ব্রাজিলে শপথ নিয়েই সমাজতন্ত্র হঠানোর ঘোষণায় বোলসোনারো
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন দেশটির কট্টর ডানপন্থী নেতা জাইর বোলসোনারো। আর শপথ নেয়ার পর জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি দেশকে সমাজতন্ত্র রাজনৈতিক ধারণা থেকে মুক্ত করার ঘোষণা দেন।
গত ২৮ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করেন ‘ব্রাজিলের ট্রাম্প’ খ্যাত সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা। ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রমে ক্ষুব্ধ ভোটাররা এই চরম ডানপন্থী নেতার প্রতি সমর্থন জানিয়ে তাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেন।
শপথ গ্রহণের পর কংগ্রেসে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, বৈষম্যহীন সমাজ গড়াই তার প্রধান লক্ষ্য। এছাড়া, দেশকে দুর্নীতি, অপরাধ এবং অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা থেকে মুক্ত করতে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। এই ভাষণে সমাজতন্ত্রের আদর্শিক ভাবনা থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন জাইর বোলসোনারো।
ব্রাজিল সেনাবাহিনীর সাবেক ক্যাপ্টেন বোলসোনারো অবসরের পর রাজনীতিতে নামেন। সাত মেয়াদ ধরে কংগ্রেসের সদস্য থাকা এই নেতা খোলাখুলি ১৯৬৪ থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা ব্রাজিলের সামরিক একনায়কতন্ত্রের প্রশংসা করেছেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক বিরোধীদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে অস্বস্তি তৈরি করে রাখলেও প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেয়া প্রথম ভাষণে ৬৩ বছর বয়সী বোলসোনারো গণতান্ত্রিক নিয়মকানুন মেনে চলার অঙ্গীকার করেছেন।
বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, মুক্ত বাজারের পক্ষে বোলসোনারোর অবস্থান বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম অর্থনীতিটিকে পুনরুজ্জীবিত করবে। কিন্তু পরিবেশবাদী ও অধিকার আন্দোলনকারী গোষ্ঠীগুলোর আশঙ্কা, তিনি আমাজন রেইন ফরেস্টের সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলো ও ইতোমধ্যে বিশ্বের সর্বোচ্চ সংখ্যাক খুনের দেশে পরিণত হওয়া ব্রাজিলের বন্দুক আইন শিথিল করতে পারেন।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় ছুরি হামলায় আহত হয়ে কয়েক সপ্তাহ হাসাপাতালে ছিলেন তিনি। এ কারণে তার শপথ অনুষ্ঠানকালে ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
বোলসোনারো ও তার স্ত্রী একটি ছাদ খোলা রোলস রয়েস গাড়িতে চড়ে রাজধানীর সড়ক ধরে কংগ্রেসে যাওয়ার সময় আশপাশে ১০ হাজার পুলিশ কর্মকর্তা ও সৈন্য মোতায়েন ছিল।
এদিকে শপথের পর বোলসোনারোকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সূত্র: আল জাজিরা
এমএ/