ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

পাকিস্তানকে একঘরে করার উদ্যোগ ভারতের, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন

পাকিস্তানকে একঘরে করার উদ্যোগ ভারতের, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন

কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জের ধরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পাকিস্তানকে একঘরে করার তোড়জোর শুরু করেছে ভারত। তাদের এই চেষ্টায় জাতিসংঘের পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশের চারজনই সমর্থন দিয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি।

এক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিক্রম চীন। কাশ্মীর হামলায় দুঃখ প্রকাশ করলেও ভারতের প্রস্তাবে রাজি হয়নি বেইজিং। তবে আত্মরক্ষার্থে ভারত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তাতে পূর্ণ সমর্থন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের পুলওয়ামা হামলায় ৪৪ ভারতীয় জওয়ান নিহত এবং আরো ৪১ জন আহত হয়। পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠী জইস-ই মুহাম্মদ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।

হামলার পর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে পাকিস্তানকে একঘরে করার যাবতীয় প্রচেষ্টা শুরু করেছে মোদি সরকার।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে নয়াদিল্লি বলেছে, আন্তর্জাতিকভাবে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করবে ভারত। ইতিমধ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ফ্রান্স ও চীনের দূতদের সঙ্গে আলাপ করেছে দিল্লি। এমনকি উপসাগরীয় অঞ্চল, জাপান ও পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোর কাছে সন্ত্রাস বিস্তারে পাকিস্তানের ভূমিকা তুলেছে ভারতীয় প্রতিনিধি।

বিস্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, এ নিয়ে শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভারতীয় মন্ত্রি পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া ও ফ্রান্স সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় ভারতের যে কোনো পদক্ষেপকে সমর্থন দেয়ার অঙ্গীকার করেছে। এক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিক্রম চীন।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, মূলত তিনভাবে কূটনৈতিক অস্ত্রকে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করছে ভারত। প্রথমত, পাকিস্তানের উপর থেকে ‘মোস্ট ফেভার্ড নেশন (এমএফএন)’-এর তকমা প্রত্যাহার করে নেওয়া এবং সন্ত্রাসের প্রশ্নে পাকিস্তানকে বিশ্বে একঘরে করা। সেই অনুযায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দেওয়া হয় পি-৫ (ব্রিটেন, আমেরিকা, রাশিয়া, ফ্রান্স, চিন)-সহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে কথা বলে কাশ্মীর হামলার সর্বশেষ ঘটনা সবিস্তার তুলে ধরতে হবে। তৃতীয়ত, ১৯৯৬ সালের সন্ত্রাস-বিরোধী প্রোটোকলটি যাতে জাতিসংঘে গৃহীত হয়, তার জন্য নতুন করে চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করা।

পাকিস্তানকে এমএফএন মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। এর বাণিজ্যিক গুরুত্ব চিরকালই নগণ্য। গত আর্থিক বছরে ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৫০ কোটি ডলারেরও কম। তবে এ ক্ষেত্রে বাণিজ্যের অঙ্কটা বড় প্রশ্ন ছিল না। পারস্পরিক আস্থা অর্জনে এটি ছিল ভারতের তরফে প্রতীকী পদক্ষেপ।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানানো হয়েছে, ‘বিদেশসচিব পি-৫ রাষ্ট্রগুলির পাশাপাশি ২৫টি দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে পুলওয়ামা কাণ্ড নিয়ে কথা বলেছেন। কথা হয়েছে জাপান, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলির সঙ্গেও। সমস্ত রাষ্ট্রপ্রধানই নয়াদিল্লির সঙ্গে সহমত যে, পাকিস্তানের জমিতে বেড়ে ওঠা জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদ এই জঙ্গি হামলার পিছনে রয়েছে। সকলেরই এক কথা, পাকিস্তান তার মাটিতে এই জঙ্গি গোষ্ঠীকে অর্থ ও অন্য সহায়তা জোগানো বন্ধ করুক।

যদিও এ ব্যাপারে ভারতের প্রস্তাবে সমর্থন দিতে রাজি হয়নি পাকিস্তানের বন্ধু দেশ চীন। পুলওয়ামায় গাড়িবোমা হামলার পরেও জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মুহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ তালিকায় আনার ভারতীয় দাবি প্রকারান্তরে প্রত্যাখ্যান করেছে বেইজিং।

তবে আত্মরক্ষার্থে ভারতকে সমর্থন দেবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন।

জন বোল্টনের সঙ্গে শুক্রবার সন্ত্রাসবাদ ও পুলওয়ামায় হামলা নিয়ে ফোনে কথা বলেন ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।

পুলওয়ামায় হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বোল্টন বলেন, ‘অজিত ডোভালের সঙ্গে আজ আমার কথা হয়েছে। তাকে বলেছি, আত্মরক্ষার্থে ভারত যা পদক্ষেপ গ্রহণ করবে যুক্তরাষ্ট্র তাতে পূর্ণ সমর্থন দেবে।’

সূত্র: এনডিটিভি

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত