুতিন এই যুদ্ধটিকে প্রতিটি ইউক্রেনের বাড়িতে নিয়ে গেছেন, যেখানে বিদ্যুৎ এবং পানি বন্ধ করার চেষ্টা করছেন। এর মাধ্যমে পুতিন যুদ্ধক্ষেত্রে যা করতে পারেননি তা অর্জন করার চেষ্টা করছেন বলে অভযোগ করেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কূটনীতি অবশ্যই সবার উদ্দেশ্য কিন্তু আপনার একজন ইচ্ছুক অংশীদার থাকতে হবে। তবে এটি খুব স্পষ্ট, পুতিন এর জন্য আন্তরিক বা প্রস্তুত নন।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, রুশ নেতা যুদ্ধ শেষ করতে আগ্রহী হলে তিনি পুতিনের সাথে কথা বলতে প্রস্তুত। কিন্তু বাইডেনের এই পরিকল্পনা বেশ দ্রুতই গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে যখন ক্রেমলিন জানায়, পশ্চিমাদের অবশ্যই মস্কোর চারটি ইউক্রেনীয় অঞ্চলের রুশ অধিগ্রহণকে স্বীকৃতি দিতে হবে।
এদিকে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা নুল্যান্ডের মন্তব্যের জন্য দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
সার্বিয়াতে ১৯৯৯ সালের হামলার দিকে ইঙ্গিত করে জাখারোভা টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলেন, বিশ্বকে শেখানো প্রয়োজন নেই যে, যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বড় বিদ্যুৎ নেটওয়ার্ক ধ্বংস করেছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোর সম্মিলিত জোট। তিনি বলেন, সার্বিয়ায় হামলার সময়, যুদ্ধবিমান ৭০ শতাংশেরও বেশি এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয় ন্যাটো।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাজধানী কিয়েভসহ ১৫টি অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ নিয়ে ‘সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি’ দেখা দিয়েছে। প্রায় ১০ লাখ মানুষ এখনও বিদ্যুৎ ও পানির অভাবে রয়েছে।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে। মূলত, ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম রেল ও সড়ক সেতুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে গত ৮ অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের জ্বালানি নেটওয়ার্ক ও অবকাঠামোগুলোতে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া।
এর মধ্যে গত মাসে অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের বৃহত্তম বন্দরনগরী সেভাস্তোপলের কাছে কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর বেশ কয়েক দফায় ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনা লক্ষ্য করে রাশিয়া কার্যত ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টি চালায়।
বিবিসি বলছে, যুদ্ধ শুরুর পর গত সপ্তাহেই ইউক্রেনে সবচেয়ে ভারী বিমান হামলা চালায় রাশিয়া। ওই হামলায়ও ইউক্রেনীয় জ্বালানি অবকাঠামো এবং বেসামরিক ভবনগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিলো।
দেশটির পাওয়ার অপারেটর ইউক্রেনারগো বলেছে, মূল অবকাঠামো ঠিক করার অগ্রাধিকার থাকলেও এগুলোর মেরামত এখন আরও বেশি সময় নিচ্ছে।
সূত্র: আলজাজিরা, রয়টার্স
বাংলাদেশ জার্নাল/এমআর