ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে কাশ্মীর

শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে কাশ্মীর

তিন বছর বয়সী এক শিশু ধর্ষষের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের বাসিন্দারা। সোমবার ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, আইনজীবীসহ নানা পেশার মানুষ। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১২ যুবক আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেটের গতি। যে কোনো ধরনের সমাবেশের ওপরও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, গত ৮ মে রাজ্যের বান্দিপোরার সুমবল গ্রামে মিষ্টি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে শিশুটিকে বাড়ির পেছনে নিয়ে ধর্ষণ করে এক প্রতিবেশী যুবক তাহির আহমেদ মির। বাড়ি ফিরে শিশুটি তার বাবা-মাকে এ ঘটনার কথা জানায়। পরে শিশুটির বাবা স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ইতিমধ্যে ধর্ষক তাহিরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এই ধর্ষণের ঘটনা সামনে আসতেই শ্রীনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় বিক্ষোভ। অপরাধীর শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন কাশ্মীরের সাজ্জাদ লোন, ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতির মতো রাজনৈতিক নেতারা।

এ নিয়ে সোমবার শ্রীনগরের প্রেস এনক্লেভে বিক্ষোভ সমাবেশ করে জম্মু-কাশ্মীর ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের সদস্যেরা। এরপর থেকেই ঘটনার দ্রুত তদন্তসহ দোষীর কঠোর শাস্তির দাবি জানান জম্মু-কাশ্মীরের লোকজন। এতে রাজনৈতিক দলগুলো ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন যোগ দিলে তা বিক্ষোভে রূপ নেয়।

এই ঘটনায় আন্দোলনকারীদের উপরে বলপ্রয়োগ না করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেছিলেন সাজ্জাদ লোন। কিন্তু তারপরও সহিংসতা এড়ানো যায়নি।

পুলিশ বলছে, বারামুলার পাট্টানে বিক্ষোভের সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে যুবকদের একাংশ। জবাবে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এতে কমপক্ষে ১২ যুবক আহত হয়। এদের মধ্যে আরশাদ আহমেদ দার নামে এক যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে শ্রীনগরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, কাঁদানে গ্যাসের শেল আরশাদের মাথায় লেগেছে। দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপোরেও পড়ুয়াদের সঙ্গে বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। বান্দিপোরার ঘটনার প্রতিবাদে গান্ধেরবালের ডিগ্রি কলেজ ও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ দিন ক্লাস বয়কট করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখান তারা। বিক্ষোভ হয়েছে উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারা, দক্ষিণ কাশ্মীরের ত্রালেও।

সোমবার বিক্ষোভকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষের পর সব স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ইতিহাদুল মুসলিমীন নামে একটি ধর্মীয় সংগঠনের ডাকে বনধ চলছে রাজ্যের শ্রীনগর এলাকায়।

উত্তর কাশ্মীরের ডিআইজি মুহাম্মদ সুলেমান চৌধুরী বলেন, ধর্ষণে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে কাজ করছে বিশেষ টিম। এসময় কোনো প্রকার সহিংসতায় না জড়াতে জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

পুলিশের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, শিশুটির মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ শিশুদের যৌন নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।

সূত্র: আনন্দবাজার

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত