ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩১ মিনিট আগে
শিরোনাম

আমেথিতে রাহুলের জেতা ‘কঠিন হ্যায়’

  কলকাতা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:২০

আমেথিতে রাহুলের জেতা ‘কঠিন হ্যায়’

ভারতের অন্যতম নজরকাড়া কেন্দ্র আমেথি এবার কার পাশে থাকবে? নজরে গোটা দেশ। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই আমেথি কেন্দ্রে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী কাছে এক লক্ষেরও বেশি ভোটে হেরেছিলেন বিজেপি প্রার্থী স্মৃতি ইরানি। কিন্ত হাল ছাড়েনি বিজেপি।

স্মৃতি ইরানি হেরে গেলেও তাকে মন্ত্রী করেছিলেন মোদি। তার মাধ্যমেই আমেথির সঙ্গে গত পাঁচ বছর ধরে টানা যোগাযোগ রেখে গিয়েছে বিজেপি। বিজেপির দাবি, শাহজাদা রাহুলের থেকে গত পাঁচ বছরে আমেথিতে অনেক বেশি সময় দিয়েছেন স্মৃতি। তাইতো এবারে ভোট প্রচারে আমেথি কেন্দ্রে বিজেপি শ্লোগান তুলেছে, ‘আবকি বার, আমেথি হামার’।

যদিও পাল্টা শ্লোগান তুলেছে কংগ্রেস, ‘আবকি বার, ইরানি কি তিসরি হার’। আমেথি কেন্দ্র থেকে এবারে শুধু স্মৃতি ইরানিকে হারানোই নয়, এবারে রাহুল গান্ধীর জয়ের ব্যাবধান পাঁচ লক্ষেরও বেশি করার টার্গেট নিয়েছে কংগ্রেস।

প্রসঙ্গত, ভারতের এই নজরকাড়া কেন্দ্র আমেথিতে জরুরী অবস্থা পরবর্তী সময়ে মাত্র দুই বার হেরেছে কংগ্রেস। ১৯৭৭ ও ১৯৯৮ সালে এই কেন্দ্রে হেরেছে কংগ্রেস। তারপর ২০০৪ সাল থেকে টানা তিনবার এই আমেথি কেন্দ্র থেকে জিতেছেন রাহুল গান্ধী।

কিন্ত যাবতীয় পরিসংখ্যানের বাইরে দাঁড়িয়ে গত পাঁচ বছরে এই কেন্দ্রে বিজেপির জমি তৈরির জন্য পরিশ্রম করে গিয়েছেন ইরানি।

আমেথির বিভিন্ন মহল্লায় তিনি এই পাঁচ বছরে ‘দিদি’ হয়ে উঠেছেন। তাই এবারে এই কেন্দ্রে লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে। বলছেন আমেথির বেশিরভাগ মানুষ।

উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের রায়বেরিলি জেলার অন্তর্ভুক্ত এই আমেথি কেন্দ্র। স্থানীয় মানুষজন এবারে বলতে শুরু করেছেন, এই কেন্দ্রে এবারে ‘মুকাবিলা কঠিন হ্যায়’।

এবারের লোকসভা নির্বাচনে রাহুল গান্ধী এই আমেথি কেন্দ্র ছাড়াও কেরলের ওয়ানাড কেন্দ্র থেকে লড়ছেন। ফলে এই কেন্দ্রে এবারে বিজেপির প্রচারের নতুন হাতিয়ার কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর এই সিদ্ধান্ত।

বিজেপি বলতে শুরু করেছে, আমেথি যে আর নিরাপদ নয়, সেটা বুঝেই রাহুল গান্ধী অন্য কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছেন। আর বিজেপির এই প্রচারে প্রভাবও পড়েছে যথেষ্ট। আমেথির বহু ভোটারদের বলতে শোনা যাচ্ছে, ওয়ানাড থেকে লড়ার যে সিদ্ধান্ত রাহুলজি নিয়েছেন তা আমেথির অপমান। গান্ধীদের আমরা সবসময় নিজেদের পরিবার বলে মনে করেছি। তারাও দীর্ঘদিন সেভাবেই আমাদের দেখেছেন। কিন্ত এবারে ওয়ানাড থেকে লড়ার এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবেই প্রমাণ করছে, ওনারা অন্য রাস্তা তৈরি রাখছেন।

২০০৯ সালে এই আমেথি কেন্দ্র থেকে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার ভোটে জিতেছিলেন রাহুল গান্ধী। ২০১৪ সালে এসে প্রবল মোদি হাওয়ার মধ্যে সেই ব্যবধান কমান বিজেপির স্মৃতি ইরানি। সেবারে রাহুল গান্ধী জেতেন মাত্র ১ লক্ষ ৭ হাজার ভোটে। তবে হারা সত্বেও ইরানি বারবার আমেথিতে ফিরে এসেছেন। সঙ্গে এনেছেন বিজেপির হাই প্রোফাইল নেতা নেত্রীদের।

গত পাঁচ বছরে এই আমেথি কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্ষুব্ধ কংগ্রেসী নেতাদের বিজেপিতে যোগদান করিয়েছেনও তিনি। তবে এতো কিছুর পরেও এই কেন্দ্রে মনে প্রাণে কংগ্রেস সমর্থকদের টালানো বিজেপির কাছে এখনও কঠিন চ্যালেঞ্জ।

তবে আমেথির প্রবীণ ভোটাররা এখনও স্মৃতি চারণের ঢংয়ে বলছেন, ‘এই কেন্দ্রে আবেগের বন্ধন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্বেও একেবারে সাধারন মানুষের মতো করে আমাদের কাছে আসতেন রাজীব গান্ধী। কীভাবে ভুলবো সেকথা। তিনি আমাদের পরিবারের সদস্যের মতো ছিলেন।’

ফলে এই কেন্দ্রে কংগ্রেসকে পরাজিত করা বিজেপির কাছে কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবে তার মধ্যেও ইরানির কঠোর পরিশ্রম আমেথিতে বিজেপির একটা জায়গা তৈরি করে দিয়েছে সেকথা মানছেন অনেকেই।

তাই এবারে এই কেন্দ্রে রাহুল ও স্মৃতি ইরানির মধ্যে লড়াইটা বেশ শক্ত। আমেথির সাধারন মানুষের সরল স্বীকারোক্তি, ‘এবারে আমেথিতে মুকাবিলা কঠিন হ্যায়’।

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত