ঢাকা, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ আপডেট : ৩৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

হামাসকে ইসরায়েলের হুমকি, রাফাহতে বহু প্রাণনাশের আশঙ্কা

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৪, ১৪:৪১

হামাসকে ইসরায়েলের হুমকি, রাফাহতে বহু প্রাণনাশের আশঙ্কা
ফাইল ছবি। 

যুদ্ধবিরতির চুক্তি মেনে নিতে হামাসকে ৭ দিনের সময় ধরে দিয়েছে ইসরায়েল। এর অন্যথা হলে, গাজার রাফাহতে হামলা শুরু করবে বলে হুমকি দিয়েছে তেল আবিব। মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল শুক্রবার (৩ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। বিদেশে অবস্থানরত হামাসের নেতাদের হাতে চুক্তির প্রস্তাব তুলে দেয়া হয়েছে বলেও জানায় পত্রিকাটি।

এদিকে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা বলেছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহয়ে ইসরায়েল যদি সামরিক হামলা চালায় তাহলে হাজার হাজার মানুষ 'মৃত্যুর আসন্ন ঝুঁকিতে' থাকবে।

জানা গেছে, চুক্তিটি তৈরি করেছে মিসর। চুক্তিতে সম্মত হতে হামাসকে আগামী শুক্রবার (১০ মে) পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইসরাইল। তবে গাজায় অবস্থানরত হামাসের প্রভাবশালী নেতা ইয়াহিয়া সিনাওয়ার এখনো প্রস্তাবটি সম্পর্কে কোনো কিছু জানাননি। তার কাছে নতুন প্রস্তাবটি পৌঁছেছে কি না সে বিষয়টিও স্পষ্ট নয়। কারণ জ্যেষ্ঠ নেতাসহ অন্যান্য বড় নেতারা গাজার বিভিন্ন সুড়ঙ্গে অবস্থান করছেন।

এই আল্টিমেটাম কবে দেয়া হয়েছে সেটি স্পষ্ট করে জানায়নি ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল। তবে প্রতিবেদনটিতে এক মিসরীয় কর্মকর্তার শুক্রবারের বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কয়েক মাস ধরেই রাফাহতে হামলার হুমকি দিয়ে আসছেন।

হামাসের কাছে চুক্তির যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এতে বলা হয়েছে, প্রথম ধাপে ৪০ দিন যুদ্ধ বন্ধ থাকবে। এই সময়ের মধ্যে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। প্রথম ধাপের পর দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে। ওই সময় অন্তত ছয় সপ্তাহ যুদ্ধ বন্ধ থাকবে এবং দ্বিতীয় ধাপে আরো বেশি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। এরপর যদি দুই পক্ষ চায় তাহলে যুদ্ধ আরো এক বছর বন্ধ থাকবে।

বিদেশে অবস্থানরত হামাসের নেতারা বোঝার চেষ্টা করছেন চুক্তিটিতে আসলে কি বলা হয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে কি যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ হবে কিনা সে বিষয়টি বিবেচনা করছেন তারা। এ ছাড়া তাদের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে, চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেই গাজায় আবারও বর্বরতা শুরু করবে ইসরায়েলি সেনারা। ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, মিসর ও ইসরায়েলের তৈরি এ চুক্তি প্রত্যাখ্যান করার বদলে হামাস নতুন প্রস্তাব দেবে।

এদিকে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা বলেছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহয়ে ইসরায়েল যদি সামরিক হামলা চালায় তাহলে হাজার হাজার মানুষ 'মৃত্যুর আসন্ন ঝুঁকিতে' থাকবে।

সীমান্ত শহরটি মানবিক সহায়তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ। এই অংশে অসংখ্য বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় নিয়েছেন, যেখানে ঘনবসতিপূর্ণ তাঁবু রয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) রাতে রাফাহয়ে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৭ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই শিশু।

এ দিকে বাইডেন প্রশাসন বলছে, বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় ইসরায়েল 'বিশ্বাসযোগ্য' পরিকল্পনা না দিলে তারা রাফাহ আক্রমণের বিরোধিতা করবে। উল্লেখ্য, ইসরায়েলকে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও কূটনৈতিক সহায়তা দিয়ে থাকে বাইডেন প্রশাসন।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রধান সিন্ডি ম্যাককেইন বলেছেন, গাজার উত্তরাঞ্চলে 'পূর্ণাঙ্গ দুর্ভিক্ষ' চলছে। আর জাতিসংঘ ও অন্যরা বলেছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের কারণে গাজার ২৩ লাখ জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি শহর ও নগরে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। গাজায় মৃতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ৫০০ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত