ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

আধুনিক স্থাপত্যকলার অনন্য নিদর্শন

৫১ বছরে সিডনি অপেরা হাউজ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৩, ২৩:০৬

৫১ বছরে সিডনি অপেরা হাউজ
সিডনি অপেরা হাউজ

বিশ্বজুড়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রতীকী স্থাপনা হিসেবে পরিচিত সিডনি অপেরা হাউজ। প্রতি বছর কোটি কোটি পর্যটকের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে আধুনিক স্থাপত্যকলার এ নিদর্শন। আজ শুক্রবার (২০ অক্টোবর) ৫০ বছর পার করে ৫১ বছরে পা রেখেছে সিডনি অপেরা হাউজ।

বৈশ্বিক অর্থ ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করা সংস্থা ডেলয়েটের মতে, এ স্থাপনার সাংস্কৃতিক মূল্য প্রায় এক হাজার ১০৪ কোটি ডলার। যা ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ার ও যুক্তরাষ্ট্রের এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের মতো আইকনিক স্থাপনা।

১৯৭৩ সালের ২০ অক্টোবর সিডনি অপেরা হাউজ উদ্বোধন করেন ইংল্যান্ডের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। গত পঞ্চাশ বছরে কোটি কোটি দর্শকের নজর কেড়েছে শিল্পকলা প্রদর্শনের বহুমুখী এ মঞ্চ।

সিডনি অপেরা হাউজে অনুষ্ঠান দেখতে প্রতি বছর অন্তত ১০ লাখ দশনার্থী ভিড় জমান। আর যারা একবার সিডনি সফরে যান, তাদের অন্যতম লক্ষ্য থাকে স্থাপনা একবার দেখা আসা। ২০০৭ সালে এ স্থাপনাকে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সিডনি অপেরা হাউস নির্মাণের উদ্দেশ্যে ১৯৫৭ সালে একটি নকশা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ২৩৩টি নকশার মধ্য থেকে বাছাই করা হয় ড্যানিশ স্থপতি জর্ন উটজনের নকশাটি এবং তাঁকে দেওয়া হয় মূল নকশা প্রণয়নের দায়িত্ব।

অপেরা হাউসটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৫৯ সালে। ১৯৬৩ সালের ২৬ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়া দিবসে উদ্বোধন করা হবে বলে ঘোষণা করা হলেও এর নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৯৭৩ সালে। ১৯৫৭ সালে অপেরা হাউসটির নির্মাণ ব্যয় ধরা ছিল ৭ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু প্রকল্পটি ১০ বছর বিলম্বিত হওয়ায় এর জন্য সরকারের ব্যয় হয় ১০২ মিলিয়ন ডলার।

প্রকল্পটি ব্যয়বহুল হয়ে উঠলে এবং উটজনের নকশায় কিছু ত্রুটি ধরা পড়লে নিউ সাউথ ওয়েলস সরকারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ফলে ১৯৬৬ সালে তিনি প্রকল্পের কাজ ফেলে চলে যান। পরবর্তী সময়ে পিটার হল নামের এক স্থপতির অধীন অবশিষ্ট কাজ সমাপ্ত করা হয়।

প্রশান্ত মহাসাগরের পাড়ে প্রায় সাড়ে চার একর জায়গার ওপর নৌকার পাল আকৃতি স্থাপনাটি নির্মাণ করা হয়। স্থাপনাটির দৈর্ঘ্য ৬০০ ফুট ও প্রস্থ ৩৯৪ ফুট। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে স্থাপনাটির সর্বোচ্চ স্থানটির উচ্চতা ২১৩ ফুট, যা প্রায় ২২ তলা ভবনের সমান উঁচু।

সিডনি অপেরা হাউসকে বহুমুখী শিল্পকলা প্রদর্শনের মঞ্চ বলা যেতে পারে। এর মধ্যে আছে একাধিক মিলনায়তন ও অনুষ্ঠানের স্থান। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশে আছে কনসার্ট হল। এর ধারণক্ষমতা প্রায় ২ হাজার ৭০০ জন। এ ছাড়া এতে আছে ১ হাজার ৫০৭ আসনের অপেরা থিয়েটার, ৫৪৪ আসনের ড্রামা থিয়েটার, ৩৯৮ আসনের প্লে হাউস ও ৪০০ লোক একসঙ্গে কাজ করার মতো একটি স্টুডিও। খাবার জায়গা ও কেনাকাটার জন্য বেশ কিছু দোকানও আছে সেখানে।

সিডনির অপেরা হাউসে প্রতিবছর তিন হাজারের বেশি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এসব অনুষ্ঠানে প্রায় ২০ লাখ দর্শকের আগমন ঘটে। এ ছাড়া অপেরা হাউসের বাইরে প্রতিদিন নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রতিবছর প্রায় ৮০ লাখ পর্যটক শুধু এ স্থাপনা দেখতে সিডনিতে যান। ২০০৭ সালে স্থাপনাটিকে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

স্থাপনা শিল্পকলার নান্দনিক প্রতীকটি সিটি অব কালারস-নামে পরিচিত সিডনির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এ শহরে সারাবছরই কোনো না কোনো উৎসব লেগে থাকে। আর এসব উৎসবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সিডনি অপেরা হাউজের দেয়ালে ও ছাদে খেলা করে বিভিন্ন রঙের আলো।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত