ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

কাশ্মীরিদের যেভাবে হুমকি দিচ্ছে ভারত

কাশ্মীরিদের যেভাবে হুমকি দিচ্ছে ভারত
জিবরান নাজির

পুলওয়ামা ঘটনার পর ভারত জুড়ে তথাকথিত ‘দেশপ্রেমিক’র হাতে ব্যাপকভাবে হামলা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে কাশ্মীরের নিরীহ জনগণ।

কাশ্মীর থেকে আগত ছাত্র ও ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণির মানুষদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে, বাদ যাচ্ছেন না সাংবাদিকরাও।

যদিও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসকারী কাশ্মীরিদের ওপর হামলা বন্ধে কেন্দ্র ও দশ রাজ্যকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সে দেশের শীর্ষ আদালত। হামলার পাশাপাশি কাশ্মীরিরা যাতে সামাজিক বয়কট বা হেনস্থার শিকার না হন, সে দিকেও নজর দিতে হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশেও যে কোনো কাজ হচ্ছে না তার প্রমাণ পুনের এক সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা।

এ সম্পর্কে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, বৃহস্পতবার রাতে পুনে শহরে এক ট্রাফিক সিগন্যালে দুই ভারতীয়ের হাতে মারধোরের শিকার হয়েছেন কাশ্মীরি সাংবাদিক জিবরান নাজির।

২৪ বছর বয়সী এই যুবক পুনের এক ইংরেজি পত্রিকায় কাজ করেন। বৃহস্পতিবার কাজ থেকে তিনি মোটরবাইক চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। স্থানীয় সময় রাত পৌণে ১১টার দিকে তিনি পুনের তিলক রোডে এক ট্রাফিক সিগন্যানে থামেন। তখন তার পিছনে থাকা অন্য মোটরসাইকেলের দুই আরোহী বার বার হর্ন বাজাতে থাকেন এবং তাকে সরে যেতে বলেন। তিনি এতে অস্বীকৃতি জানালে ওই দুইজন তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘তোকে আমরা হিমাচল প্রদেশে পাঠিয়ে দিব।’

জিবরান নাজিরের মোটরসাইকেলে হিমাচলের নাম্বার সাঁটা দেখে তারা তাকে ওই প্রদেশের বাসিন্দা ভেবে নিয়েছিল। কিন্তু নাজির তাদের ভুল সংশোধন করে যখন বলেন, ‘হিমাচল নয়, আমি কাশ্মীরের সাংবাদিক’, তখন তার ওপর হামলে পড়ে ওই দুই ভারতীয় যুবক।

তারা তাকে বাইক থেকে নামিয়ে টানতে টানতে রাস্তার সাইডে নিয়ে যায় এবং সমানে পেটাতে থাকে। তারা নাজিবকে হুমকি দিয়ে বলে, ‘এখানে তোর সাংবাদিকতা বের করছি। আমরা তোকে সোজা কাশ্মীরে পাঠিয়ে দেব।’

এসময় হামলাকারীরা নাজিবের মোবাইল কেড়ে নেয় এবং তার মোটরবাইকে ভাঙচুর চালায়।

এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন জিবরান নাজির নামের ওই সাংবাদিক। কিন্তু মামলা নেয়ার বদলে বিচারকের ভূমিকা পালন করে পুলিশ। তারা ২০ বছর বয়সী দুই হামলাকারীকে থানায় এনে জিবরান নাজিরের কাছে ক্ষমা চাওয়ায়।

এ ঘটনায় কোনো মামলা করারও প্রয়োজন বোধ করেনি পুলিশ। উল্টো তারা বলছে, কাশ্মীরিদের প্রতি বিদ্বেষ থেকে এ হামলা চালানো হয়নি এবং পুলওয়ামা হামলার সঙ্গে এর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

নাজিবের ওপর হামলাকে ‘রাস্তার ঝামেলা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।

এ ঘটনার মাত্র একদিন আগে বুধবার এক কলেজে অধ্যায়নরত কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের ওপর দল বেধে হামলা চালিয়েছিল এক উগ্রপন্থি হিন্দু দলের অঙ্গ সংগঠন যুব সেনার সদস্যরা।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত