ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

রোজার আগেই হামলা, শ্রীলঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি

শ্রীলঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি

মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই শ্রীলঙ্কায় ফের হামলার পরিকল্পনা করছে ইসলামিক জঙ্গিরা। এই গোয়েন্দা রিপোর্ট পাওয়ার পর মঙ্গলবার দেশ জুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে সে দেশের নিরাপত্তা বাহিনী।

এর আগে ইস্টার্ন সানডের দিন সে দেশের গির্জা ও হোটেলগুলোতে চালানো হামলায় ২৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত এবং আরো ৫শ মানুষ আহত হয়েছিলো। জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।

পুলিশের নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান সে দেশের আইনজ্ঞ এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছিলো। চিঠিতে বলা হয়েছিলো, জঙ্গির আগামী রোববার বা সোমবার সামরিক বাহিনীর পোশাক পরে শ্রীলঙ্কায় হামলা চালাতে পারে।

কিন্তু ওই দুদিনে দেশটিতে কোনো হামলা হয়নি। কিন্তু তারপরও মঙ্গলবার থেকে দেশ জুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

এদিকে শ্রীলঙ্কা সরকার ফেসবুক, হোয়াটস আপ ও ভাইবারসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের ওপর পর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট দপ্তরের এক সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স। ইস্টার্ন সানডের হামলার পরপরই গুজব ঠেকাতে সামাজিক মাধ্যমগুলো বন্ধ করে দিয়েছিলো শ্রীলঙ্কা সরকার।

মঙ্গলবার পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ‘সন্দেহভাজনদের খুঁজে বের করতে এখনও দেশ জুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা। আর এ কারণেই আগামী কয়েকদিন সারা দেশে কড়া নিরাপত্তা বহাল থাকবে।’

এছাড়া সরকারের আরেকটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, রমজান শুরু হওয়ার আগেই শ্রীলঙ্কায় আরো হামলা চালানোর চেষ্টা করতে পারে জঙ্গিরা। ফলে ভারত মহাসাগরীয় এই দ্বীপ দেশ জুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

ইস্টার্ন সানডের হামলার পর এক জরুরি আইনের আওতায় নারীদের মুখ ঢাকা বা বোরখা পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার।

গত ২১ এপ্রিল রাজধানী কলম্বোর ৩টি গির্জা ও ৪টি হোটেলে চালানো জঙ্গি হামলায় ৪২ জন বিদেশিসহ ২৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলো।

ওই হামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে ইতিমধ্যে দেশটির বহু মুসলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখনও দেশ জুড়ে চলছে পুলিশি তল্লাশি ও অভিযান। আর এসব অভিযানে ২০ জনের বেশি মুসলিম নিহত হয়েছে। এই পুলিশি তল্লাশির ফলে বহু মুসলিম আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

ওই হামলার জন্য ওই দেশটির স্বল্প পরিচিত দুই জঙ্গি সংগঠন ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত (এনটিজে) ও জামিয়াতুল মিল।লাতু ইব্রাহিম’কে সন্দেহ করছে শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষ। যদিও আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস এ হামলঅর দায় স্বীকার করেছে। শ্রীলঙ্কা পুলিশের ধারণা, এনটিজে দলের প্রতিষ্ঠাতা জাহরান হাশিমের নেতৃত্বে রোববার নয় আত্মঘাতী জঙ্গি মিলে ওই হামলাগুলো চালিয়েছে।

এদিকে শ্রীলঙ্কায় হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে ভারতের কেরালা রাজ্য থেকে ২৯ বছর বয়সী এক যুবককে আটক করেছে সে দেশের পুলিশ। এক বিবৃতিতে পুলিশ বলছে, জাহরানের ভাষণে প্রভাবিত ওই ব্যক্তি ভারতেও শ্রীলঙ্কার মত হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছিলো।

২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত শ্রীলঙ্কার বেশিরভাগ জনগণই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। আর দেশটির সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী হচ্ছে খ্রিস্টান, মুসলিম ও হিন্দুরা।

সূত্র: রয়টার্স

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত