ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

ট্রাম্পের একগুয়েমিতে অচল হচ্ছে মার্কিন সরকার

ট্রাম্পের একগুয়েমিতে অচল হচ্ছে মার্কিন সরকার

মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের অর্থায়ন নিয়ে হোয়াইট হাউস ও কংগ্রেস সদস্যদের মতবিরোধে জের ধরে আংশিকভাবে অচল হতে চলেছে মার্কিন কেন্দ্রীয় সরকার। শনিবার থেকে এ অচলাবস্থা কার্যকর হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি ও রয়টার্স।

এর আগে সিাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ও একবার সরকার অচল হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল।

গত সপ্তাহে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ আগামী বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারের সব বিভাগের জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দের একটি বিল অনুমোদন করেছিল।

মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না থাকায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিলটিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি ওই বাজেট বিলে দেয়াল নির্মাণের জন্য অতিরিক্ত ৫৭০ কোটি ডলার অন্তর্ভূক্তির দাবি জানিয়েছিলেন।

প্রেসিডেন্টের এ চাহিদার সঙ্গে পার্লামেন্ট সদস্যদের মতবিরোধের কারণে সরকার অচলের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

এ দফার অচলাবস্থা স্বরাষ্ট্র, যাতায়াত, কৃষি, পররাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় এবং ন্যাশনাল পার্ক অ্যান্ড ফরেস্ট বিভাগের লাখ লাখ কর্মীকে বেকার করবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকান আধিপত্য থাকার পরও দেয়াল নির্মাণে পর্যাপ্ত বরাদ্দ না পেয়ে ট্রাম্পের ক্রুদ্ধ হওয়ার পেছনে ভয়ও কাজ করছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

মধ্যবর্তী নির্বাচনে জিতে ডেমোক্রেটরা প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ফিরে পাওয়ায় আগামী বছরের শুরু থেকে নিম্নকক্ষে যে কোনো বিল অনুমোদন করাতে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বেশ বেগ পেতে হবে।

হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে অনুমোদন পাওয়ার পর প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের জন্য বাজেট বিলটিকে সিনেট ঘুরে যেতে হবে, সেখানে পেতে হবে ন্যুনতম ৬০ ভোট। উচ্চকক্ষে রিপাবলিকানরা সামান্য ব্যধানে সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় বাজেট অনুমোদনে ডেমোক্রেট সিনেটরদেরও সায় লাগবে।

শুক্রবার এ নিয়েই দিনভর উত্তেজনা চলে ক্যাপিটল হিলে। ডেমোক্রেটরা যদি সহায়তায় রাজি না হয়, তাহলে কেন্দ্রীয় সরকারের অচলাবস্থা ‘দীর্ঘদিন ধরে চলতে পারে’বলেও সতর্ক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

টুইটারে মেক্সিকো সীমান্তে নির্মাণ করতে চাওয়া দেয়ালটির একটি নকশাও দিয়েছেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে সীমান্তে ওই দেয়াল নির্মাণ এবং এর খরচ মেক্সিকোর কাছ থেকে আদায়েরও প্রতিশ্রুতি ছিল তার। মেক্সিকো শুরু থেকেই দেয়াল নির্মাণের অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

ডেমোক্রেট আইনপ্রণেতারাও বলছেন, মার্কিন জনগণের করের টাকায় ট্রাম্পকে দেয়াল নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না।

শুক্রবার একেবারে শেষ মুহুর্তে কংগ্রেস সদস্যরা অচলাবস্থা কাটাতে একটি সমঝোতায় আসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।

শনিবার এ নিয়ে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে ফের আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জটিলতা এড়াতে ট্রাম্প সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের নেতা মিচ ম্যাককনেলকে ‘নিউক্লিয়ার অপশন’ নামে একটি প্রক্রিয়া চালুর আহ্বান জানান।

এটি চালু হলে সিনেটে বিল পাসের ক্ষেত্রে ৬০ ভোটের বিধান উঠে যাবে। তখন যে কোনো বিষয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনেটরদের মতই তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা যায়।

রিপাবলিকান সিনেটরদের কয়েকজনও ট্রাম্পের দেয়াল নির্মাণের বিরোধী হওয়ায় শনিবারই অচলাবস্থার মীমাংসা হচ্ছে না।

এর আগে ওবামার সময় ২০১৩ সালে সিনেটে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের মতবিরোধের কারণে অচল হয়ে পড়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকার এবং বন্ধ হয়ে পড়েছিল সেবা খাত। ১৬ দিন পর্যন্ত ওই অচলাবস্থা বজায় ছিল। এতে প্রায় সাড়ে আট লাখ কর্মচারী কাজে যাননি এবং সরকারের ২০০ কোটি ডলারের উৎপাদনশীলতার ক্ষতি হয়।

বিল ক্লিনটন প্রেসিডেন্ট থাকার সময়ও ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে দু'বার এমনটি হয়েছিল। সরকারের কর্মচারীরা এ সময়টায় বিনা বেতনে ছুটি পান।

সূত্র: বিবিসি

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত