ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

ছড়িয়ে আছে খাশোগির টুকরো টুকরো দেহাংশ

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০১৮, ০০:১৫  
আপডেট :
 ২৫ অক্টোবর ২০১৮, ০০:২৪

ছড়িয়ে আছে খাশোগির টুকরো টুকরো দেহাংশ

খুন হওয়ার ২১ দিন পর ইস্তানবুলের সৌদি কনসালটেন্স জেনারেলের বাড়িতে জামাল খশোগির দেহ টুকরো টুকরো দেহাংশের খোঁজ মিলেছে।

এক ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, খাশোগির মাথাটি কেটে নিয়ে এমনভাবে তা বিকৃত করা হয়েছে চেনাই যায় না। দেহের বাকি অংশ টুকরো টুকরো আকারে মিলেছে বাগানে ও কুয়োয়। এ দিকে সৌদি যুবরাজের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন খাশোগি-পুত্র।

খাশোগি দেহাংশের খবর সামনে আসার কিছু আগেই খাশোগি-খুনে জড়িত সন্দেহে যে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সৌদি প্রশাসন। ইস্তানবুলে তাদের বিচারের দাবি জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এর্দোয়ান। এই খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই নাম উঠে এসেছে সৌদি যুবরাজের মুখ্য পরামর্শদাতা, সৌদ আল-কাহতানির নাম। বছরখানেক আগে তিনি টুইট করেছিলেন, আমি সৌদি রাজ পরিবারের আজ্ঞাবহ কর্মচারি মাত্র। তাদের নির্দেশ ছাড়া আমি এক পা-ও চলি না। সৌদি যুবরাজের মুখ্য পরামর্শদাতা, সেই সৌদ আল-কাহতানিকেই খাশোগি খুনের মূলচক্রী বলে মনে করছেন তুর্কি তদন্তকারীদের একাংশ। তাদের দাবি, রিয়াধ থেকে কাহতানিই স্কাইপে হিট-স্কোয়াডকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ওই কুকুরটার মুণ্ডু কেটে আনো।

সৌদি প্রশাসনের দাবি, ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি কনসুলেটে ওই খুনের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন। এখতিয়ারের বাইরে গিয়েই সেদিন ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে ১৫ জনের স্কোয়াড।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান যদিও বিঁধছেন সৌদি রাজ পরিবারকেই। তার দাবি, বেশ কয়েক দিন ধরে খুনের ছক কষা হয়েছিল। পার্লামেন্টে দলীয় বৈঠকে এর্দোয়ান বলেন, এই রাজনৈতিক খুনের দায় শুধু স্কোয়াডের ঘাড়ে চাপালে হবে না। কার নির্দেশে এমনটা ঘটল, সেটা জানতেই হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চাইছেন, সব সত্যি সামনে আসুক। তিনি এ-ও জানান যে, সৌদি রাজা এবং যুবরাজ নিজে তাকে বলেছেন এই ব্যাপারে তারা কিছু জানতেন না। কিন্তু তদন্তে যদি রাজ পরিবারের যোগ প্রমাণিত হলে তিনি চূড়ান্ত হতাশ হবেন।

প্রশাসন আ়ড়াল করার চেষ্টা করলেও, সাংবাদিক খুনে সৌদি রাজ পরিবার কিন্তু ক্রমশ জড়িয়েই পড়ছে। বিশেষত, কাহতানির ওই স্কাইপ-নির্দেশ সামনে আসার পরে। ব্লগ লেখার সূত্রে রাজ পরিবারের চূড়ান্ত অনুগত হিসেবে ২০০০-এর গোড়ায় সৌদি প্রশাসনের নজরে আসেন বছর চল্লিশের এই কাহতানি। রাজ পরিবারের ভাবমূর্তি রক্ষায় তখন আস্ত একটা বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের দায়িত্বও দেওয়া হয় তাঁকে। তার পর থেকে যুবরাজের ডান হাত হিসেবে শুধুই উত্থান। কাহতানির বাড়বাড়ন্ত গত বছর অন্তত দু’টি ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে যায়। এক, পদত্যাগকারী লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ আল-হারিরিকে অপহরণ করে রিয়াধে আটকে রাখা। দুই, দুর্নীতির অভিযোগে নেতা-মন্ত্রী-রাজকুমার থেকে শুরু করে দেশ জুড়ে ব্যাপক ধরপাক়ড়।

খাশোগি খুনে জড়িত সন্দেহে কাহতানিকে বহিষ্কার করেছে সৌদি প্রশাসন। পরে শোনা যায়, তাকে আটক করাও হয়েছে। কিন্তু আঙ্কারার দাবি, সৌদি যুবরাজের সোশ্যাল মিডিয়া ব্রিগেডেরও প্রধান কাহতানি এখনও দিব্যি টুইট করে চলেছেন। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, খাশোগিকে খুনের পরে চারটে ফোন যায় যুবরাজের অফিসে। ওই স্কোয়াড-সদস্যকে চিহ্নিতও করা গিয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে খাশোগির এক ‘বডি ডাবল’-কেও ফাঁস করেছে সংবাদমাধ্যম। এর্দোয়ান যদিও দাবি করেছেন, সৌদি হিট স্কোয়াড অনেক তথ্য-প্রমাণ মুছে ফেলেছে। দিন কয়েক আগে থেকে কনসুলেটের ক্যামেরা-সিস্টেমের হার্ড ডিস্ক খুলে ফেলা হয়েছিল।

এরই মধ্যে রিয়াধে শুরু হয়েছে ৩ দিনের বিনিয়োগ সম্মেলন। সেখানে যোগ দেয়নি গোল্ডম্যান স্যাক্স অ্যান্ড জেপি মর্গ্যান, উবের। শেষ মুহর্তে সরে দাঁড়িয়েছেন আইএমএফ-প্রধান ক্রিস্টিল ল্যাগার্ড। চাপ বাড়াচ্ছে ব্রিটেন-ফ্রান্স-জার্মানি। রিয়াধকে অস্ত্র রফতানি করবেন না বলে জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত